সদ্য
সরকারি হওয়া কলেজের প্রভাষকদের এমপিও হিসেবে ৭ম গ্রেডে গ্রহণ করা বেতনের
অর্থ ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্তের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন
হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
রুলে সরকারি হওয়া
কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি-৯ অনুযায়ী
অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষকদের বেতন স্কেল বিদ্যমান জাতীয় বেতন
স্কেলের সংশ্লিষ্ট গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে নির্ধারণ করা কেন অবৈধ হবেনা তা
জানতে চেয়েছেন। আগামী চার সাপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টাদের এ রুলের জবাব
দিতে বলা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ
সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই)
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের
সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে
ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
আইনজীবী জানান,
সরকারি হওয়া কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি-৯
অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষকগণের বেতন স্কেল বিদ্যমান জাতীয়
বেতন স্কেলের সংশ্লিষ্ট গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে নির্ধারণ করা কেন অবৈধ হবে
না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টাদের প্রতি চার সপ্তাহের রুল দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে সরকারিকরণের পরে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট থেকে প্রভাষকদের ৭ম গ্রেডে
বেতন বা এমপিও হিসেবে গ্রহণ করা অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায়
রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার সরকারি হওয়া
দুটি কলেজের ১৮ জন প্রভাষক রিট আবেদন করেন। রিটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা
বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের
মহাপরিচালকসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়েছে। ওই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ
আদেশ দেন।
রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন,
রিটকারিরা ২০১৮ সালে সরকারি হওয়া ২৯৮টি কলেজের মধ্যে সিলেট এবং সুনামগঞ্জ
জেলার কানাইঘাট ডিগ্রি কলেজ এবং শাল্লা ডিগ্রি কলেজের সরকারিকরণের পূর্বে
নিয়োগ পেয়ে কর্মরত প্রভাষ। তারা এমপিও নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রভাষক পদে
নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর ৯ম গ্রেডে এমপিওভুক্ত হন। তারপর প্রভাষক পদে আট বছর
পূর্তির পর একটি সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত হলে তাদের বেতন স্কেল ৯ম গ্রেড থেকে
৭ম গ্রেডে আপগ্রেড হয় এবং তারা ৭ম গ্রেডে বেতন/এমপিও ভোগ করতে থাকেন।
২০১৮
সালে সরকার ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮’
জারি করেন এবং উক্ত বিধিমালার বিধি ৯ অনুযায়ী ‘অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত
শিক্ষক ও কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট কলেজ সরকারিকরণের দিন হতে বিদ্যমান জাতীয়
বেতন স্কেলের সংশ্লিষ্ট গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে স্ব স্ব পদের বেতন-ভাতাদি
প্রাপ্য হইবেন।’
পরে ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ
বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী তাদের কলেজ দুটি সরকারি হয় এবং ২০২৩ সালে তাদের
অস্থায়ীভাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। কিন্তু বিধি ৯ এর কারণে তাদের বেতন স্কেল
৭ম গ্রেডের পরিবর্তে ৯ম গ্রেডে নির্ধারণ করা হয়। যার ফলে তারা বৈষম্যের
শিকার হন এবং এখন কলেজ সরকারিকরণের পরে ২০১৮ সালে থেকে পিটিশনাররা কর্তৃক
৭ম গ্রেডে বেতন/এমপিও হিসাবে গৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদান করার
জন্য আদেশ জারি করেছেন। বারবার বিবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো ফলাফল না
পয়ে তারা উক্ত রিট পিটিশন দায়ের করেন। আজ প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত এ
আদেশ জারি করেছেন।
রিটকারীরা হলেন- সিলেট জেলার মো. ফরিদ আহমেদ, মো.
বশির আহমেদ, মো. শফিউল আজম চৌধুরী, মো. মইনুল হক চৌধুরী, শান্তিময় দেব এবং
সুনামগঞ্জ জেলার আরাধন চন্দ্র সরকার, রূপচান দাস, অরুণ কান্তি চৌধুরী, মো.
মোজাম্মিল ইসলাম এবং শিল্পি রানি বনিকসহ মোট ১৮ জন প্রভাষক।