বাড়ির
সামনে নামফলক। নামফলকে লেখা ‘বীর নিবাস’। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও
প্রয়াত যুদ্ধ বীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ‘বীর নিবাস’ নামের এই আবাসন
প্রকল্প। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি
জেলা-উপজেলায় ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় বুধবার
পাঁচ জেলায় পাঁচ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে এই নিবাসের চাবি হস্তান্তর
করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন
থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর
পক্ষে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইলের জেলা প্রশাসকেরা
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিবাসের চাবি হস্তান্তর করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অসচ্ছল
মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ
নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ২০২১ সালের ১৬ মার্চ ৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই
প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ৩১
অক্টোবর।
প্রতিটি নিবাসের আয়তন ৭৩২ বর্গফুট। একতলার এই বাড়িতে দুটি
শয়নকক্ষ, একটি বসার কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাওয়ার কক্ষ (ডাইনিং), একটি
রান্নাঘর, একটি প্রশস্ত বারান্দা ও দুটি শৌচাগার থাকছে। প্রতিটি বাড়িতে
থাকছে একটি উঠান, একটি নলক‚প, গবাদি পশু-হাঁস-মুরগি পালনের জন্য পৃথক শেড।
প্রতিটি বাড়ির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।
বর্তমানে ৩০ হাজার
বীর নিবাসের মধ্যে ২০ হাজার ৮৩৭টির দরপত্র আহŸান করা হয়েছে। ১৭ হাজার ৬৬০টি
বীর নিবাসের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এগুলোর নির্মাণকাজ বিভিন্ন
পর্যায়ে চলমান রয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৪৬টি উপজেলার ২ হাজার
৫০টি বীর নিবাসের জন্য কোনো দরপত্র আহŸান করা হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রণালয় জানায়, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা বাছাই কমিটির সভাপতি হিসেবে
দায়িত্ব পালন করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। অসচ্ছল বীরাঙ্গনারা
সরাসরি বরাদ্দ পাবেন। অসচ্ছল যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রাধিকার
পাবেন। অগ্রাধিকার পাবেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার অসচ্ছল স্ত্রী-সন্তানেরা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে প্রকল্পটি
বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছি। প্রকল্পের বাড়ি বানানো ও বরাদ্দে কেউ কোনো
অনিয়ম করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’