বর্ষসেরা
ফুটবলারের খেতাব ব্যালন ডি’অরের ইতিহাসে অমর নাম লিওনেল মেসি ও
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এই পুরস্কারের সিকিভাগই দখল করেছেন এ দুজন। প্রায়
প্রতিবারই এই দুজনের নাম শোভা পেতো সংক্ষিপ্ত তালিকায়। দীর্ঘ ২১ বছর পর সেই
ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লো। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত
তালিকায় নেই সময়ের সেরা দুই তারকা।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রকাশ
করা হয় চলতি বছরের ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকা। ফরাসি সাময়িকী
‘ফ্রান্স ফুটবল’- এর এই পুরস্কারের তালিকায় প্রাথমিকভাবে ৩০ জন জায়গা করে
নিয়েছেন। এই তালিকায় শীর্ষ নামগুলো আরালিং আলান্ড, ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড
বেলিংহ্যাম ও রদ্রি। বিগত ১৬ বছরে মেসি ও রোনালদো মিলে ব্যালন ডি’অর
জিতেছেন ১৩ বার। মেসি জিতেছেন রেকর্ড আটবার, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার
জিতেছেন রোনালদো। ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই দুজনের বাইরে কেউ
পুরস্কারটি জিততে পারেননি। ২০১৮ সালে জেতেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়াট
মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।
২০২০ সালে কোভিডের কারণে পুরস্কারটি দেওয়া
হয়নি। এর আগে-পরে দুই বছরে আবার জেতেন মেসি। ২০২২ সালে তা ওঠে তখন রিয়ালে
থাকা ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার হাতে। একই বছরে বিশ্বকাপ জিতে ২০২৩
সালে পুরস্কারটি অষ্টমবারের মতো জেতেন মেসি।
মেসি ও রোনালদো ইউরোপ ছেড়ে
চলে যাওয়ার সময়েই ব্যালন ডি’অরে তাদের শেষ ধরে নেওয়া হয়েছিল। রোনালদো আল
নাসরের হয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন গেল মৌসুমে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে
ক্লাবের হয়ে ৪৫ ম্যাচে ৪৪ গোল করেন ৩৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। তবে ইউরোয় ছিলেন
বিবর্ণ।
এদিকে আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা জিতলেও ব্যক্তিগতভাবে আসরে ভালো
করতে পারেননি মেসি। ফাইনালে অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে এখনও মাঠের বাইরে আছেন
তিনি। ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে তিনি খুব একটা খারাপ করেননি। তবে ব্যালন
ডি’রের লড়াইয়ে জায়গা পাওয়ার জন্য তা যথেষ্ট হয়নি।
এবার এই পুরস্কার জয়ের
তালিকায় এগিয়ে আছেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস। গত মৌসুমে
রিয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে বড় অবদান
রাখেন তিনি। তার সঙ্গে লড়াইয়ে আছেন হালান্ড। গেল মৌসুমে তিনি ৩১ ম্যাচ খেলে
গোল করেন ২৭টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ৪৫ ম্যাচে
তার গোল ৩৮টি।
গত মৌসুমে রিয়ালে যোগ দিয়েই দারুণভাবে নিজেকে মেলে ধরেন
বেলিংহ্যাম। ইংলিশ এই মিডফিল্ডার লা লিগায় ২৮ ম্যাচে ১৯ গোলের সঙ্গে
অ্যাসিস্ট করেন ৬টি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১১ ম্যাচে তার গোল ৪টি, অ্যাসিস্ট
৫টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪২ ম্যাচে ২৩ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থের ১৩
গোলে অবদান রাখেন তিনি।
আগামী ২৮ অক্টোবর প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানে বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
ব্যালন
ডি’রের জন্য ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা: জুড বেলিংহ্যাম (রিয়াল মাদ্রিদ),
রুবেন দিয়াস (ম্যানচেস্টার সিটি), ফিল ফোডেন (ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো
ভালভার্দে (রিয়াল মাদ্রিদ), এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), আরালিং
হালান্ড (ম্যানচেস্টার সিটি), নিকো উইলিয়ামস (অ্যাথলেটিক বিলবাও), গ্রানিত
জাকা (বায়ার লেভারকুজেন), আর্তেম দোভিক (জিরোনা/রোমা), টনি ক্রুস (রিয়াল
মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), দানি ওলমো (বার্সেলোনা),
ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ (বায়ার লেভারকুজেন), মার্টিন ওডেগোর (আর্সেনাল), মাটস
হুমেলস (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড), রদ্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), হ্যারি কেইন
(বায়ার্ন মিউনিখ), ডেকলান রাইস (আর্সেনাল), ভিতিনিয়া (পিএসজি), কোল পালমার
(ম্যানচেস্টার সিটি/চেলসি), দানি কারভাহাল (রিয়াল মাদ্রিদ), লামিনে ইয়ামাল
(বার্সেলোনা), বুকায়ো সাকা (আর্সেনাল), হাকান কালহানোগলু (ইন্টার মিলান),
উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল), কিলিয়ান এমবাপে (রিয়াল মাদ্রিদ), লাউতারো
মার্টিনেজ (ইন্টার মিলান), অ্যাডেমোলা লুকম্যান (আটালান্তা), আন্টোনিও
রুডিগার (রিয়াল মাদ্রিদ), আলেক্স গ্রিমাল্দো (বায়ার লেভারকুজেন)