শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
৭ মার্চ বনাম ২৬ মার্চ
শান্তিরঞ্জন ভৌমিক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪, ১:৩৬ এএম |


 ৭ মার্চ বনাম ২৬ মার্চ
মাঝে মাঝে ভাবি- বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কোনটি ? অবান্তর ভাবনা। তারপরও ভাবছি। কারণ, সাংবিধানিকভাবে জানি বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতে রক্তক্ষয়ী নয়মাস মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকহানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে পরাজিত করে বাংলাদেশ পুরোপুরি শত্রুমুক্ত স্বাধীনতা লাভ করে। সুতরাং এ ব্যাপারে তো অবান্তর চিন্তা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও প্রশ্ন ওঠে- কে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন ? কখনও বলে একজন সেনাবাহিনীর মেজর ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন, আবার ক্ষীণ কন্ঠে বলে- বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন। তাহলে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেইসকোর্স ময়দানে দশ লক্ষাধিক জনতার সম্মুখে বঙ্গবন্ধু যখন বল্লেন- ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তাহলে এই আহবানে তাৎপর্য কী। আমরা অর্থাৎ আমার মতো বয়সী যারা, তারা জানি- ৭ মার্চ সমগ্র বাঙালিজাতির প্রত্যাশা ও দাবি ছিল বঙ্গবন্ধু ঐদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দিবেন। সেদিন সমগ্র জাতি সকল অবস্থায় প্রস্তুত ছিল। স্বাধীনদেশের প্রতাকাও উড়ানো হয়ে গেছে। কেন জানি আমার মনে হয় বা হয়েছে, সেদিন যদি সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধু দিতেন, তাহলে ৩০ লক্ষ লোক শহিদ হতোনা, মা-বোনদের সম্ভ্রম হারাতে হতো না। তথাকথিত পাকিস্তানিরা পালানোরও সুযোগ পেতো না। এটা আমার ধারণা। অমূলক চিন্তার আতিশয্য- হয়ত বা, কিন্তু বাস্তবতার বিষয়টি সে সময়ের প্রেক্ষাপটে ক্ষেত্রটি তেমনভাবেই প্রস্তুত ছিল না।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্রম ধাপ ‘স’ বর্ণের মধ্যে অন্তর্নিহিত অভিব্যক্তিতে শক্তিধর হয়ে পথপরিক্রমায় ক্ষেত্ররচিত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান হওয়ার পর ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম একটি বীজ রোপিত হয়েছিল বাংলাভাষার রাষ্ট্রভাষার দাবিতে। তখন থেকে পূর্ববাংলার অধিবাসীরা ‘স্বাধিকার’ আন্দোলন শুরু করে। অর্থাৎ ‘স্ব+অধিকার’। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্বপক্ষে রায় আদায় করে ১৯৫৪ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে। নীতিগতভাবে বাংলাভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা কাগজে-কলমে স্বীকৃতি দিলেও চারিত্রিক চালচিত্রটা পূর্বের ধ্যানধারণার আদলেই চলল। এই পরিক্রমায় পূর্ববাংলার জনগণ বুঝে গেল ‘স্বাধিকার’ তারা দিবে না। সুতরাং ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ৬-দফা পেশ করে জানিয়ে দিলেন- স্বাধিকার নয় আমরা ‘স্বায়ত্তশাসন’ চাই। অর্থাৎ আমাদের শাসন বা পরিচালনার ভার আমরাই পরিচালিত করব। তখন পাকিস্তান আয়ুবী সামরিক শাসন চলছে। শেষ পর্যন্ত আয়ুবের পর ইয়াহিয়ার আগমন এবং ৭০-এর নির্বাচন, আওয়ামী লীগ তথা বাঙালির নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের মাধ্যমে পশ্চিমা শাসকদের জানিয়ে দেয়া হলো- আমরা ‘স্বাধীনতা’ চাই। স্বাধিকার-স্বায়ত্তশাসন-স্বাধীনতা অর্থাৎ ‘স’ বর্ণের মাধ্যমে বাঙালি একই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়ে নেতা ৭ মার্চ ঘোষণা দিলেন-
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
তাহলে ৭ মার্চ-এর এ ঘোষণার পর স্বাধীনতা ঘোষণা বাকী রইল কোথায় ? এ ক্ষেত্রে আমার ভাবনাটি কি অবান্তর ? যদি ৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে সাংবিধানিকভাবে মেনে নেয়া যেত তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি বলয়ে অপ্রয়োজনীয় অমূলক বালখিল্য বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ থাকত না।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে সকল রাজনৈতিক দলের জন্ম ঘটেছে, সবই অবৈধ সন্তানতূল্য। জাসদ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি ইত্যাদি তাদের জন্মেতিহাস তা-ই প্রমাণ করে। এনিয়ে বেশি লেখার ইচ্ছা নেই। যাদের জন্মগ্রহণটাই বিতর্কিত ও অবৈধ তা তো স্পষ্ট। তারা ‘জয়বাংলা’ উচ্চারণ করে না, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানে না, তারা প্রকারন্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানে না। তারা একবার পতাকা পাল্টাতে চায়, জাতীয় সঙ্গীত পাল্টাতে চায়। তারা বাংলা ভাষা- বঙ্গসংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তারা কারা ? তারা কি স্বাধীনতা সার্বভৌম বাংলাদেশে বাস করার অধিকার রাখে ?
কেন আমি ৭ মার্চকে স্বাধীনতা ঘোষণার তারিখ হিসেবে মেনে নিতে চাই, এ প্রসঙ্গে কিছু কথা।
৭ মার্চ ১৯৭১-এর বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রেক্ষাপট :
১ মার্চ ১৯৭১, সোমবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বললেন যে, শুধু সংখ্যালঘিষ্ঠ দলের সেন্টিমেন্টের জন্য পরিষদ অধিবেশন স্থগিত রাখা হয়েছে । আমরা তা নীরবে সহ্য করতে পারি না ।
বঙ্গবন্ধু ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারাদেশে সর্বাত্মক হরতাল পালনের আহ্বান জানান। সর্বাত্মক হরতাল পালনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে ৭ মার্চ ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।
বঙ্গবন্ধু বললেন- আমরা গণতান্ত্রিক দল এবং আমরা গণতান্ত্রিক পন্থায় বিশ্বাসী এবং শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব। হিংসাত্মক পন্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন ।
৩ মার্চ ১৯৭১, বুধবার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
এক পর্যায় বলেন-
‘গণতান্ত্রিক নিয়মে প্রণীত এক শাসনতন্ত্র যদি না চান,
আপনাদের শাসনতন্ত্র আপনারা রচনা করুন, বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র আমরাই রচনা করিব।'
মুহুর্মুহু ‘জয় বাংলা' স্লোগানে মুখরিত পল্টনের বিশাল জনসমুদ্র আর বসন্তের বৈকালিক সূর্যকে সাক্ষী রেখে বঙ্গবন্ধু দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন-
‘প্রস্তুত-আমরা প্রস্তুত। দানবের সঙ্গে সংগ্রামের জন্য যে কোন পরিণতিকে মাথা পাতিয়া বরণের জন্য আমরা প্রস্তুত। তেইশ বছর ধরিয়া রক্ত দিয়া আসিয়াছি, প্রয়োজনবোধে বুকের রক্তের গঙ্গা বহাইয়া দিব। তবু সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে দাঁড়াইয়াও বাংলার বীর শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করিব না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যথাভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন-
‘হয়ত’ ইহাই আপনাদের সামনে আমার শেষ ভাষণ। আগামী রবিবার ৭ মার্চ রমনা রেইসকোর্সে আমার বক্তৃতা করার কথা। কিন্তু কে জানে, সে সুযোগ আমাকে নাও দেওয়া হইতে পারে। তাই, আজ আপনাদের কাছে আর আপনাদের মাধ্যমে বাংলার জনগণের কাছে আমি বলিয়া যাইতেছি, আমি যদি নাও থাকি আন্দোলন যেন না থামে।'

৭ মার্চ ১৯৭১, রবিবার।
ঢাকা রমনা রেইসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ।
সমাবেশে আগত পুরনারী, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, কচি-কিশোর, তরুণ- যুবক, পরিণত শ্রমিক-কৃষক-সর্বস্তরের জনতা।
বঙ্গবন্ধু বক্তৃতামঞ্চে এলেন বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে। মঞ্চে উঠেই সরাসরি বক্তৃতা শুরু করলেন। ১৯ মিনিট ভাষণ দিলেন এবং ভাষণ সমাপ্ত করে সরাসরি মঞ্চ থেকে নেমে ধানম-ি ৩২নং নিজ বাসভবনে চলে যান। সমাবেশে বক্তৃতা করতে দাঁড়িয়ে প্রথমই ব্যথিত স্বরে বঙ্গবন্ধু জনতার উদ্দেশ্যে বলেন-
ভাইয়েরা আমার; দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হইয়াছি। আপনারা সবই জানেন, সবই বোঝেন ।
কী অন্যায় আমরা করেছিলাম?
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে, আমরা শাসনতন্ত্র তৈরি করব, দেশকে সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলব, মানুষ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধিকার পাবে।... কিন্তু আবার ষড়যন্ত্র ।
দোষ কী আমাদের?
দোষী ভুট্টো, অথচ দোষারূপ করা হলো আমার উপর, বাংলার মানুষের উপর।
প্রশ্ন করেন-কী পেলাম?
পেলাম গুলি, নির্যাতন-মৃত্যুর পরোয়ানা।
সাবধান করে দিয়ে বললেন- আর একটিও গুলি চালাবেন না ।
শর্ত দিলেন-
১ . সামরিক আইন মার্শাল ল ‘উইথড্র করতে হবে।
২. সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারেকে ফেরত নিতে হবে।
২ এর পাতার বাকি অংশ
৩. যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে।
৪. জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারপর বিবেচনা করে দেখব আমরা এসেম্বলিতে (২৫ মার্চ আহূত) বসতে পারব কি পারব না।
জানিয়ে দিলেন- আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।
বললেন-
১. সাতকোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।
২. আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবা না।
চূড়ান্ত নির্দেশনা-
১. প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল।
২. তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।
৩. প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল।
সর্বশেষ ঘোষণা-
মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এদেশের
মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জয় বাংলা।
৭ মার্চের ভাষণের মূল্যায়ন
১. এ পর্যন্ত বিশ্বনেতাদের শ্রেষ্ঠ ভাষণসমূহের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ১৯৭১ সালের ভাষণ অন্যতম। ইউনেসকো এ ভাষণকে আন্তর্জাতিক অনন্য ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২. বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ফলেই আমেরিকা থেকে প্রকাশিত বিশ্বের বহুল জনপ্রিয় সাপ্তাহিক নিউজউইক পত্রিকা ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল সংখ্যার প্রচ্ছদে বঙ্গবন্ধুর একটি আকর্ষণীয় ছবি, ছবির পেছনে স্বাধীন বাংলার পতাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ অভিধায় ভূষিত করে একটি দীর্ঘ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
৩. ৭ মার্চের ভাষণের ভাষা বিচিত্রধর্মী এবং সাবলীল। প্রমিত বাংলা, চলিত বাংলা ভাষা ও ফরিদপুর-গোপালগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার মিশ্রণ ছিল উল্লেখ করার মতো। মাতৃভাষা তথা আঞ্চলিক ভাষা হলো একজন মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো স্বাভাবিক। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষা লাভে সচেতনভাবে প্রমিত ভাষা ব্যবহার করলেও সে ব্যক্তিটি যখন অকৃত্রিম সরলতায় আবেগ ও উত্তেজনায় আপ্লুত হয়ে পড়েন, তখন তাঁর ভাষা হয়ে যায় বন্যার জল স্রোতের মতো বা নদীর জলের প্রবাহের মতো স্বত:স্ফূর্ত। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষা ছিল তদ্রূপ। তা ব্যাকরণসিদ্ধ নয়, কিন্তু সময়ের দাবিতে ওজস্বী ও শক্তিশালী।
৪. ভাষণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে রাষ্ট্রশক্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে।
৫. ৭ মার্চের ভাষণ একটি মহাকাব্য এবং এই মহাকাব্যের কবি বঙ্গবন্ধু। মহাকাব্যের মতো এই কবিতার পরিধি বিস্তৃত নয়। কিন্তু বক্তব্যে, ভাবে ও ব্যঞ্জনায় মহাকাব্যের চাইতে বড়ো এবং বিস্তৃত।
৬. ভাষণটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করা। এই ভাষণটির মধ্যে যে সুদূরপ্রসারী একাধিক রাজনৈতিক দর্শনের সমন্বয় ঘটেছিল, তা পরে বিশ্লেষণ করে অনেকে উপলব্ধি করেছেন।
৭. ভাষণটি জনতার হৃদয়ে যেন আকাশ স্পর্শ করার আনন্দে দোলা দিয়ে গেল। সাজানো গোছানো নির্ভুল ছন্দোবদ্ধ, প্রাঞ্জল উদ্দীপনাময় ভাষণ।
শ্রেষ্ঠ চারটি ভাষণের তুলনা : সময়-শব্দ-শ্রোতা
ক্রমিক ভাষণ ব্যয়িত সময় শব্দ শ্রোতা-সংখ্যা (আনুমানিক)
১ গেটিসবার্গ এড্রেস(১৮৬৩) ২ মিঃ ২৭২ ১৫,০০০-২০,০০০
২ উই শ্যাল সাইট অন দি বিচেস (১৯৪০) ১২.১৬ মি: ৩৭৬৮ ৬০০ (কমন্সসভা)
৩ এ ট্রাইস্ট উইথ ডেস্টিনি (১৯৪৭) ৫.০৯ মিঃ ৭৫৫ ৫০০ (সংবিধান পরিষদ)
৪ আই হ্যাভ এ ড্রিম (১৯৬৩) ১৭ মি: ১৬৬৬ ২,০০,০০০ (দুই লাখ)
৫ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১) ১৯ মিঃ ১১০৭ ১০,০০,০০০  (দশ লাখ)

সূত্র : বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বকালীন শ্রেষ্ঠত্ব : একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ-জালাল ফিরোজ
‘বহু বছর হলো ১৯৭১-এর ৭ মার্চ অতিবাহিত হয়েছে । এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে এখনও বঙ্গবন্ধুর সেই বক্তৃতা যখন শোনা যায় শ্রোতার প্রতিটি লোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়, আবেগে উদ্বেলিত হয় মন এবং প্রবল শক্তিতে জেগে ওঠে সব চেতনা। কথামালার এই অবিনশ্বরতা আর কোনো বক্তৃতায় রয়েছে বলে জানা নেই । বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের বক্তৃতা আমাদের অমূল্য উত্তরাধিকার, যার গৌরব অনুভূত হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ।’
                                -হাসনাত আবদুল হাই
৭ মার্চের ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চালিকাশক্তি । এই ভাষণ বাংলাদেশের চিরকালের রক্ষাকবচ ও প্রাণশক্তি। এ ভাষণে বাংলাদেশ-বাংলাভাষা-বাঙলা সংস্কৃতি-বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং বঙ্গবন্ধু একাকার ও একই ঐক্যসূত্রে বাঁধা, যার মূলমন্ত্রটি হলো-“জয় বাংলা”।
২০২৪-এ দাঁড়িয়ে আমার কেবলই মনে হয় ৭ মার্চই বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। আমি তো ৫৪-এর নির্বাচন দেখেছি, ৬২-এর শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন দেখেছি। আমি তখন কলেজের ছাত্র। ৬৬ এর ছয় দফা ঘোষণা শুনেছি, আমি অনার্সের ছাত্র। ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান দেখেছি, আমি তখন কলেজের শিক্ষক। ৭০-এর নির্বাচন ও ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেছি। আমি তো কলেজের শিক্ষক ও মুক্তিযুদ্ধের অংশী ? মনে দ্বিধা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্দালিভ রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft