হাজার বছরের
শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ।
বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশের সঙ্গে অভিন্ন সত্তায় পরিণত হওয়া এই মহানায়কের
জন্মদিন বাঙালি জাতির জন্য এক নির্মল আনন্দের দিন। নানা অনুষ্ঠানের মধ্য
দিয়ে উদযাপন করা হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী। জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ
করবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর
যেখানেই বাঙালি আছে, সেখানেই নিখাদ ভালোবাসায় উদযাপন করা হবে এই দিনটি।
আমরা
সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে কথা বলি। আমাদের পরিচয় সংকট থেকে রক্ষা করেছেন
বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্য নেতাদের চেয়ে পৃথক এ জন্যই যে
তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন বাংলাদেশ নামের একটি জাতিরাষ্ট্র ও ভাষারাষ্ট্র।
বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির শিকড় গভীরে প্রোথিত করে তিনি আমাদের
হীনম্মন্যতা, জাতিসত্তার সংকট, ভাষার দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে রক্ষা করেছেন।
বঙ্গবন্ধু
শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় তিনি জন্মদিন পালন করেছেন
শিশুদের নিয়ে। তাই শিশু সংগঠনগুলোর দাবির মুখে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর
জন্মদিন ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সে মোতাবেক আজ
একই সঙ্গে জাতীয় শিশু দিবসও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে
একটি পতাকা দিয়েছেন, একটি স্বাধীন ভূখণ্ড দিয়েছেন এবং বিশ্বসভায় বাঙালি
জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁরই দেখানো পথ ধরে দেশ আজ
এগিয়ে চলেছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা চারবারের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার কাজে খুব বেশি সময় হাতে পাননি।
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মদদে কিছু বিশ্বাসঘাতক সেনাসদস্য তাঁকে সপরিবারে
হত্যা করেছিল। জাতির মুখে কালিমা লেপন করেছিল। বিদেশে থাকায় এই হত্যাকাণ্ড
থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা।
আমাদের সৌভাগ্য, বঙ্গবন্ধুর
সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা সেদিন নিজের জীবনের মায়া না করে স্বাধীনতার
অর্জনগুলো রক্ষায় এগিয়ে এসেছিলেন। দেশকে আবার বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে
এগিয়ে নিতে প্রাণপণ লড়াই করে চলেছেন। তাঁর সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। নানা
ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুততর
হওয়ায় বিনিয়োগও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। কর্মসংস্থান বাড়ছে দ্রুতগতিতে।
বাংলাদেশের কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথ পরিভ্রমণ করছে। তথ্য-প্রযুক্তিতে
বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের
কাজ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। সমুদ্রসীমা নিয়ে
বিরোধের অবসান হয়েছে। সমুদ্রের বিশাল এলাকায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে। এ সবই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে প্রত্যাবর্তনের কারণে।
জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ আমাদের অস্তিত্বের অংশ। নিজের
অস্তিত্বের প্রয়োজনেই আমাদের বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগকে জানতে হবে।
অস্তিত্ববিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন
প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে তাঁর আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের
মধ্য দিয়েই তাঁকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন সম্ভব। জয় বঙ্গবন্ধু।