বিধ্বংসী
ব্যাটিংয়ে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেন দিলারা আক্তার। দ্রুততম সেঞ্চুরির
রেকর্ড গড়ে তিনি ফেরার পর স্বর্ণা আক্তারও পেলেন তিন অঙ্কের স্বাদ। পরে শেষ
দিকের ব্যাটারদের তা-বে ইতিহাস গড়ে ফেলল আবাহনী লিমিটেড।
মেয়েদের ঢাকা
প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার দিলারা ও স্বর্ণার সেঞ্চুরির সৌজন্যে জাবিদ আহসান
সোহেল ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৪০৪ রান করে আবাহনী। মেয়েদের লিগ
তো বটেই, দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেই পঞ্চাশ ওভারের সংস্করণে কোনো দলের ৪০০ করার
প্রথম ঘটনা এটি।
চলতি লিগেই গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের বিপক্ষে ৩৯২ রান করেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। দুই সপ্তাহ পেরোতেই সেটি টপকে রেকর্ড গড়ল আবাহনী।
সব
মিলিয়ে মেয়েদের পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে বিশ্ব রেকর্ড থেকে অনেক দূরেই
আবাহনী। ক্রিকেটের তথ্য-পরিসংখ্যানের হিসেব রাখার ওয়েবসাইট ‘দা
অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিকেট স্ট্যাটিসটিশিয়ান ও হিস্টোরিয়ান’ অনুযায়ী, ২০০৭
সালে শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া ক্রিকেটে পুষ্পাদানা লেডিসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৬৩২
রান করেছিল কান্দিয়ান লেডিস ক্রিকেট ক্লাব।
সেদিন বাঁহাতি শ্রিপালি
শিরোমালা ভিরাক্কোডি একাই করেন ২৭১ রান। আরেক ওপেনার নিরোশা কুমারি খেলেন
১১৭ রানের ইনিংস। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৭৫ রান। অতিরিক্ত থেকে ১৩০ রান পায়
কান্দিয়ান লেডিস ক্লাব।
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ছেলেদের সর্বোচ্চ দলীয়
স্কোরও আবাহনীর। ২০১৭-১৮ মৌসুমের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের
বিপক্ষে তারা করেছিল ৪ উইকেটে ৩৯৩ রান।
৪০৪ রানের জবাবে ২২.৪ ওভারে
মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে যায় জাবিদ আহসান সোহেল ক্রিকেট ক্লাব। আবাহনী পায় ৩৬৮
রানের জয়। মেয়েদের লিগে এটিই সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড।
গত আসরে ৩২১ রান করে কেরানিগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমিকে ২৬৪ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বিকেএসপির
৪ নম্বর মাঠে সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেমে শুরু থেকে
আগ্রাসী ব্যাটিং করেন আবাহনীর দুই ওপেনার দিলারা ও শারমিন সুলতানা।
উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৯৩ বলে ১৩৮ রান যোগ করেন তারা দুজন।
১৩ চার ও ৫
ছক্কায় ৫৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিলারা। মেয়েদের লিগে এটিই সবচেয়ে কম
বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড। গত আসরে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ৬৬ বলে তিন
অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন মোহামেডানের ভারতীয় ব্যাটার জেসিয়া আক্তার।
শারমিন ৪০
বলে ৩৮ রান করে ফেরেন। পরে দিলারাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৮ বলে ১০৪ রান
করেন তিনি। এরপর রুবাইয়া হায়দার ঝিলিকও দ্রুত আউট হয়ে যান।
চতুর্থ
উইকেটে ভারতের প্রাত্থুসা কুমারকে নিয়ে ১১৫ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়ে তোলেন
স্বর্ণা। যেখানে স্বর্ণাই ছিলেন অগ্রণী। দলকে ৩০০ পার করিয়ে ৫০ বলে ৪৭ রান
করে আউট হন প্রাত্থুসা।
১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৭০ বলে সেঞ্চুরি করেন
স্বর্ণা। ৪৪তম ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে ৯০ বলে ১০ চার ও ৫ ছক্কায় ১১৮
রানের ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার।
শেষ দিকে নাহিদা আক্তার ২৩ বলে ৩৫ ও
অধিনায়ক জাহানারা আলম ১৬ বলে ২৯ রানের ক্যামিও খেলে দলকে ৪০০ পার করান।
অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে মাত্র ২৪ বলে ৫২ রান যোগ করেন তারা।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারায় জাবিদ আহসান সোহেল ক্রিকেট একাডেমি। কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।
২২.৪ ওভারের মধ্যে ১২টিই মেইডেন করেন আবাহনীর বোলাররা। পাঁচ বোলারের সবাই নেন ২টি করে উইকেট।
৬ ওভারে ৪ মেইডেনসহ মাত্র ৩ রান দেন শরিফা। ৫ ওভারে ৩ মেইডেনসহ ৪ রান খরচ সানজিদা আক্তার মেঘলার।
সেঞ্চুরির পর ৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন স্বর্ণা।
সাত
ম্যাচে আবাহনীর এটি ষষ্ঠ জয়। পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে এসেছে তারা।
এখনও প্রথম জয়ের খোঁজে নবাগত জাবিদ আহসান সোহেল ক্রিকেট ক্লাব। সাত
ম্যাচের সবকটি জিতে শীর্ষে মোহামেডান।