রবিবাসরীয়...
|
![]() কুমিল্লা,বাংলাদেশ। প্রদীপ ভট্টাচার্য, (শিব নারায়ণ দাসকে উৎসর্গীকৃতথ) সে একটা উৎকট চঞ্চল ধীবর। আটলাণ্টিকে খুঁজে নিতো সূর্য এবং মানচিত্রে বসাতো,জীবন। অনেক সময় যানজটে হাঁটতো। পেছনে পথিকের প্রশ্নবানে ছিলো সে মাছ পেয়েছো ----? নিরুত্তর পথিক কেবল হাঁটতো। চোখ তার ছিলো ঋজু আজীবন, ছিলো শপথ ;স্রোতের বিপরীতে। পথে আলেয়ার রোশনি কেবল ডাকতো,আর বলতো আসো---- এখানে আছে অনেক কিছু উদাস সে হাসতো,চোখ ছিলো নীল আকাশে ধ্রুবতারা। বুক থেকে নিঃশ্বাস ছেড়েছিলো একদিন যখোন রাত হয়ে গেলো তার,সব ছায়ারা সরে গেলে শুধু। আলেয়ারা এখনো তাঁকে খুঁজছে---- নিঃশ্বাস তাঁকে ছাড়েনি তখনো। আসুন বাঙালি হই শাহজালাল সরকার আসুন মোরা বাঙালি হই বাঙালিপনায় মন রাঙাই কাজে বাঙালি, সাজে বাঙালি, কথায় বাঙালি, কর্মে বাঙালি হই। চলনে-বলনে, ঢঙে বাঙালি বনি। বাঙলায় ভাবি, বাঙলায় বলি, বাঙলায় যেনো স্বপ্ন দেখি। বাঙলাতে হই দক্ষ, বাঙলায় পরিপক্ব। বাঙলায় চাই, বাঙলায় গাই, বাঙলা ছাড়া বিকল্প নাই। বাঙলায় পড়ি, বাঙলায় লেখি বিদেশি সংস্কৃতিরে না বলি। মনে বাঙলা, প্রাণে বাঙলা ঘরে বাঙলা, বাইরে বাঙলা রঙে বাঙলা, রূপে বাঙলা অস্তিত্বে বাঙলা, প্রয়াণে বাঙলা। মনে বাঙালি, প্রাণে বাঙালি, ভেতরে বাঙালি, বাইরে বাঙালি। কৃতিত্বে বাঙালি, গৌরবে বাঙালি বাঙালিপনাই হোক দৃপ্ত অঙ্গীকার। [শাহজালাল সরকার, প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পাহাড়পুর গান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরাদনগর, কুমিল্লা,। মোবাইলঃ ০১৭২৬৪৩১০৮৩] লড়াকু যুদ্ধ ময়দানকে ভয় পাইনা। প্যালিওলিথিক যুগের যোদ্ধা - যে কিনা পাথরের সুচাগ্র ভাগ দিয়ে বধ করেছিলো হিংস্র বাঘিনী। দাঁতে দাঁত চেপে গায়ের স্বেদজল ঝরিয়ে আলাদা করেছে চর্ম, মাংস, হাড়। টেনে ছিড়ে ভক্ষণ করেছে রক্ত মাংসের লোনা স্বাদ। সুচালো দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা মাংসের শক্ত আঁশ খুঁটে খুঁটে বের করেছিলো রক্তাক্ত দন্ত থেকে। আমি সেই যুগের বলিষ্ঠ যোদ্ধা। ট্রয়ের যুদ্ধে দেখেছি জীবনের মূল্যহীনতা কিংবা পলাশীর যুদ্ধে কান পেতে শুনেছি মীরজাফর, মীর কাশেম আর ঘসেটি বেগমের স্বগতোক্তি। সিরাজুদ্দৌলার সমর্পণে বিষাক্ত চন্দ্রবোড়ার মতো ফুঁসে উঠেছিলাম ভাগিরথীর তীরে। আজও নগ্ন পায়ে এক ময়দান থেকে আরেক ময়দানে আমার নির্ঘুম পথ চলা। ঘুমাতে চেয়েও ঘুমাতে পারেনি নির্ঘুম মলিন নেত্রের দুই খানা মণিমালা। আজন্ম যোদ্ধাদের যুদ্ধে কোনো ভয় নেই। শুধু একটাই ভয় অসমকক্ষ যোদ্ধার সাথে লড়াই। সেই লড়াইয়ে জয় সুনিশ্চিত হলেও জয়ের মাধুর্য কিংবা গৌরব তো নেই। সুতরাং, আমায় লড়াইয়ের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। জুবাইদা নূর খান সূর্যাহত ইয়াসিন আশরাফ নুতন ধারার কবিতা লিখার চেষ্টা করললাম। ৯ মার্চ ২০২৪ দেহ,মন গোপন রেখে তবু চেয়েছিলাম বলেছিলাম সেই কথা যা দেবে আজ তখনও দূরের ছায়াগাছে বিবদমান রেখা বাতাসের স্পর্শে জেগে জেগে ওঠে তখনও ভাবের মৃত্তিকায় দগ্ধ চুম্বন বেলা। পেয়েছি যা তাকে অলঙ্কৃত করে পাঠাবো তাপের বাজারে সৎকর্মের বিতান থেকে আনবো খুলে আনন্দ ধৈবত দিনে দিনে রচিত এই তরুগৃহে যেইসব হাত করেছে লাল ক্রীড়া এসো এখন সমস্বরে ভেঙে দেই, বেজে উঠি আবার জোছনা রাতে চৈত্রের রোদ কিছু বারতায় মিশে যায় সাথে নীল খামে আঁকে নতুন দিনের মেঘের আমন্ত্রণ এদিকে সোনালি চুলের ভাবি আয় আয় বলে শাড়িতে নাচের বাক্স খুলে শূন্যে বসে আছে দেখ তাহার চোখ ও ঠোঁট থেকে ক্রমাগত ঝরছে অজস্র আপেল ফুল তুমি ভুইলা গেলেও আমি কিন্তু ভুলিনি ভূপেনের আদিম সংগীত। নাগরদোলা বৈশাখ বশির আহমেদ এসো নাগরদোলা বৈশাখে মুছে ফেলি পুরনো দুঃখ। কতকিছুর বিলুপ্তি ঘটেছে সময়ের বিবর্তনে, চিড়া মুড়ি খৈ যেন বৈশাখের সুখ! এক সময় মনের খোরাক যোগাতো লোকসংগীত জারিগান গান পালা গান বাউল-মারফতি, কাচের চুড়ি রূপমোহ সজ্জায় আধুনিক হয়ে ওঠে লাজুক প্রেমিকা। রমনার বটমূলে ছায়ানটের বসন্ত বরণ মনে করিয়ে দেয় বাংলা সংস্কৃতির উজ্জল ইতিহাস। এসো আবারো মিশে যাই বাংলা সংস্কৃতির সবুজ শিখরে, কতদিন গত হল শুনিনা ভাটিয়ালি গান। বৈশাখ এলেই ইচ্ছে হয় নিজেকে রাঙ্গাই শিল্পকলার নান্দনিক আলপনায়। আততায়ী আহমেদ সাব্বির অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আততায়ী । কুয়াশায় ভেজা আস্তিন তার । দুঃখকে মুষ্টি পাকিয়ে , ঘুষিতে ভরিয়ে তুলে মুখ। ঠোঁট কেটে যায় । নাক ভেঙে গলগল লহু। আঘাতে দিশেহারা হয়ে যাই। লুটিয়ে পড়ি মাটিতে । নীল চোখে হাতরাই তাকে । মাথা তুলতেই বুকে লাথি , ক্লান্ত স্বরে বলে উঠি , “ কে ভাই তুমি ?” শুকনো পাতার মতো ভাঙে , খাঁচার পঁচিশটা কপাট । উষ্ণ পিচের মতো , পথে শুয়ে পড়ি যুদ্ধের ক্লান্তিতে । কলার ধরে দাঁড় করায় , ঘাম রক্ত প্রেমে পড়ে যায় । “ ভয় পাওয়া অনিবার্য দুঃখ । “ ভাষণের স্বরে বলে আততায়ী । অবাক হবার শক্তি পাই । বাহুতে বল ফিরে আসে। মুষ্টি পাকিয়ে বাঘের মতো , অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ি । জুডো , কারাতে , বক্সিং , তায়কোয়ান্দো দুঃখের সাথে তুমুল লড়াই । রক্তে রক্তে তীব্র যুদ্ধ , আঁধারের আসমানে উড়ে মিসাইল । লাশের গন্ধ মেঘাচ্ছন্ন মর্গে , আত্ম সমর্থনে ব্যাপক শহিদ । গাজীর সংখ্যাও কম নয় । বিজয়ের ইস্ক্রা মারিয়ানা আঁধারে । অবশেষে যুদ্ধজয় আততায়ী আলোতে । নিহত হয়নি কলি যমানাতেও । যুগে যুগে আততায়ী আসে আঁধারে । যেমন আসে পীর অথবা ঋষি । পরিত্রাণ আতাউর রহমান দরোজায় কড়া নেড়ে না-পেয়ে প্রাপক ফিরে গেছে কারা যেনো, রেখে গেছে উঠোনজুড়ে ঠোঁটভাঁজা মিছিল সংঘবদ্ধ নিস্তব্ধতায়, শেকড় গজানো পা-গুলোর জন্য রেখে গেছে মুক্তির গন্ধযুক্ত এক সংলাপ 'জ্বলে ওঠো ; অথচ আমরা কতবার জ্বলে উঠতে গিয়েও নিভে গেছি এ কথা রঙিন আলোয় রাঙানো অট্টালিকাগুলো জানে, কতবার নিজের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে বিদ্রোহী হতে হতে ফুরিয়ে গেছি, রঙিনদিনের স্বপ্ন দেখে দেখে কাটিয়ে দিয়েছি কতো অসংখ্য রাত এ কথাও জানে ওই আকাশ ; তাই, প্রতিবার হেরে গেছি মেনে নিয়েছি অধিকার সহজলভ্য কিছু নয় পৃথিবীতে... প্রাসাদে প্রাসাদে আছড়ে পড়ছে উল্লাস নগর নর্তকীর নৃত্যকলায় বুঁদ হয়ে আছে সবকটি রঙিনালয়, অথচ আমাদের ঘুম ভাঙে মাঝরাতে শাদা ভাতের দুঃস্বপ্ন দেখে, আমরা বেঁচে আছি কিনা এই প্রশ্ন নিয়ে নিজেরাই দাঁড়াই নিজেদের সমুখে; আমরা আর পারছি না, আমরা ফুরিয়ে যাচ্ছি... তবু আজ এই রুগ্ন মৌসুমে বারুদ হওয়ার স্বপ্ন দেখা মনকে প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছে করছে খুব বেশি, ইচ্ছে করছে সমূদয় অবহেলা আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়ে উঠি; আমাদের একেকটা মৃত্যুই হয়ে উঠুক একেকটা পরিত্রাণ। বেয়াড়াথচুম্বন মেহেরুন্নেছা তোকে বলে রাখলাম, আয় এদিকে, অনন্তের উন্মুখতায়, গোপনীয়তার দ্বার খুলে দে বেয়াড়া চুম্বনের কামুকতায়। তুই যুগের প্রতিচ্ছবি, থাকবি গুহাচিত্রে। তুই নাব্যতার পাদপীঠ, থাকবি ভূমিক্ষেত্রে। বেরিয়ে এসে দেখ আমাজন লিলিতে ঊষর মৃত্তিকা যত; পাহাড় ডিঙিয়ে দেখ অঙ্কুরোদগমে ছেয়ে গেছে জীবন যখন অস্তমিত। কে তোরে রুখতে পারে ঈশ্বরকে ছাড়িয়ে যেতে? কে তোরে পরাবে শেকল দু'পায়ে যার খড়গ নাচে? একদিন তা-বের বাহিরে চলে যাবে সকল জিজ্ঞাসা, দৃষ্টির পথ মাড়িয়ে বিলীন হবে তোর আজন্মের হতাশা। তোর ডানার আগুনে ছারখার হবে এই পৃথিবীর চিরাচরিত কক্ষপথ। পাপের জ্যোৎস্নায় প্লাবিত হবে প্রাসঙ্গিক সব নগর-জনপদ। একটি প্রজাপতির মৃত্যু বিজন দাস উৎসর্গঃ শিল্পী স্বপ্না রায় (মনু) দিদি বলে ডাকত পাড়া জুড়ে চোট্টরা, হঠাৎ একদিন দিদি ডেকে বলল প্রজাপতি ধরে দিতে, কোথায় পাব তাও দেখিয়ে দিল উঠনের বরুই বৃক্ষের ডালে। আমি সবে কিশোরের দিকে এগুচ্ছি, ছোট্ট মানুষ, দিদি বলেছে বিধায় না করতে পারিনি, পূর্ণিমার চাঁদের মতো সুন্দর শিল্পীর তুলিতে আঁকা যেন দিদি। আস্তে, আস্তে, বৃক্ষে উঠলাম গিয়ে দেখি জোড়া প্রজাপতি, এতো বড় প্রজাপতি আগে কখনো দেখিনি, ধরে এনে দিলাম, একটি আমাকে দিয়ে দিল প্রজাপতির জন্য পাড়া জুড়ে আমার আনন্দ। বাসায় ফিরলাম, হাতে প্রজাপতি মা জননী দেখে বললেন কোথায় থেকে ধরে আনলি ছেড়ে দে খোকা, প্রজাপতি ধরতে নেই, মায়ের অবাধ্য হতে পারিনি ছেড়ে দিয়ে সোজা দিদির কাছে এলাম বললাম প্রজাপতি কই? দিদি তার ঘরে কাঁচের বক্সে ক্রুসবিদ্ধ করে গেঁথে রেখেছে, নিরাশ মনে বাসায় ফিরলাম অপরাধ বোধের স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায় একটি প্রজাপতির মৃত্যু। জোছনার প্রতিবেশী শাহীন শাহ্ সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে আছি সমুদ্র জোছনার আশায়। দাঁড়িয়ে আছি বাগানফুলে আকাশ দেখার আশায়। ভবনের ভিড়ে শহর থেকে জোছনা গায়েব হয়ে গেছে গায়েব হয়ে গেছে... ভবনের গায়ে লেগে থাকা জোনাক আলো। আমরা জোছনার প্রতিবেশি সে কথা কবে থেকে ভুলে গেছি... ভুলে গেছি জোনাক আলোয় বকুল গাছটির কথা। যা কিছু ভালোবাসি সেই কবে থেকে ভুলে গেছি। ভুলে গেছি জোনাক আলোয় মাটির ফুলের ঘ্রাণ॥ মৃত জোছনার নিভান আলোয় অপেক্ষার ডাক - ডাকতে ডাকতে আলজিভ নষ্ট করে ফেলেছি। বোবা হয়ে গেছে জোনাক আলো’র নির্ঝর কথামালা কা-হীন অক্ষত হৃদয়ে নির্বাক ফুটে আছি। কা- থেকে ঝরে গেছি বলে তুলতে চাওনি আমাকে পরিত্যক্ত জীবন, মরা ডাল, মরা মাটি কোনও কালে কেউ গ্রহণ করে নি। জ¦লে জ¦লে নিভে গেছি বলে বহুপথ ধরে চলে গেছ যেখানে সমুদ্র জল হাওয়ায় মাটি ও জলের গান হয়। গান হয় তারাদের রঙিন ফুলের কথা নিয়ে। কাঁশফুলের নরম ঘাসে মুখগুজে জড়িয়ে আছি নিঃসঙ্গকে। আলজিভ হারিয়ে নিঃসঙ্গতার বেদনায় বেদনায় মরা গাঙের - মরা মাটিতে শুয়ে শুয়ে চেয়ে আছি তোমার দিকে... চেয়ে আছি আকাশের দিকে চেয়ে আছি জোছনার আশায় আশায় ॥ |