খেলাটা
ঘরের মাঠে। চিরচেনা আঙিনায় রিয়াল মাদ্রিদ কতোটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা সবারই
জানা। শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলে সেটাই আরেকবার জানান দিলো মাদ্রিদের
দলটি। তবে সেই আক্রমণ সামলে ঘুরে দাঁড়ালো বায়ার্ন মিউনিখ। এগিয়েও গেল। তখনই
ম্যানুয়েল নয়ারের ভুল এবং রিয়ালের ফিরে আসার গল্প। তাতেই চ্যাম্পিয়ন্স
লিগের ফাইনালে উঠলো কার্লো আনচেলত্তির দল।
বুধবার (৮ মে) সান্তিয়াগো
বার্নাব্যুতে সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে রিয়াল।
বায়ার্নকে আলফুনসো ডেভিস এগিয়ে নেওয়ার পর রিয়ালের হয়ে দুটি গোলই করেন বদলি
ফরোয়ার্ড জোসেলু। আর তাতেই দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের জয় ৪-৩ গোলে। প্রথম লেগ
২-২ গোলে ড্র হয়েছিল।
ম্যাচের শুরুতেই একটি ভালো সুযোগ পায় রিয়াল। তবে
ষষ্ঠ মিনিটে দানি কারভাহালের গোলমুখে বাড়ানো বল ধরতে পারেননি কেউ। ত্রয়োদশ
মিনিটে নয়ারের কাছে হার মানতে হয় ভিনিসিউস-রদ্রিগো জুটিকে। ২৩তম মিনিটে
রদ্রিগোর কাছ থেকে বল পেয়েও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি ভিনিসিউস।
২৮তম
মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করে বায়ার্ন। বক্সের বাইরে থেকে নিচু হয়ে
জোরাল ভলি করেন হ্যারি কেইন, ঝাঁপিয়ে এক হাত দিয়ে বল বাইরে পাঠান আন্দ্রে
লুনিন। প্রথমার্ধে গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর
খেলা শুরু হতেই আক্রমণে যায় রিয়াল। তবে ব্যর্থ হয়। ৫৩তম মিনিটে কেইনের
আরেকটি প্রচেষ্টা ঝাঁপিয়ে রুখে দেন লুনিন। দুই মিনিট পর ভিনিসিউসের পাস
গোলমুখে পেয়ে ফ্লিক করেন রদ্রিগো, দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় বল।
৫৯তম
মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে রদ্রিগোর রক্ষণপ্রাচীরের ওপর দিয়ে নেওয়া ফ্রি
কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান নয়ার। পরের মিনিটে তিনি ভিনিসিউসের জোরাল শট অসাধারণ
ক্ষিপ্রতায় কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন।
বায়ার্ন এগিয়ে যায় ৬৮তম মিনিটে।
পাল্টা আক্রমণে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ডেভিস, আন্টোনিও রুডিগারকে
কাটিয়ে জায়গা বানান। বাধা দিতে ছুটে আসেন কারভাহাল, দুই ডিফেন্ডারের মধ্যে
দিয়ে জোরাল কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন কানাডার
ফরোয়ার্ড ডেভিস।
এরপরই জমে ওঠে ম্যাচ। গোল খাওয়ার খানিকবাদেই সমতায়
ফিরতে পারতো রিয়াল। তবে বল জালে যাওয়ার আগ মুহূর্তে জসুয়া কিমিখকে মুখে ধরে
নাচো ফের্নান্দেস ফেলে দেওয়ায় স্বাগতিকদের উল্লাস থেমে যায়। ভিএআরের
সাহায্যে গোল দেননি রেফারি।
ম্যাচ তখনও বায়ার্নের হাতে। ঠিক তখনি
অমার্জনীয় এক ভুল করে বসেন নয়ার। ভিনিসিউসের সোজাসুজি দুর্বল শট ঠেকাতে
গিয়ে তালগোল পাকান তিনি, আর ছুটে এসে আলগা বল জালে পাঠিয়ে দেন ৮১তম মিনিটে
ভালভার্দের বদলি নামা জোসেলু।
এরপর যোগ করা সময়ে আবারও বায়ার্নের জাল
কাঁপিয়ে দেন জোসেলু। বাঁ দিক থেকে রুডিগারের ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ানো বল
দারুণ এক টোকায় জালে পাঠান স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। বাকি সময়ে আক্রমণ করেও
ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বায়ার্ন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রেকর্ড ১৫তম
শিরোপার লক্ষ্যে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। আগামী ১
জুন লন্ডনের ওয়েম্বলিতে হবে ফাইনাল।