রোববার ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বাঙালির জেগে ওঠার ইতিহাস
হারুন হাবীব
প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪, ১:১১ এএম |

 বাঙালির জেগে ওঠার ইতিহাস
শুধু ইতিহাসের প্রয়োজনে নয়, সময়ের প্রয়োজনেও জাতীয় ইতিহাসের চর্চা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে; বিশেষত সে ইতিহাস যদি হয় কোনো রাষ্ট্রের জন্ম ইতিহাসের মৌল উপাদানসমৃদ্ধ।
সেদিনকার পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর যে ইতিহাস, তার সঠিক চর্চা হয় এমনটা বলা যাবে না। অথচ নতুন নাগরিকদের সঙ্গে ইতিহাসের সত্যের পরিচয় না ঘটালে তাদের কাছে জাতীয় ভিত্তির সংকট বাড়ে; সে সংকট সমকাল ও ভবিষ্যেক আঘাত করে। এর পরও দেখা যায় ইতিহাসের পাঠ সত্যিকারভাবে হয় না।
এই না হওয়ার প্রথম কারণ রাজনীতির চলতি প্রয়োজন সাধারণের কাছে ইতিহাসের প্রয়োজনকে ঢেকে দেয়, যা অবাঞ্ছিত; দ্বিতীয়ত, যারা ইতিহাসের প্রতিপক্ষ, তারা হয় ইতিহাসকে ঢাকতে চায়, নয়তো বিকৃত করতে চায়; এবং তৃতীয়ত, ইতিহাসকে আবার কেউ কেউ গ-িভুক্ত করতে চায়, যা অন্যায়। আমার বিশ্বাস, এই তিনটি কারণই ইতিহাসের প্রতি সুবিচার নয়, বরং অন্যায় আচরণ। কিন্তু ইতিহাস যেহেতু বোবা নয়, শক্তিহীনও নয়, অতএব সে তার সত্যকে রক্ষা করার শক্তি রাখে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রকাঠামোয় আমাদের বাঙালিদের কিছু বরেণ্য ইতিহাস-অধ্যায় আছে, যার একটি নির্মিত হয় ১৯৬৬ সালের জুন মাসে।
পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ছিল বাংলাভাষী, ৫৬ শতাংশ; কিন্তু ধর্মরাষ্ট্রবাদী এবং সামরিক সামন্তবাদী শাসকগোষ্ঠীর কাছে সে সত্যটি কখনো গুরুত্ব লাভ করেনি। ব্রিটিশ উপনিবেশ মুক্তির পর ১৯৪৭ সাল থেকে অর্থাৎ পাকিস্তান রাষ্ট্রের গোড়া থেকেই সে কারণে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হতে থাকে পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। যে বাঙালি মুসলমান পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও তারাই হয়ে ওঠে নতুন উপনিবেশের মানুষ! অতএব পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাংলাভাষীরা নিজেদের সম্মান-সম্পদ লুণ্ঠিত হতে দেখে, বাংলা ভাষার হরণচেষ্টা দেখে, লুণ্ঠন হতে দেখে নিজের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি।
বাঙালির জেগে ওঠার ইতিহাসএই প্রেক্ষাপটেই ১৯৪৯ সালে মুসলিম লীগের বিপরীতে জন্ম হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ নামের রাজনৈতিক দলের এবং সামান্য সময়ের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ নাম নিয়ে বিস্তার লাভ করতে থাকে।
নামের এই রূপান্তর ইতিহাসের আশীর্বাদ হয়ে বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনার স্ফুরণ ঘটায়। এই প্রেক্ষাপটেই লড়াকু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী নেতৃত্ব সামনে এগিয়ে আসে, দলটি জাতীয় মঞ্চের শক্তিশালী দলে পরিণত হয়। তরুণ শেখ মুজিব নির্বাচিত হন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হন আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ।
এরই মধ্যে ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে দিয়ে বলবৎ করা হয় জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন। সামরিক আধিপত্যবাদী শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়ে নির্যাতিত হতে থাকেন শেখ মুজিব।
মুসলিম লীগসহ বাঙালি সাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিদদের বিশ্বাসঘাতকতা ও পলায়নী মনোবৃত্তি সত্ত্বেও শেখ মুজিব থাকেন দৃঢ়চিত্ত। সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনায় ব্রতী হন তিনি। ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত করেন তাঁর ছয় দফা, যা দ্রুত রূপান্তরিত হয় বাঙালির মুক্তির সনদে।
প্রকৃতপক্ষে শেখ মুজিবের ছয় দফা ছিল পাকিস্তানি রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট বা মোড় ঘোরানো পদক্ষেপ। এর দফাগুলোতে সুস্পষ্ট প্রভাব পড়েছিল ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের, পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রে যা উপেক্ষিত হয়েছিল ১৯৪৭ সালে।
নতুন প্রজন্মের মানুষের জন্য পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর্যায়ক্রমিক ইতিহাসের পঠন একান্ত জরুরি। জরুরি ৭ জুনের ইতিহাস স্মরণ করা। কারণ ৭ জুন ১৯৬৬ থেকেই বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা বাঙালির মন ও মানসে মিশে যেতে থাকে এবং পরবর্তী সময়ে ব্যাপক জনসম্পৃক্ততার জন্ম দেয়, যা জাতীয় জীবনের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
পাকিস্তান তখন সামরিক জান্তার জাঁতাকলে পিষ্ট। সে প্রেক্ষাপটে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে ডাকা হয় বিরোধী দলগুলোর এক সর্বদলীয় বৈঠক। বৈঠকে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান, সঙ্গে যান তাজউদ্দীন আহমদ। এই বৈঠকে বঙ্গবন্ধু তাঁর ছয় দফা পেশ করতে চাইলে প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হন। কিন্তু শেখ মুজিব দমে যান না। সম্মেলন থেকে তিনি বেরিয়ে যান। লাহোরেই এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এবং তাঁর প্রস্তাব পেশ করেন। বিস্ময়কর হলেও সত্য, পাকিস্তানের রাষ্ট্রকাঠামোর অস্তিত্ববিনাশী তত্ত্বটি তিনি সেদিনকার পশ্চিম পাকিস্তানের মাটিতেই তুলে ধরেছিলেন, যা ছিল বিস্ময়কর এই রাজনীতিপুরুষের অসম সাহসী পদক্ষেপ।
১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে শেখ মুজিব ঢাকায় ফিরে আসেন। এসেই সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, ‘পাকিস্তান হবে একটি ফেডারেল রাষ্ট্র, কেন্দ্রের কাছে থাকবে শুধু প্রতিরক্ষা ও বিদেশনীতি, বাকি সব বিষয় ন্যস্ত হবে প্রদেশের হাতে। প্রদেশের থাকবে নিজস্ব মুদ্রা, পূর্ব অংশ থেকে পশ্চিমে মূলধন উড়াল বন্ধ থাকবে, থাকবে নিজস্ব ব্যাংকিং, আর্থিক ও করব্যবস্থাসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করার অধিকার। একই সঙ্গে থাকবে পূর্ব অংশের নিজস্ব মিলিশিয়া।’
এসব দাবি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে নিদারুণভাবে বিচলিত করে। পাকিস্তান-পছন্দ প্রতিটি রাজনৈতিক দল তীব্র সমালোচনায় ফেটে পড়ে; এমনকি সামরিক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ছয় দফার বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দেন। মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো ছয় দফার প্রস্তাবগুলোকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন বলে আখ্যায়িত করে। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি একে বিদ্রুপের চোখে দেখে; এমনকি নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান, যিনি আওয়ামী লীগ ঘরানার পশ্চিম পাকিস্তানি নেতা ছিলেন-তিনিও সমর্থন জানাতে ব্যর্থ হন।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের জাতির পিতা, ছিলেন অনড়, দুঃসাহসী এবং দূরদর্শী। তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। ছয় দফা পেশের মাত্র এক মাসের মাথায় ১ মার্চ ১৯৬৬ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সাধারণ সম্পাদক হন তাঁরই যোগ্য অনুসারী তাজউদ্দীন আহমদ।
স্বৈরতান্ত্রিক পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোকে আঘাত করার লক্ষ্যে এরপর দেশব্যাপী ছয় দফার প্রচারে নামেন শেখ মুজিব। এ সময় বারবার গ্রেপ্তার হতে থাকেন তিনি মিথ্যা মামলায়, গ্রেপ্তার হতে হয় তাঁকে দেশের তথাকথিত নিরাপত্তা আইনে। ৭ জুন ১৯৬৬। শেখ মুজিব ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গোটা পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল ডাকা হয়। সেদিনের হরতালটি ছিল সর্বাত্মক। ট্রেন থামানো হয়, যানবাহন বন্ধ থাকে; এই হরতালে ঢাকাসহ সব শহরাঞ্চলে গণমানুষের সম্পৃক্ততা ঘটে অভাবিতভাবে। হরতাল চলাকালে পুলিশ ও ইপিআর গুলি চালায় টঙ্গী, তেজগাঁও, সদরঘাট ও নারায়ণগঞ্জে। শহীদ হন মনু মিয়া, সফিক, শামসুল হকসহ অসংখ্য মানুষ। সরকারি প্রেস নোটেই ১০ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়।
কিন্তু এই দমন-পীড়নেও ছয় দফার আন্দোলন রোখা যায়নি। পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা এ সময় পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো হুমকি, ভয় বা ষড়যন্ত্র শেখ মুজিবকে টলাতে পারেনি। তিনি বাঙালি জনগেষ্ঠীকে বোঝাতে সক্ষম হন, এক হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তান একদিকে যেমন বাঙালিদের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে শোষণ করছে, তেমনি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও অরক্ষিত রাখছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৬৫ সালের ১৭ দিনের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন, যখন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণভাবে অরক্ষিত ছিল। বলা বাহুল্য, সর্বস্তরের মানুষ স্বল্পতম সময়ে ছয় দফাকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করে।
আরো একটি অপপ্রচার চলেছিল সে সময়। মুসলিম লীগ ও অন্যরা বলতে থাকে, এই আন্দোলন বৃহৎ বাংলা গঠনের সুগভীর চক্রান্ত। তাদের বক্তব্য ছিল : পূর্ব ও পশ্চিম বঙ্গ এক করার জন্যই শেখ মুজিবের ছয় দফা। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খাঁ এই বলেও হুমকি দেন, যতক্ষণ তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত শেখ মুজিবকে জেলখানায় থাকতে হবে। কিন্তু এসব উগ্রতা সত্ত্বেও ইতিহাসের গতিপথ আটকানো যায়নি।
বঙ্গবন্ধু শুধু প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের জন্যই ছয় দফা উত্থাপন করেছিলেন, এমনটা নয়। তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি জনগণতান্ত্রিক উত্থান, যা বাঙালির মনোজগতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে। তাঁর পদক্ষেপ ছিল সুচিন্তিত। ফলে তাঁকে কারগারে যেতে হয় বারবার। সইতে হয় অবর্ণনীয় নিপীড়ন। কিন্তু যে স্বপ্নের সারথি হয়ে তিনি ছয় দফার আন্দোলন শুরু করেন, তা বাস্তব রূপ লাভ করে। ইতিহাসের সত্য এই যে ধারাবাহিক সে আন্দোলনে বড় ভূমিকা রাখে ছাত্র ও শ্রমিক সমাজ। ছয় দফা আন্দোলনে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে যায়, কিন্তু ছাত্রসমাজের ১১ দফা বেগবান হয়। পূর্ব বাংলার শহর-বন্দর-নগরে অভাবিত গণবিপ্লব সাধিত হয়।
১৯৬৬ সালে শুরু হওয়া এই আন্দোলন পরের বছরগুলোতে বাংলার মাটিকে প্লাবিত করে। ছয় দফায় সমর্থন দেওয়ার কারণে জনপ্রিয় দৈনিক ইত্তেফাক বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু আন্দোলনের তীব্রতা কমানো যায় না। এক পর্যায়ে ১৯৬৮ সালে ভারতের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সশস্ত্র পথে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে রুজু করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। সে মামলার মূল আসামি শেখ মুজিব, যদিও তিনি তখন জেলে বন্দি।
কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্রতত্ত্বই কাজে আসে না। আগরতলা মামলার বিরুদ্ধে গোটা পূর্ব পাকিস্তান অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। গণ-আন্দোলন গণবিস্ফোরণে পরিণত হয়। ফলে পাকিস্তানের লৌহমানব ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের পতন ঘটে। জননন্দিত শেখ মুজিব নিঃশর্ত মুক্তি লাভ করেন। দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান।
এরপর আসে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, যে নির্বাচনে ছয় দফার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ একই সঙ্গে পাকিস্তানের কেন্দ্র এবং পূর্ব পাকিস্তানে সরকার গঠনের পরিপূর্ণ ম্যান্ডেট লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের ইতিহাস থেমে থাকে না। সেনাবাহিনী ও পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরা গণরায়কে অস্বীকার করে, অস্ত্র প্রয়োগে সেনাবাহিনী বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর নির্বিচার গণহত্যা শুরু করে। এই পর্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। শুরু হয় পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের সশস্ত্র আন্দোলন, যা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পথপ্রদর্শক। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালির অসাম্প্রদায়িক সত্তা জাগ্রত হয়, জয় বাংলা জাতীয় স্লোগান হয়, শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হন এবং ধর্মরাষ্ট্রবাদী ও সামরিক সামন্তবাদী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালি জেগে ওঠে। কার্যত এটি ছিল কয়েকটি দফার মোড়কে স্বাধীনতার এক দফা সংগ্রাম, যে সংগ্রাম বাঙালি গণমানুষকে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে পৌঁছে দিয়েছে। এই আন্দোলন আইয়ুব খানের একনায়কত্বের পতন ঘটিয়েছে, কুখ্যাত মোনেম খাঁকে অপসারিত করেছে, এমনকি ২৩ বছরের পাকিস্তান রাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে একটি নির্বাচন সম্পাদন করার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এবং রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে পত্তন ঘটিয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। আর এই ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার মূল কারিগর, মূল নেতা অসামান্য রাজনীতিপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আজকের এই দিনে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানাই জাতির পিতাকে, স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-আন্দোলনের সব শহীদকে।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, লেখক












সর্বশেষ সংবাদ
আজ কুমিল্লা মুক্ত দিবস
নিবেদিতা স্কুল: আলোর নিচে অন্ধকার
রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয় লাকসামে হাসনাত আবদুল্লাহ
গুম-খুনের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক
দাউদকান্দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
বিভাগ না দিয়ে কুমিল্লাবাসীর প্রতি জুলুম করা হয়েছে
কুমিল্লায় জামায়াতের আমীরের আগমনে স্বাগত মিছিল
আজ কুমিল্লায় আসছেন জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান
লালমাইয়ে দাফনের ৪ মাস পর থেকে লাশ উত্তোলন
বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমানের সঙ্গে ৯ ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতিনিধি সম্মেলন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২