বৃহস্পতিবার ৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২
সঞ্চয় করার বিধান
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪, ১২:২৪ এএম |




ইসলামে সম্পদ খরচের ক্ষেত্রে কৃপণ হওয়া যেমন নিষিদ্ধ, তেমনি প্রাচুর্যের সময় অপচয় অপব্যয় করে সম্পদ খরচ করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে কারিমে অপচয় ত্যাগের কঠোর নির্দেশ জারি করে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আহার এবং পান করো, আর অপচয় করো না; তিনি (আল্লাহ) অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ -সূরা আরাফ ৩২
অপচয় এবং কৃপণতা দুটোই ইসলামে অনুমোদিত। এই দুই প্রান্তিকতার মাঝখানে মধ্যমপন্থা হিসেবে মিতব্যয়ী হয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু অর্থ সঞ্চয় করে রাখা ইসলামের শিক্ষা। যারা অপচয় এবং কৃপণতার পথ পরিহার করে মিতব্যয়িতার পথ অবলম্বন করবে আল্লাহ তাদেরকে নিজের বান্দা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।   এ প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(রহমানের বান্দা তো তারাই) যারা অপব্যয় করে না আবার কৃপণতাও করে না। তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।’ -সূরা ফুরকান ৬৭
অর্থোপার্জন, খরচ ও সঞ্চয়ের ব্যাপারে মাধ্যমপন্থার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। মনে রাখতে হবে, সঞ্চয় করতে গিয়ে কৃপণের তালিকায় যেন আপনার নাম না উঠে। কৃপণতা ও অপব্যয় সম্পর্কে সমাজের প্রচলিত ধারণাটি ভুল। যাকে বলে গোড়ায় গলদ। অনেকে মনে করেন, জন্মদিন, মৃত্যুদিবস, বিবাহবার্ষিকী ও ভালোবাসা দিবসের মতো বিভিন্ন দিবস কিংবা বার্ষিকীতে প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে নির্বিচারে ধার-দেনা করে হলেও খরচ করতে পারাই যেন উদারতা। ক্রমবর্ধমান এমন অযাচিত খরচের জোগান ও আনুষ্ঠানিকতায় তাল মেলাতে কালো টাকার পেছনে দৌড়ানো এবং চোরাপথ আবিষ্কার করাও যেন দূষণীয় নয়! 
পক্ষান্তরে যে হালাল-হারাম, পাপ-পুণ্য, প্রয়োজন-অপ্রয়োজন বিবেচনা করে খরচ করেন এবং অপব্যয়-অপচয় থেকে বিরত থাকেন- তাকে মনে করা হয় ‘কৃপণ’। স্ত্রী, সন্তান-সন্ততির ভরণপোষণ, পিতামাতার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের মতো আল্লাহ নির্দেশিত খাতে খরচ করতে অবহেলাই হলো- প্রকৃত কৃপণতা। অনেকে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিবারের প্রয়োজনীয় খরচটুকু করতে করে না, অভাবগ্রস্তকে কিছু দান করে না; জরুরি দ্বীনি কাজে অর্থ ব্যয় করে না- তাকেও কৃপণ বলা হয়।  
এর বাইরে যে ব্যক্তি এসব খাতে খরচ করতে অকুণ্ঠ কিংবা দ্বিধাবোধ করেন না, তবে বিভিন্ন দিবস-বার্ষিকীর অপ্রয়োজনীয় ও অবৈধ খরচে রাজি নন- সমাজের কিছু লোক তাকে ‘মহাকৃপণ’ বললেও তিনি কিছুতেই কৃপণ নন। বরং তিনি মিতব্যয়ী।
বস্তুত হালাল-হারামের বিধিনিষেধ মেনে খরচকে সীমাবদ্ধ করতে হবে। প্রাচুর্যের সময় খরচের উৎসবে মেতে না উঠে অপ্রয়োজনীয় কিংবা হারাম খরচ বাদ দিয়ে মিতব্যয়িতার পথ অবলম্বন করে উদ্ধৃত অর্থ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হবে। যেন পরে নিজের প্রয়োজনে অন্যের কাছে হাত পাতার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়।
পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, তুমি (কৃপণতাবশে) নিজের হাত ঘাড়ের সঙ্গে বেঁধে রেখে একেবারে ব্যয়-কুণ্ঠ হয়ো না। আবার (অপব্যয়ী হয়ে) একেবারে মুক্তহস্তও হয়ো না, তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’ সূরা বনি ইসরাইল ২৯
অপব্যয় না করে সন্তানদের জন্য কিছু সঞ্চয় করাও ইসলামের শিক্ষা। সন্তানদের কারও মুখাপেক্ষী রেখে যাওয়া নবী (সা.) পছন্দ করেননি। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি তোমার উত্তরাধিকারীদেরকে মানুষের করুণার মুখাপেক্ষী রেখে যাওয়ার চেয়ে তাদেরকে সচ্ছল রেখে যাবে- এটাই উত্তম। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম 
ইসলাম সঞ্চয়কে কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছে তা আরও স্পষ্ট হয় রাসূলে কারিম (সা.)-এর হাদিস থেকে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘উত্তম দান তাই, যা নিজ অভাবমুক্ততা রক্ষার সঙ্গে হয়।’- সহিহ বোখারি ২১১২
কৃপণ না হয়ে ইসলাম নির্দেশিত খাতে খরচে কোনো রকম দ্বিধা না করে, হারাম পথে খরচের সব পথ বন্ধ করে দিয়ে; অপচয়-অপব্যয় না করার মাধ্যমে মিতব্যয়ী হলে দারিদ্রমুক্ত জীবন আল্লাহ তাকে দান করবেন। এটা রাসূলে কারিম (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিমিত ব্যয় করে সে নিঃস্ব হয় না।’ -মুসনাদে আহমাদ ৭৩০৩
অর্থাৎ যে ব্যক্তি অর্থব্যয়ে পরিমিত বোধের চর্চা করবে, অনটন তার নাগাল পাবে না। ইসলামের এ মহান শিক্ষাটি যথাযথ অনুসরণ না করার কারণে মানুষ উপার্জনের যাচিত সুফল থেকে বঞ্চিত।  
কৃপণ না হয়ে মিতব্যয়ী হয়ে সঞ্চয় করলে হাজার কোটি টাকার মালিক হতেও ইসলাম নিষেধ করে না। সঞ্চিত অর্থ থাকলেই তো অর্থনির্ভর আমলগুলো করা যাবে। রোজাদারকে ইফতার করানো যাবে। শরিক হওয়া যাবে জনকল্যাণমূলক নানা কাজে। চালু করা যাবে সদকায়ে জারিয়ার অফুরন্ত ধারা। আবার উদ্ধৃত অর্থ যখন নেসাব পরিমাণ হবে এবং তা বর্ষপূর্তি হবে তখন সেখানে এসে যাবে জাকাতের মতো আরেকটি মহান ইবাদতের সুযোগ।  


মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ৭ তথ্য
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পূর্ণাঙ্গ জীবনালেখ্য অধ্যয়ন করে কূল-কিনারা পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি আল্লাহর মনোনীত শেষ নবী ও রাসুল।
তার স্বর্ণোজ্জ্বল ও ধ্রুপদী জীবন-অধ্যায় সম্পর্কে ধারণা থাকা একজন মুসলমানের জন্য খুবই জরুরি। সিরাতের গ্রন্থগুলোতে তার জীবন সম্পর্কিত প্রচুর তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
রাসুল (সা.) সম্পর্কে সাতটি সংক্ষিপ্ত তথ্য জানা যাক।  
১. রাসুল (সা.)-এর প্রিয় রং ছিল সবুজ।
২. তিনি মধু পছন্দ করতেন।
৩. মধুমিশ্রিত ঠান্ডা পানীয় তার প্রিয় ছিল।
৪. তার কণ্ঠস্বর এতোই জোরালো ছিল যে, বিদায় হজের ভাষণে তিনি লক্ষাধিক সাহাবির সামনে কোনো প্রকার সহযোগিতা ছাড়া জীবনের শেষ ভাষণ দেন।
৫. কারো কথার মাঝখানে তিনি কখনোই কথা বলতেন না। বরং বক্তার কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
৬. ঘুমানোর সময় তিনি ডান কাত হয়ে ডান হাত গালের নিচে দিয়ে শুতেন।
৭. রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত মাজা বা মেসওয়াক করা ছিল তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস।
তথ্যসূত্র শায়খুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া কান্ধলভি রচিত ‘আল-শামায়েল আল মুহাম্মদিয়্যা’ (২য় সংস্করণ)












সর্বশেষ সংবাদ
এক বছরে সাড়ে ৩ শ ধর্ষণের অভিযোগ কুমিল্লায়
সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পেলে ধারনা করা যাবে নির্বাচন কবে হবে: সিইসি
আজ কুমিল্লায় আসছেন সিইসি
চান্দিনায় মধ্য রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
এক বছরে ৯৬ বেওয়ারিশ লাশ দাফন কুমিল্লায়
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা ইকরা মডার্ণ স্কুলের বার্ষিক ফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা
জিয়া সাইবার ফোর্স- কুমিল্লা উত্তর জেলা কমিটি অনুমোদন
কুমিল্লায় বিজিবি অভিযানে ৬০ কেজি গাঁজা জব্দ
চান্দিনায় মধ্য রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণ নয়’
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২