সন্তানের কাছে সবচেয়ে বেশি
উত্তম আচরণ পাওয়ার হকদার তার বাবা-মা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বাবা-মাকে গালি দেওয়া থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে নসিহত পেশ করেছেন। এ
সম্পর্কে হাদিসে পাকে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত।
ইসলামের দিকনির্দেশনা
হলো কেউ কারও বাবা-মাকে গালি দেবে না। হাদিসে পাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে
নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাবা-মায়ের অধিকার সম্পর্কে হাদিসে পাকে নবিজি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দেন-
হজরত আবু
হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার
কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি
বললো, তারপর কে? নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার মা।
সে বললো এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বললো, এরপর কে? তিনি বললেন,
এরপর তোমার বাবা।’ (বুখারি, মুসলিম)
মা-বাবাকে গালি দেওয়া কবিরা গুনাহ। এ
সম্পর্কে চমৎকার একটি হাদিসও রয়েছে। যেখানে নিজের মা-বাবাকে নয়, বরং
অন্যের মা-বাবাকে গালি দিলেই নিজের মা-বাবার ওপর এ গালি পতিত হবে। তাই
অন্যের মা-বাবাকেও গালি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনু
আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের মা-বাবাকে
লানত (অভিশাপ) করা। জিজ্ঞাসা করা হলো- হে আল্লাহর রাসুল! আপন মা-বাবাকে
কোনো লোক কীভাবে লানত করতে পারে? তিনি বললেন, সে (যখন) অন্যের বাবাকে গালি
দেয়, তখন সে তার (নিজ) বাবাকে গালি দেয় এবং সে (যখন) অন্যের মাকে গালি দেয়,
তখন সে তার (নিজ) মাকে গালি দেয়।’ (বুখারি, মুসলিম ও মুসনাদে আহমাদ)
সুতরাং
কাউকে বা কারো বাবা-মাকে গালি দেওয়া যাবে না। কারণ অন্যকে বা অন্যের
বাবা-মাকে গালি দেওয়ার অর্থই হচ্ছে নিজেকে বা নিজের বাবা-মাকে গালি দেওয়া
তথা অভিশাফ দেওয়া। সবার জন্য নবিজির এ হাদিস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা জরুরি।
আল্লাহ
তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের
ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। অন্যকে বা অন্যের বাবা-মাকে গালি
দেওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।