টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপে ভারত–পাকিস্তানের লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।
আগামী ৯ জুন দু’দল গ্রুপপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে। তার আগে তুমুল
সমালোচনা চলছে ম্যাচটির ভেন্যু নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের পিচ
নিয়ে। এখন পর্যন্ত হওয়া দুটি ম্যাচের গণ্ডিই ছিল একশ রানেরও কম। এ ছাড়া
পিচের আচরণও অনাকাঙ্ক্ষিত, বল কখনও নিচু আবার বাউন্স হচ্ছে আচমকা। তাই তো
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ভেন্যু পরিবর্তন নিয়ে মৃদু গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।
নিউইয়র্কের
পিচে খেলা বিপজ্জনক ও ভয়ংকর বলেও মন্তব্য করেছিলেন হার্শা ভোগলে ও ইরফান
পাঠান। তবুও সেখান থেকে সরছে না ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। পিচ নিয়ে সমালোচনা
হলেও সেখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই আইসিসির।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আইসিসির
অফিশিয়ালদের বরাতে বিবিসি বলছে, ভারতীয় দল অনানুষ্ঠানিকভাবে নিউইয়র্কের পিচ
নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। তবে হঠাৎ করেই নিউইয়র্কের বদলে ফ্লোরিডা
কিংবা টেক্সাসে ম্যাচের ভেন্যু পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা নেই আইসিসির।
কেবল নিউইয়র্কেই ড্রপ–ইন পিচ আছে, বাকি দুই মাঠের পিচ একেবারে প্রাকৃতিক।
ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে নাসাউতে এখনও ব্যবহার হয়নি এমন পিচ ব্যবহার করা হবে।
তবে এই বিষয়টিও নির্ভর করছে তার আগপর্যন্ত হওয়া ম্যাচগুলোতে পিচের
গতিপ্রকৃতি দেখে।
চলতি বিশ্বকাপের জন্য আইসিসির মেগা প্রজেক্ট ছিল এই
নাসাউ স্টেডিয়াম। মাত্র পাঁচ মাসে বানানো হয় নিউইয়র্কের মাঠটি, যেখানে আগে
ছিল উন্মুক্ত পার্ক। সাধারণত ক্রিকেট মাঠের পিচ হয় সেই এলাকার মাটি দিয়েই।
কিন্তু এখানকার পিচ আনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড থেকে। সেই পিচের
চরিত্র বুঝতে পারছেন না ক্রিকেটাররা। ফলে বলের অহেতুক ওঠা–নামায় তাদের
নাজেহাল হতে হচ্ছে।
বিশ্বকাপের ম্যাচে প্রথমবার নাসাউতে মুখোমুখি হয়েছিল
শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমে ব্যাট করে লঙ্কানরা মাত্র ৭৭ রানে
গুটিয়ে যায়, যা পেরোতে প্রোটিয়াদের ১৬ ওভারের বেশি লেগে যায়। এরপর গতকাল
ভারত–আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছিল এই ভেন্যুতে। আইরিশরা ভারতীয় পেসারদের
সামনে দাঁড়াতে না পেরে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৯৬ রানে। জবাবে ভারত ১২.২ ওভারে
৮ উইকেট হাতে রেখে জিতে যায়। তবে দুশ্চিন্তা বেড়েছে রোহিত–পান্তরা
ব্যাটিংয়ের সময় বলের ওঠা-নামায় ভোগার কারণে।
এর আগে এই পিচকে ভয়ংকর ও
বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেন ভোগলে, ‘এটি ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ‘‘কার্তিক সেরা পিচ
নয়’’ উল্লেখ করে বিনয় দেখিয়েছে। তাদের (আয়ারল্যান্ড) ১০–১১ নম্বরে নামা
একজন ব্যাটার এমন একটি বল মুখোমুখি হয়েছিল, যেটাতে সামনের দিকে এগোলেও বল
অতিক্রম করেছে মাথার ওপর দিয়ে। এ ধরনের বল অনেক বিপজ্জনক।’ সাবেক ইংল্যান্ড
অধিনায়ক মাইকেল ভনও চাঁচাছোলা ভাষায় মন্তব্য করেছেন নিউইয়র্কের পিচ নিয়ে,
‘যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট বিক্রির কাজ চলছে। তবে এজন্য নিউইয়র্কের
সাব-স্যান্ডার্ড পিচে ক্রিকেটারদের খেলতে হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশ্বকাপে খেলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে এরকম পিচে খেলতে হচ্ছে, এটা বাজে
ব্যাপার।’