রবিবাসরীয়..
|
চানরাত কাজী মো: আলমগীর ।। ‘আমরা চোখ বন্ধ করে একটা পবিত্র অন্ধকারের ভেতর চলে যাব’-শহীদ আকন্দ। শহীদ আখন্দ বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক অনুবাদক এবং বহুমাত্রিক লেখক। জন্ম ১৯৩৫, সালে পাছদিরিল্লা নান্দাইল ময়মনসিংহ। ১৯৬৪ সালে প্রথম উপন্যাস ‘পান্না হলো সবুজ’ প্রকাশিত হয়। পিতা নইমুদ্দিন অখন্দ ছিলেন কৃষক। পিতা চেয়েছিলেন পুত্র কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত হউক। শহীদ আখন্দ বলেন- ‘আমাকে না পড়ানোর উদ্দেশ্য একটাই ছিল, কৃষি সেক্টরকে উজ্জীবিত রাখা। যেহেতু আমাদের জমিজমা আছে, আমরা যদি এটা না করি যদি ব্রেক হয়ে যায় তাহলে মস্ত বড় অসুবিধা। শহীদ আখন্দ ২০০৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তিহীন। তিনি বলেন অন্ধেত্বের কষ্টটা খুব বেশি না। একাকিত্বের কষ্টটাই অনেক বেশি যন্ত্রনার।মানুষের শেষ বয়সে এসে কথা বলার জন্য কাউকে খুব বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অন্ধত্ব আমার জীবনকে যেভাবে সংকুচিত করছে, এইভাবে আমাকে আর কোন কিছুই সংকুচিত করতে পারে নাই। তরুণদের জন্য পরামর্শ প্রচুর বই পড়তে হবে। শুধু বই পড়েই হবে না। লেখা লেখির বিষয়টা ভেতর থেকে আসে। আমাদের লেখকরা বাংলা প্রবন হয়ে গেছে। ইংরেজি বাদ দিয়ে বাংলার প্রতি বেশি জোর দিচ্ছে কিন্তু এটা উচিত না। ইংরেজি সাহিত্য ছাড়া অন্য কোন পথে শেখার জন্য অঅমাদের প্রবেশ পথ নেই। কোন দিক দিয়ে যাবো, মধ্য প্রাচ্যের সাহিত্যের দিকে যদি যেতে চাই, আমরা যেতে পারবো না। সে কালচার আমাদের এদিকে কুলাবে না। যার ফলে আমরা আসলে পৃথিবীর কোন কালচারের দিকেই যেতে পারি নাই। বলতে পারেন মিশ্র হয়ে গেছি। ২০১১ তে শহীদ আখন্দের স্ত্রী বিয়োগ ঘটে। তিনি বলেন, আমি তার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করতাম। অনেক অপমান করতাম না জেনে, কিন্তু এখন বুঝি। ২০০৯ আমি দৃষ্টি শক্তিহীন হয়ে পড়ি। তখন তার চোখ দিয়ে দেখতাম। আমি দুই বছর বুঝিনি যে আমি অন্ধ। থার আদর অনুভব করতাম। তার আদর এমন ছিল আমার মায়ের অভাবকে মনে করিয়ে দিতো।আমার মা থাকলেও এভাবে আমাকে আদর করতেন।আমার স্ত্রীর কী যে অসাধারণ উন্নত মানসিকতা তার আমি পৃথিবীর অন্য কোন নারীর ভেতর দেখিনি। এখনও আমি ঘুমাতে যাবার সময়, ঘুম থেকে উঠে তার কথা ভাবি, তাকে অনুভব করি। শুধু তাই না স্বপ্নেও দেখি। ‘বাবার জন্য’- তাইমুর রশিদ ১৯৮৭ সালে ৮ অক্টোবর মাকে কবর দিয়ে চিনকির চর থেকে কিশোরগঞ্জ দাদার বাড়ি যচ্ছিলেন বাবার সঙ্গে তাইমুর রশিদ। তাইমুর জিজ্ঞেস করছিলেন ‘মা কেন আমাদের সাথে ফিরছে না। বাবা বলে ছিলেন, আমার মা আকাশের তারা হয়ে গেছেন। তাইমুরের বাবা কবি আবিদ আজাদ। মা এবং বাবা হারানোর বেদনা সাবলিল বাক্যে তাইমুর তুলে ধরেছেন তার লেখায়। জমকালো গদ্যবন্ধের মুক্তি মিলেছে এই স্মৃতিচারনে, মা বাবা হারানো ব্যক্তিদ্বয় পাঠকের অন্তরমূল ধরে টান দেয়। তাইমুর রশিদ বলেন, অঅমার ভালোলাগা, ব্যাথা, যন্ত্রনা সবই যেন বাবা টের পেতেন। মুখ ফুটে বাবাকে কিছু বলতে হয়নি। কিন্তু তিনি সবই ধরে ফেলতেন আমার মনের খবরাখবর। কবিতা ছাড়া বাকি সবকিছুতেই তার ছিল এক রকমের হেয়ালিপনা। তবু আমার ব্যাপারে সব সময় ছিলেন খুবই সিরিয়াস। জীবনের চলার পথে তাকে পেয়েছি সবচেয়ে বিস্বস্ত বন্ধু হিসেবে। বাবার কবি অন্তস্থ অনুপ্রেরণা বা ক্ষত চিহ্নের বিবরণ দেন তাইমুর বন্ধুর মতো- ‘ বাবা তখন দশম শ্রেনিতে পড়তেন আজিম উদ্দিন স্কুলে। কিশোরগঞ্জ জেলা, শহরের রেলস্টেশনের একেবারেই কাছেই নিউটউিনে আমার দাদার বাড়ি। বাবার বেড়ে উঠা সেখানেই। বাড়ির পুকুর পাড় ঘেষেই থাকতো এক হিন্দু পরিবার। সেই বাড়ির তিন বোন। বড় বোন শক্তি। ফুফুদের মুখে শোনেছি শক্তি ছিলেন পরীর মতো সুন্দরী। বাবার ভালো লাগা ছিল শক্তি। পরে অবশ্য হুট করেই এই হিন্দু পরিবার কাউকে না জানিয়েই এলাকা ছেড়ে চলে যাই। আর কোন হদিশ মিলে নি। এরপর নাকি বেশ কিছুদিন এলোমেলো ছিলেন বাবা। এই ঘটনা বাবাকে বেশ নাড়া দিয়েছিল। যার প্রমান মিলে তার লেখায়ও। বাবা নিজেই কবিতা সমগ্রেই ভূমিকাই স্বীকার করেছেন- যৌবনের নিঃসঙ্গতার পহেলা সিঁড়িতে পা রাখার মুহূর্তে এক কিশোরীর কুহকা প্রেম আমাকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে ছিল। তার তিক্ষè নখে। আর সে ই নখ বেঁধে রক্তক্ষরিত অবস্থা থেকে অত্যল্পদিনের মধ্যে আমি ছিঁড়ে পড়ে যাই। আমার ব্যক্তিগত ঝঞ্ঝায়, প্রথম তুমুল আত্মনির্জনতায়, কবিতার আসল খপ্পরে, ঠিক কবিতার সেই খপ্পর থেকে অঅর বের হতে পারেননি বাবা।’ লাগে উরাধুরা- হাসনাত আবদুল হাই ইহা একটি উপন্যাসিকা। জেসমিন লন্ডন থেকে সিলেট এসেছে। বাংলাদেশের জেসমিনের সার্বক্ষণিক দেখোশোনার মালিক শাহ সুফি। জেসমিন এসেছে একটি পারিবারিক মিউজিয়াম তৈরির করার ইচ্ছে নিয়ে। উপন্যাসিকার নাম উরাধুরা, এই নাম জেসমিনকে ক্লিক করে।ইন্স্ট্রুমেন্টাল গানের কলি,গাওয়া হয়- কোন শহরের মাইয়া তুমি লাগে উরাধুরা চলতি শব্দ ভাষায় স্থান করে নিয়েছে।এই গান জেসমিনের ভালো লাগে। জেসমিন বলে চলুক। লেখক বলতে চান, রক-পপুলার দারুন ফিউষন। শাহ সুফি এ গান বন্ধ করতে চায়। শাহ সুফি বলে, আপনার একটা ইজ্জত আছে না। জেসমিন বলে সে আপনি ভাববেন না। এই গানে আমার ইজ্জত যাবে না। ইজ্জত গিয়েছে এয়ার পোটের্ যখন গোল্ডস্মাগলার সন্দেহে আমার নগ্নদেহে এক্সরে করা হয়েছিল। সেই তুলনায় এই গান তো আমাকে ট্রিবিউট দিচ্ছে। মোল্লা নাসিরউদ্দিন থেকে শেখ চিল্লি- মুহম্মদ জালালউদ্দীন বিশ^াস মোল্লা নাসিরউদ্দীন ছিলেন, বীরবল, শেখ চিল্লি, গোপাল ভঁঅড়- এরা সকলে তাদের সমকালে সবিশেষ বুদ্ধিমান এবং প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। তবে এই চারজনের পার্থক্য ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। মোল্লা ছিলেন আন্তর্জতিক।তার সম্বন্ধে বলা হয় তিনি তার সমকাল থেকে অন্তত ৫০০ বছর অগ্রসর ছিলেন। এ বঙ্গে নাসির উদ্দিন খুবই জনপ্রিয় এখনো। মোল্লার গল্প আড্ডার সমঝদারিত্ব বাড়ায়। বুদ্ধির ঝিলিক তোলে। একটা কাড়াকাড়ি আছে মোল্লা কোন দেশের। ইরান ইরাক আফগানিস্তান পর্যান্ত তার নাম ছড়িয়ে আছে। প্রবন্ধের লেখক বলেন-‘চীন দেশে ছাপা নাসির উদ্দীন আফান্দি নামে একটি বই আমার হাতে আসে।’ বর্তমানের উজবেগস্তানের বোখারা সমরখন্দ অবধি তার অবাধ বিচরণ ছিল। একবার তুরস্কে তিনি খলিফার বিরাগবাজন বা দেশদ্রোহী হন। তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। গুপ্তচরেরা তাকে খুঁজতে তাকে। মোল্লা নাসিরউদ্দীন ধরা পড়ে কিন্তু একই সময় একাধিক নাসির উদ্দিন ধরাপড়ে। রাজার লোকেরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। একবার তিনি এতটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন যে শহর থেকে বের হবার আর কোন রাস্তা ছিল না। তখন তিনি দিলেন ওস্তাদের মার। মোল্লা নিজেই ঘোষণা করে দিলেন মোল্লা নাসির উদ্দিন মারা গেছে এবং একজন নকল মোল্লা নাসির উদ্দিন সাজিয়ে তাকে জনসাধারণকে দেখানো হয়েছে। মোল্লার এই কঠিন সিদ্বান্তে সবাই এমন ভাবে বিভ্রান্ত ও মোকাহত হয়ে গেলো যে মানুষ মোল্লা নাসির উদ্দিনের জানাজা পড়তে এলো দলে দলে। স্বয়ং মোল্লা নাসিরউদ্দীন শাহী মোল্লা নাসিরউদ্দিনের। পরম প্রীতিভাজনেষু ফরহাদ ফরহাদখানকে লেখা আসাদ চৌধুরীর দুটি চিঠি সংগ্রহ ও ভূমিকা কবি আসাদ চৌধুরী এবং ও ফরহাদ খান বাংলা একাডেমিতে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছেন। দুজনের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে । দুজনেই বাংলা সাহিত্যের ছাত্র। আসাদ চৌধুরী জার্মানিতে থাকাকালে সহকর্মী ফরহাদ খানের সঙ্গে পত্র যোগাযোগ ছিল। এই যোগাযোগ বাংলা একাডেমির চাকুরি থেকে তাঁদের অবসরের পরও অব্যাহত ছিল। ‘চানরাত’ এ মুদ্রিত চিঠি দুটির একটি ১৯৮৭ সালের আগস্টে জার্মানি থেকে লেখা। অন্যটি ২০০৫ সালে ঢাকা থেকে লেখা , ফরহাদ খান তখন রাজশাহীতে বসবাস করতেন। চিঠি দুটি ফরহাদ খানের কন্যা তানিয়া নাসরিনের সৌজন্যে প্রাপ্ত। ফাউন্টেন পেনের ইতিহাস- আমিন বাবু ফাউন্টেন পেনকে আমাদের এখানে ফাউন্টেন পেন’ই বলতো। বাংলায় বললে, বলা হতো ঝর্ণা কলম।ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের শাসনকালে (১৬৪৯-১৬৮৫) একটি তথ্যপুটে ‘ ফাউন্টেন পেন প্রথম দেখতে পান ডর্সি। এরপর সেই নথি ঘেঁটে দেকা গেলো, প্রায় ৪০০ বছর আগের তথ্যপুটে অন্য অনেক বর্ণনার সাথে রাজার কলম সম্পর্কে একটি লাইনে লেখা ‘১৫ সিলিং দামের তিনটি ফাউন্টেন পেন’- এই প্রথম কোথাও লিখিতরূপে নামটা পাই আমরা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। নাম, পেটেন্ট এবং উদ্ভাবনের ধরন হিসেব করলে অসংখ্য ব্যক্তির নাম জড়িয়ে যায়। কলম সম্পর্কে সে এক অদ্ভুত বুলবুলুইয়া। গল্পের চেয়ে কম নয়। বাচ্চে হায় আসমান চিলড্রেন অফ হ্যাভেন মাজিদ মাজিদি মূল ফরাসি থেকে অনুবাদঃ মুমিত অঅল রশিদ মাজিদ মাজিদি ইরানের বিখ্যাত পরিচালক। মুমিত আল রশিদ বলেন,এ প্রজন্মের ইরানি চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞপন। অঅলী এবং যাহারা দুই ভাই বোন। আলী একদিন জুতা মেরামত করতে গিয়ে জুতা হারিয়ে বসে। এক অন্ধ ব্যক্তি না বুঝে জুতাজোড়া নিয়ে যায়। তারপর শুরু হয় দুই ভাই বোনের স্কুলে যাওয়াকালে এক জোড়া জোতা ভাগ করে পরে নেয়ার গল্প। ইতো মধ্যে আলী দৌড়ে মজবুত হয়ে উঠে। স্কুলে ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় জুতা জেতার আশায় আলী দৌড়ে প্রথম হয়। কিন্তু প্রথম পুরষ্কার বিশাল মেডেল। তৃতীয় পুরষ্কার জুতা। হৃদয়স্পর্শী এছবি ১৯৯৭ সালে অস্কার পুরষ্কারের জন্য মনোনিত হয়। বাংলাদেশের অনেকে এ ফিল্ম দেখেছেন। কী কথা তাঁর লগে মঈন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গল্প। মনতাজ এবং কুশির গল্প। কুশি যুদ্ধের আগেই মনতাজের ঘরে উটতে চেয়েছিল। কিন্তু সম্ভব হয়নি।মনতাজ যুদ্ধে যায়। যুদ্ধ ফেরত মনতাজ এক বিরান ভূমির মুখোমুখি হয়। সে সেই বিরান ভূমিতে মাকে দেখে না । কুশি যে কোথায় গেছে কেউ বলতে পরে না । শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, দুপুর দুটার একসময় মানুষের থেকে এক মাথা উঁচু বঙ্গবন্ধুকে দেখতে পায় সে। বঙ্গবন্ধুকে চিনতে মোটেই ভুল হয়নি তার। আশ্চর্য! এই সেই মানুষ! যার আহ্বানে সাতকোটি মানুষ জীবন বিলাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল .....। মনতাজ বঙ্গবন্ধুর বিহ্বলিত মুখের দিকে চেয়ে হতবাক হয়ে যায়। ভুলে যায় নিজের সকল পরিকল্পনা।ঠ্যালাঠেলি করতে করতে খুব কাছে চলে গিয়েছিল মনতাজ। বঙ্গবন্ধুর দৃপ্ত দৃষ্টি একবার তার চোখে এসেও স্থির হয়েছিল; কিন্তু তার বলা হলো না কিছুই। বিনাজুরি গ্রামের আকাশি দিন আশিক মুস্তফা শৈশবে তাঁর বয়সিরা যখন আনন্দে ঘুড়ি ওড়াতো। গোল্লাছুট আর সাইকেলের পেডেলে স্বপ্ন ওড়াতো তখন তিনি কাজ করতেন মানুষের বাসায়। শৈশবের কথা ওঠতেই বলেন, আমি একেবারে সাদাসিধা ছিলাম। খুব সহজ- সরল আর হাবাগোবাও বলা যায়। সবাই শুধু কাজের ফুটফরমাশে খাটাতে চাইত। কেউ মারলেও কিছু বলার সাহস ছিল না। গ্রামের সবাই আমাকে বিলাতি ডাকত। বাবা নিরুদ্দেশ হওয়ার পর কিছুদিন থাকি মামার বাড়ি। মামিমা নাম দিয়ে ছিলেন- সুকুমল। মামারা ছিলেন খুবেই রুচিশীল এবং শিক্ষিত। মামিমার দেওয়া সেই সুকমলকে পরে আমি করেছি সুকুমার। বাবা নিরুদ্দেশ হওয়ার পর বাবার সঙ্গে ঘর বাড়িও হারিয়ে য়ায়। মা কিরন বাল বড়–য়া ১৯৬১ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। গ্রামের স্কুল নিয়েও আছে মজার স্মৃতি। তবে তা অবশ্যই সুখকর নয়। পড়েছেন তিনটা স্কুলে সব মিলিয়ে আড়াই ক্লাস। শুরুটা করেছেন মামার বাড়ির স্কুলে। তারপর দিরি বাড়ির রাম মোহন এম. এ স্কুলে পড়েছেন ১৯৪৮- ৪৯ সালের দিকে। সবশেষে পশ্চিম বিনাজুরির সোনাইমুখ উচ্চ বিদ্যালয়। সবটা লেখাই আশিক মুস্তাফা থেকে ধার নেয়া। এমন চমৎকার লেখা বিনাজুরি গ্রামকে তিনি সুকুমার বড়–য়ার নাম দীর্ঘক্ষণ না বলেও ধরে রেখেছেন। আমি শুধু একটি ছড়া যোগ করে দিলাম মামিমার দেয়া সুকমলকে। ঠিক আছে ঠিক আছে অসময়ে মেহমান ঘরে ঢুকে বসে যান বুঝালাম ঝামেলার যতগুলো দিক আছে তারা হেসে বললেনÑ ঠিক আছে, ঠিক আছে। রেশনের পচা চাল টলটলে বাসি ডাল থালাটাও ভাঙাচুড়া বাটিটাও লিক আছে খেতে বসে জানালেনÑ ঠিক আছে, ঠিক আছে। মেঘ দেখে মেহমান চাইলেন ছাতাখান দেখালাম ছাতাটার শুধু ক’ টা শিক আছে তবু তিনি বললেনÑ ঠিক আছে, ঠিক আছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও রাজনীতি মার্শাল ম্যাকলুহানের সাথে মাইক ম্যাকম্যানুসের আলাপ অনুবাদ আফরোজা সোমা গণমাধ্যম অধ্যয়নের জগতে মার্শাল ম্যাকলুহান এক অলঙ্ঘনীয় নাম। মিডিয়াম ইজ দি ম্যাসেজ বা বাহনই বার্তা ধারনার প্রবর্তক তিনি। গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ^গ্রাম শব্দবন্ধের প্রবর্তনও তিনিই ঘটিয়েছেন। প্রযুক্তির সাথে মানুষের সম্পর্ক এবং প্রযুক্তির হস্তক্ষেপের ফলে মানুষের জীবন ও মানবীয় সম্পর্কের যে পরিবর্তন আসে সেই বিষয়কেও তাত্ত্বিক ভিত্তি দিয়েছেন তিনি। কানাডিয়ান প-িত মার্শাল ম্যাকলুহান। মানুষের পরিচিতি নির্মাণের রাজনীতি নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। বিশেষত সহিংসতা কিভাবে পরিচয় নির্মাণের রাজনীতিতে বিশেষ অভিঘাত রাখতে পারে সেটি নিয়ে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারেও বিস্তর বলেছেন তিনি। কানাডার অন্টরিও টিভি ১৯৭৭ সালে মার্শাল ম্যাকলুহানের একটি সাক্ষৎকার প্রচার করে। সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন মাইক ম্যাকম্যানুস। সেখান থেকে কয়েকটি প্রশ্ন এবং উত্তর তুলে দেয়া হলো। ম্যাকম্যানুসঃ মনে হচ্ছে, ড. ম্যাকলুহান, এই আদিম দুনিয়া বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গা নয়। ম্যাকলুহানঃ না, ট্রাইবাল জনতার একটি অন্যতম প্রধান খেলা হচ্ছে একে অন্যকে কতল করা। প্রাচিন গোত্রবদ্ধ সমাজে এটা এক সার্বক্ষণিক খেলা। ম্যাকম্যানুসঃ কিন্তু আমরা যেহেতু বৈশি^ক এবং ট্রাইবাল...( বাক্য শেষ করার আগেই ম্যাকলুহান কথা বলা শুরু করেন।) ম্যাকলুহানঃ পরস্পর যত কাছাকাছি আসে, ততই কি একে অন্যের মতন হতে থাকে? এমন কোন ঘটনা প্রমানিত হয়েছে বলে অন্তত শোনা যায়নি। মানুষ যতই পরস্পরের কাছাকাছি আসে ততই একে অপরকে নিয়ে আরো বেশি হিং¯্র ও অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। চানরাত’এ অরো যারা লিখেছেনঃ ঈদ নিয়ে যারা লিখেছেন ঃআব্দুল মান্নান সৈয়দ/ আবুল আহসান চৌধুরী/ বদরুন নাহার/ সায়মা সুহেরি/ অপ্রকাশিতঃ সৈয়দ শামসুল হক/ কাজী জাহিদুল হক। উপন্যাসঃ ধ্রুব এষ/ মুম রহমান/ নিয়াজ মাহমুদ প্রবন্ধঃ হাসান মোরশেদ/ জোবায়ের ইবনে কামাল বিজ্ঞানঃ এম. শমসের আলী গল্পঃ আনোয়ারা সৈয়দ হক/পাপড়ি রহমান/ অষ্টিক আর্যু/ মঈন শেখ/ কাজী মোহাম্মদ আলমগীর/অলাত এহসান/ সাব্বির জাদিদ/ কামরুন নাহার দিপা/আহমেদ সাব্বির/ খালিদ মারুফ/ কামরুল হাসান রাহাত। রোমাঞ্চোপন্যাসঃ ইশতিয়াক হাসান। ভ্রমনঃ আহমেদ হেলাল। ভ্রমনঃ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন। অনুবাদ গল্পঃ সীমা বল/রাইহান রাইন/ মাহিন হক/ শামসুদ্দোহা তৌহিদ/তানজিনা হোসেন। জন্মবৃক্ষ ক্ষত-বিক্ষত মোতাহার হোসেন মাহবুব ।। একুশের চেতনা আমাকে শিক্ষা দিয়েছিলো বাঙালি জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হতে। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আমাকে শিক্ষা দিয়েছিলো বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। একাত্তরের সাত মার্চ আমাকে শিক্ষা দিয়েছিলো অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ আমাকে শপথ করালো অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন দেশ গড়তে। পচাত্তরের পনেরো আগস্ট আমাকে শিক্ষা দিয়েছিলো শোককে শক্তিতে পরিণত করতে। নব্বইয়ের গণআন্দোলন আমাকে শিক্ষা দিয়েছিলো গণতন্ত্র পুনর্জাগরণের। প্রগতিতে ধীমান সেই জন্মবৃক্ষ আজ আঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত শোকের মাস শুরুর আগে অজেয় একটি শোকদিবস পালিত। রক্তস্নাত বাংলায় আয়োজন ‘শ্রাবণের শোকগাথা’ হে জাতির পিতা - তোমার রেখে যাওয়ায় বাংলায় কোথায় মানবতা? বিবেক কোথায়? জন্মবৃক্ষের আর্তনাদের কথা আজ কাকে বলি, কাকে বলি।। |