শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
২৫ মার্চে কুমিল্লায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনারা
আবুল কাশেম হৃদয়
প্রকাশ: সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪, ১২:৪৫ এএম আপডেট: ২৫.০৩.২০২৪ ১:১৩ এএম |

  ২৫ মার্চে কুমিল্লায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনারা
আজ ২৫ মার্চ সেই কালো রাত। ১৯৭১ সালের এই রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী মানব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম দু’টি সামরিক অভিযান চালিয়েছিল। একটি ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ আরেকটি কুমিল্লায় ‘অপারেশন কিল অ্যান্ড বার্ণ। দুটি অভিযানে তারা চালিয়েছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। সে দিন আট ধরনের লোকদের হত্যার লক্ষ্য নিয়ে কুমিল্লার মাঠে নেমেছিল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। কুমিল্লা সেনানিবাসের ১৪ ডিভিশনের প্রধান কার্যালয়ে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে এ অপারেশনের নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন কিল এন্ড বার্ন’। এটি ছিল কুমিল্লা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য পাকিস্তানিদের নীলনকশা। সেই নীলনকশা অনুযায়ি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ২৫ মার্চ রাতে হামলে পড়ে কুমিল্লা টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, কুমিল্লা পুলিশ লাইন, রামমালা রোডে অবস্থিত আনসার প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, কুমিল্লা সার্কিট হাউস, পুলিশ সুপারের বাসভবন এবং প্রভাবশালী দুই ছাত্র নেতার বাসায়।
৭২ ঘন্টা কারফিউ দিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে ১২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রাইফেলের পাকিস্তানি মেজর ইফতেখার হায়দার শাহর [ডাক নাম ইফতি] নেতৃত্বে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করে প্রথমেই টেলিফোন এক্সচেঞ্জ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হামলে পড়ে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে। আগে থেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা কুমিল্লার বীর পুলিশ সদস্যদের উপর চালায় বর্বর হামলা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পুলিশ লাইনে ঢুকেই পুলিশ বাহিনীর উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। পুলিশ বাহিনীও তাঁদের সাধারণ অস্ত্র দিয়ে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। কিন্তু আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ভোরের দিকে পাকিস্তানি সেনারা পুলিশ লাইন দখল করে নেয় এবং এ সময় অসংখ্য পুলিশ শহীদ হন। এ সংঘর্ষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য হতাহত হয়।

অপর দিকে ভোর সাড়ে ৪ টায় পাকিস্তানি পদাতিক বাহিনীর আরেকটি দল কুমিল্লা শহরের রামমালা রোডে অবস্থিত আনসার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে (বর্তমানে বাংলাদেশ সার্ভে ইন্সটিটিউট) হামলা চালায়। তখন সেখানে পুরাতন ভবনে তিন শতাধিক আনসার-মুজাহিদ প্রশিক্ষণার্থী সদস্য ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমন্ত ঐ আনসারদের উপর পাকিস্তানি সেনারা পাখি মারার মতো গুলি করা শুরু করে। ঘুমের মধ্যেই অনেকে মারা যান। গুলির শব্দে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। কিছু আনসার সদস্য দৌঁড়ে পালিয়ে যায়- কিছু ধরা পড়েন। সেখানে সিড়ির কক্ষে এবং মেঝেতে পড়ে থাকে নিহত আনসারদের মৃতদেহ। পড়ে তাদের পুকুর পাড়ে মাটি চাপা দেয়া হয়। আনসার ক্যাম্পে হামলার সময় পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে নিহত হন নাম না জানা এক দরবেশও। তাকে কারফিউর পর স্থানীয়রা প্রাণী সম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একটি নালার পাশে মাটি চাপা দেন। আনসার ক্যাম্প থেকে যাদের আটক করা হয় তাদেরকে পরে নেয়া হয় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
  ২৫ মার্চে কুমিল্লায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনারা কুমিল্লা পুলিশ লাইনে এবং কুমিল্লা আনসার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হানা দেয় কুমিল্লা সার্কিট হাউসে এবং কুমিল্লা পুলিশ সুপারের বাসভবনে। পাকিস্তানি মেজর আগা ও ক্যাপ্টেন বোখারী কুমিল্লা সার্কিট হাউস থেকে জেলা প্রশাসক এ কে এম সামছুল হক খানকে এবং সকাল ৭টায় সার্কিট হাউসের পাশেই পুলিশ সুপারের বাসা থেকে পুলিশ সুপার খন্দকার কবির উদ্দিনকে ধরে নিয়ে সার্কিট হাউসেরই একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ২৯ মার্চ তাদের কুমিল্লা সেনানিবাসের এমআর চৌধুরী গ্রাউন্ডের পাশে বাঙালি সেনাদের সাথে হত্যা করে। পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর বর্বর সদস্যরা এ সময়েই কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁওয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শিবনারায়ণ দাশের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তাঁকে না পেয়ে তার বাবা সতীশ চন্দ্র দাশকে ধরে নিয়ে যায়। একই সময়ে শহরের দিগম্বরীতলা জগন্নাথ মন্দিরের সাথের নিজের বাসা থেকে পাকিস্তানী সেনারা ধরে নিয়ে যায় ছাত্র ইউনিয়নের ক্রীড়া সম্পাদক প্রিয়লাল ঘোষকে। এর মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী কুমিল্লা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
কুমিল্লা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কুমিল্লা থেকে অসংখ্য মুক্তিকামী বাঙালিকে ধরে নিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসে নির্মমভাবে হত্যা করে। এদের মধ্যে ছিলেন ভাষা সংগ্রামের রুপকার ধীরেন্দ্র নাথ দত্তও। সে সাথে পাকিস্তানি সেনারা কুমিল্লা সেনা নিবাসের ১৭ জন বাঙালি অফিসার এবং অন্যান্য র‌্যাঙ্কের ৯১৫ জনকে হত্যা করে।
পাকিস্তানী ৫৩ ব্রিগেড গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান লে. কর্ণেল ইয়াকুব মালিকের নির্দেশে সেনানিবাসে নারকীয় এই গণহত্যা যারা চালিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঞ্জাবি কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল খিজির হায়াত খান, ব্রিগেডিয়ার আসলাম, ১৪ এফএফআর ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার শাহপুর খান, অর্টিলারীর লেফটেন্যান্ট মীর, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল বাকি, মেজর সুলতান আহমেদ, সিকিউরিটি বিভাগের মেজর সেলিম, মেজর মোস্তফা, মেজর সিদ্দিকী, মেজর মোহাম্মদ ইয়াসিন খোকা, মেজর আবদুল করিম, মেজর মুজাফফর হাসান গার্দিজি, ৯ ডিভিশনের এসএসও মেজর বশির, মেজর রাঠোর, মেজর ধর, মেজর নুসা, মেজর খালেদ, মেজর আজাদ, ক্যাপ্টেন ওবায়দুর রহমান, সুবেদার মুস্তফা খান, ক্যাপ্টেন জাহিদ জামান ও ক্যাপ্টেন কবির, ক্যাপ্টেন জাবেদ ইকবাল,  ক্যাপ্টেন আগা বোখারী, ক্যাপ্টেন বোখারী, ক্যাপ্টেন সারওয়ার, ক্যাপ্টেন জিয়া, ৩৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন গোনদেজ ও সুবেদার মেজর ফয়েজ সুলতান, ক্যান্টনমেন্টে মুজাহিদ বাহিনীর অফিসার ক্যাপ্টেন মন্তাজ, ক্যাপ্টেন জং, সুবেদার আরব খান, সুবেদার আশরাফ, হাবিলদার বশির উদ্দিন এবং আরো অনেক পাকিস্তানি নরপিশাচ সেনা কর্মকর্তা নারকীয় উল্লাসে মেতে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাকিস্তানি সুবেদার মেজর ফয়েজ সুলতান পাগলা কুকুরের মত ক্যান্টনমেন্টের যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায় এবং বাঙালি দেখলেই গুলি করে হত্যা করে।

‘অপারেশন কিল এন্ড বার্ন’:
বাঙালি সেনাকর্মকর্তাদের মিথ্যা কথা বলে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে সরিয়ে দিয়ে কুমিল্লা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য নীলনকশা তৈরি করে পাকিস্তানি সেনারা। সম্ভাব্য অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন কিল এন্ড বার্ন’। যাদের বিরুদ্ধে এ অপারেশন চালানো হবে তাঁর একটি লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা হয়। ক. ইষ্ট বেঙ্গল বাহিনীর লোক, পুলিশ এবং আধা সামরিক আনসার ও মুজাহিদ বাহিনীর লোক। খ. হিন্দু সম্প্রদায়- কেবল হিন্দু পুরুষদের হত্যা। হিন্দু নারী ও শিশুদেরকে ছেড়ে  দেয়া। গ. আওয়ামী লীগের লোক-নি¤œতম পদ থেকে নেতৃস্থানীয় পদ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের লোক, বিশেষ করে এই দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য স্বেচ্ছাসেবকগণ। ঘ. কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত তরুণের দল ও কিছু সংখ্যক ছাত্রী, যাঁরা ছিলেন অধিকতর সংগ্রাম মনোভাবাপন্ন। ঙ. অধ্যাপক ও শিক্ষকদের মত বাঙালি বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, যাঁরা সংগ্রামী বলে সেনাবাহিনী কর্তৃক যে কোন সময় নিন্দিত ছিল। কুমিল্লা সেনানিবাসের ১৪ নং ডিভিশনের প্রধান কার্যালয়ে এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।

কুমিল্লা পুলিশ লাইনে হামলা:
তখন সম্ভাব্য সময় রাত ১০টা। কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে ১২ তম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রাইফেলের মেজর ইফতেখার হায়দার শাহর [ডাক নাম ইফতি] নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘কিল এন্ড বার্ন’ নামের অপারেশন চালাতে সেনানিবাস ছেড়ে কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করে। সেই সাথে প্রবেশ করে পাকিস্তানি পদাতিক ও গোলন্দাজ ইউনিটগুলো। শহর তখন অন্ধকার। জারি হয়ে আছে ৭২ ঘন্টার কারফিউ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণের খবর পেয়ে কুমিল্লার শাসনগাছায় সড়কের উপর গাছ ফেলে, গাড়ি এলামেলো করে রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন শাসনগাছা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। টমসন ব্রিজে কাঁটা তারের বান্ডেল এবং বাস ট্রাক রাস্তার উপর ফেলে রেখে প্রতিরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। ছাত্রনেতৃবৃন্দ একটি জিপে করে সুয়াগাজি এলাকায় গিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম সড়কের একটি ব্রিজ ভাঙ্গার চেষ্টা করে।
এরই মধ্যে সাবেক মন্ত্রী হাজী রমিজ উদ্দিন কুমিল্লা টাউন হলে ফোন করে আবদুল আওয়ালের সাথে কথা বলার সময় তাঁদের ফোন কেটে যায়। খবর পাওয়া গেল কুমিল্লা টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ততক্ষণে দখলে নিয়ে নিয়েছে পাকিস্তানি সেনারা।
কুমিল্লা টাউন হল থেকে অধ্যাপক খোরশেদ আলম, আবদুর রউফ বের হয়ে ঝাউতলায় বাসার দিকে যাওয়ার সময়ই শুনতে পান গুলির শব্দ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর ইফতেখার হায়দার শাহের নেতৃত্বে পুলিশ লাইনে হামলা শুরু হয়ে যায় ততক্ষণে। পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন অসুস্থ পুলিশ সদস্য অস্বাভাবিক গোলাগুলির শব্দে বাইরে আসেন এবং বারান্দা থেকে কি ঘটেছে তা বোঝার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু বোঝার আগেই মেশিনগানের এক ঝাঁক গুলিতে এই অসুস্থ পুলিশটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রাত ১২ টায় গুলিবর্ষণ বন্ধ করে পাকিস্তানি সৈন্যরা পৈশাচিক উল্লাসে পুলিশ লাইনে ঢুকে পড়ে। অসুস্থ ও আহত পুলিশটি ওখানে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে দেখে একজন পাকিস্তানি সেনা বেয়োনেট চার্জ করে তার জীবন স্তব্ধ করে দেয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পুলিশ লাইনে ঢুকেই পুলিশ বাহিনীর উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। পুলিশ বাহিনীও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যায় তাঁদের সাধারণ অস্ত্র দিয়ে। কিন্তু আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি। ভোরের দিকে পাকিস্তানি সেনারা পুলিশ লাইন দখল করে নেয় এবং এ সময় অসংখ্য পুলিশ শহীদ হন। এ সংঘর্ষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য হতাহত হয়।  কুমিল্লা পুলিশ লাইনে হামলায় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করে কেউ কেউ। মুক্তিযুদ্ধের পর পুলিশ লাইনের আর আর আই আবদুস সাত্তার ও কনস্টেবল মোহাম্মদ খানের বিরুদ্ধেও ২টি হত্যা মামলা হওয়ায় সে ধারনা আরো বদ্ধমূল হয়।

আনসার ক্যাম্পে হামলা:
ভোর তখন সম্ভাব্য সময় সাড়ে ৪টা। পাকিস্তানি পদাতিক বাহিনীর আরেকটি দল কুমিল্লা শহরের রামমালা রোডে আনসার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হামলা চালায়। তখন সেখানে প্রশিক্ষণার্থী তিন শতাধিক আনসার-মুজাহিদ সদস্য ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমন্ত ঐ আনসারদের উপর পাকিস্তানি সেনারা পাখি মারার মতো গুলি করা শুরু করে। ঘুমের মধ্যেই অনেকে মারা যান। গুলির শব্দে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা হতবিহ্বল। প্রত্যক্ষদর্শী শফিউল আহম্মেদ বাবুল মুক্তিযোদ্ধা ও পরে কমা-ার জেলা মুক্তিযোদ্ধা  সংসদ কিছু আনসার সদস্য দৌঁড়ে পালাতে লাগলো, কিছু ধরা পড়ল। যাঁরা ধরা পড়ল তাঁদেরকে  সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হল, কেউ কেউ পালিয়ে গেলো। আর যাঁরা শহীদ হলেন তাদের মাটি চাপা দেয়া হলো।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে আটক:
২৬ মার্চ ভোরবেলা নির্মল বাতাস বইছিল। নিস্তব্ধতা ভাঙ্গছিল পাখপাখালির কলতানে। আতঙ্ক দিকজুড়ে। পাকিস্তানি মেজর আগা ও ক্যাপ্টেন বোখারী কুমিল্লা সার্কিট হাউস থেকে জেলা প্রশাসক এ কে এম সামছুল হক খানকে ধরে নিয়ে যান। একই সময়ে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁওয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শিবনারায়ণ দাশের [যাঁর পরিকল্পনা ও অঙ্কনে সবুজ পটভূমিকার ওপর লাল বৃত্ত মাঝখানে সোনালি মানচিত্রসংবলিত স্বাধীন বাংলার পতাকার, রূপকার] বাড়িতে হানা দেয় পাকিস্তানি সেনারা। এ সময় তাঁকে না পেয়ে তার বাবা সতীশ চন্দ্র দাশকে ধরে নিয়ে যায়। একই সময়ে শহরের দিগম্বরীতলা জগন্নাথ মন্দিরের সাথের নিজের বাসা থেকে পাকিস্তানী সেনারা ধরে নিয়ে যায় ছাত্র ইউনিয়নের ক্রীড়া সম্পাদক প্রিয়লাল ঘোষকে। সকাল ৭টায় সার্কিট হাউসের পাশেই পুলিশ সুপারের বাসা থেকে পুলিশ সুপার খন্দকার কবির উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায় মেজর আগা বোখারী ও ক্যাপ্টেন বোখারীর সেনা গ্রুপটি। পরে তাঁদের কুমিল্লা সেনানিবাসে হত্যা করা হয়। [জেলা প্রশাসক এ কে এম সামছুল হক খানের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বকাল অর্নার বোর্ডে ৩০ মার্চ ১৯৭১ পর্যন্ত লেখা আছে।]
রাতের কিল এন্ড বার্ন অপারেশনে লক্ষ্যস্থল ছিল ৫টি। প্রথমটি কুমিল্লা টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, এর সাথে সাথে কুমিল্লা পুলিশ লাইন, দ্বিতীয়টি রামমালা রোডের আনসার ক্যাম্প, আর কুমিল্লা সার্কিট হাউস,পুলিশ সুপারের বাসা।
পুলিশের যারা শহীদ হয়েছেন:
১. খন্দকার কবির উদ্দীন আহাম্মদ, পুলিশ সুপার, ২. আর, আই, এ, বি, এম আবদুল হালিম, ৩. ইন্সপেক্টর প্রফুল্ল চন্দ্র দে, কোর্ট পরিদর্শক, কুমিল্লা, ৪. ইন্সপেক্টর যোগেন্দ্র লাল চাকমা, সিআই মুরাদনগর,কুমিল্লা, ৫. আর্মড সুবেদার রুহুল আমিন, ৬.দারোগা অর্জুন চন্দ্র দে, ৭.এস, আই, মীর ফজলে আলী, ৮. এ, এস, আই ১১৭৪ গঙ্গারাম চৌঃ, ৯. এ,এস,আই ১৭২ ছলিমুদ্দীন, ১০.এস, এস, আই, ৭২৪ মুনছুর আঃ চৌঃ, ১১.সুবেদার জোয়াদ আলী খান, ১২.হাবিলদার সুলতান খান, ১৩.    হাবিলদার মুন্সী মিয়া, ১৪. নায়েক ১১২৭ মোবারক আলী, ১৫. কনষ্টেবল ৮৮৮ প্রতাপ চন্দ্র সিংহ, ১৬. কনষ্টেবল ৫ মোজাফফর ইসলাম, ১৭. কনষ্টেবল ২১৬ গোবিন্দ চন্দ্র দে, ১৮. কনষ্টেবল ৯৪৮ ফজলুল করিম, ১৯. কনষ্টেবল ৭৩ প্রকাশ চন্দ্র বড়–য়া, ২০. কনষ্টেবল ২৩০ ফারুক মিয়া, ২১.কনষ্টেবল ৮০১ জহিরুল হক, ২২.কনষ্টেবল নুরুল ইসলাম, ২৩.    কনষ্টেবল ৭৮৭ পরেশ চন্দ্র চক্রবর্তী, ২৪. কনষ্টেবল ৮৮৯ আবুল হাসিম, ২৫. কনষ্টেবল ৯৬৪ ওবায়দুল হক, ২৬. কনষ্টেবল ১০৫৫ আঃ লতিফ হাওলাদার, ২৭. কনষ্টেবল ৬৫৩ নাজির আহামদ, ২৫.কনষ্টেবল ৭৭৮ আঃ খালেক, ২৬. কনষ্টেবল লাল মিয়া, ২৭. কনষ্টেবল জয়নাল আবেদীন, ২৮. কনষ্টেবল সাইদুল হক, ২৯. কনষ্টেবল মীর ইসহাক হোসেন, ৩০. কনষ্টেবল আবদুল হক, ৩১.কনষ্টেবল কুটি চান্দ মিয়া, ৩২.কনষ্টেবল আহসান উল্লাহ, ৩৩.কনষ্টেবল আনসার আলী, ৩৪. কনষ্টেবল মজিবুর রহমান, ৩৫.কনষ্টেবল মোতাহার আলী, ৩৬.কনষ্টেবল খাজা সাইফুর রহমান, ৩৭.কনষ্টেবল আবদুস শহীদ, ৩৮. কনষ্টেবল মো: রফিক, ৩৯.কনষ্টেবল রহিম উদ্দিন।

কুমিল্লা সেনানিবাসের এমআর চৌধুরী গ্রাউন্ডের পাশের বধ্যভূমি
১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের সমস্ত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যবৃন্দ এবং সেনা নিবাসে অবস্থিত বেসামরিক ব্যক্তিবর্গকে পাক হানাদার বাহিনী অন্তরীন করে। এছাড়াও কুমিল্লা সেনানিবাসের পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং কুমিল্লা শহর থেকে অনেক ব্যক্তিবর্গকে কুমিল্লা সেনানিবাসে ধরে আনা হয়। ২৯ মার্চ শুরু হয় এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। সবচেয়ে বড় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় কুমিল্লা সেনানিবাসের স্কোয়াশ রুমে। আশপাশের এলাকায়। ২৪জন সামরিক অফিসার ৩০০জন পদপদবী সেনাসদস্যসহ সেনানিবাসে অবস্থানকারী প্রায় ৫০০জন ব্যক্তিকে সেদিন বর্বর পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। বিভিন্ন জায়গায় হত্যাকা- চালিয়ে আরো অনেক মৃতদেহ বর্তমান এই অবস্থানে গণকবর দেয়। পরবর্তীতে এখানে সমাহিত শহীদের কিছু সংখ্যক মৃতদেহ সনাক্ত করে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে সেনানিবাসের বিভিন্নস্থানে ও কুমিল্লা শহরে পুনরায় সমাহিত করা হয়। অন্যান্য অনেক শহীদের মৃতদেহ বর্তমান অবস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছে। [এই গ্রাউন্ডের পূর্ব নাম ছিল ফতেহ মোহাম্মদ স্টেডিয়াম]
১.    লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ. কে. এম জাহাঙ্গীর এএমসি অধিনায়ক ৪০ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স, ২.লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ারুল ইসলাম (আইএসআই), ৩.মেজর হাসিব (এসএসও), ৪.মেজর এম.এ খালেক, ৫.মেজর মহিদুজ্জামান (ওসি, এফআইইউ), ৬.ক্যাপ্টেন বদিউল আলম, উপ অধিনায়ক, ৪০ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স, ৭.ক্যাপ্টেন এ.এম.হুদা (কিউএম.৪০ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স), ৮.ক্যাপ্টেন বদরুল আলম, ৯.ক্যাপ্টেন আনোয়ারুল আলম, ১০.ক্যাপ্টেন এ. কে. এম ফারুক, ১১.ক্যাপ্টেন নুরুল ইসলাম, ১২.লেফটেন্যান্ট এনামুল হক (এএমসি), ১৩.লেফটেন্যান্ট নুরুল ইমাম (তুর্কি) এডিসি, ১৪.লেফটেন্যান্ট সালাহ উদ্দিন, ১৫.লেফটেন্যান্ট আতিকুর রহমান, ১৬. ২ লেফটেন্যান্ট হারুনুর রশিদ, ১৭.জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা এ. কে. এম শামসুল হক, ১৮. পুলিশ সুপার কুমিল্লা, খন্দকার কবির উদ্দিন আহমেদ, ১৯.অনারারি লেফটেন্যান্ট আবদুল লতিফ, ২০. সুবেদার আব্দুল গফুর চৌধুরী, ২১.সুবেদার নাদের হোসেন, ২২. সুবেদার শহীদুল আলম, ২৩.নায়েব সুবেদার আবদুল জলিল, ২৪.নায়েব সুবেদার বরকত আহম্মেদ, ২৫.নায়েব সুবেদার আলী আহম্মেদ, ২৬. নায়েব সুবেদার নূর মোহাম্মদ, ২৭. নায়েব সুবেদার আবদুস সাত্তার, ২৮.নায়েব সুবেদার হাবিবুর রহমান, ২৯.নায়েব সুবেদার মো: জুনাব আলী, ৩০.হাবিলদার ক্লার্ক আবদুল জব্বার, ৩১.হাবিলদার আবদুর রব, ৩২.হাবিলদার ফরহাদ, ৩৩.হাবিলদার এ আর চৌধুরী, ৩৪.হাবিলদার এমএইচ রহমান, ৩৫.হাবিলদার মনিরুল হক, ৩৬. হাবিলদার গোলাম মর্তূজা, ৩৭. হাবিলদার আবদুর রশিদ, ৩৮.হাবিলদার রফিক উদ্দিন, ৩৯.হাবিলদার মনজুর মোরশেদ, ৪০.হাবিলদার রোকন উদ্দিন, ৪১. হাবিলদার আবু তাহের, ৪২. হাবিলদার আবদুল মালেক, ৪৩. হাবিলদার মতিউর রহমান-১, ৪৪. হাবিলদার আবদুল আজিজ, ৪৫. হাবিলদার আসগর আলী, ৪৬. হাবিলদার মো: রঙ্গু মিয়া, ৪৭. হাবিলদার তাইছুর রহমান, ৪৮.নায়েক (ক্লাক) মো: আবদুর রহমান, ৪৯. নায়েক আবদুর রব, ৫০. নায়েক লুৎফর রহমান, ৫১.নায়েক মাহতাব উদ্দিন, ৫২. নায়েক সিরাজুল ইসলাম, ৫৩. নায়েক আবদুল মতিন, ৫৪. নায়েক আবদুর রব ভূঁইয়া, ৫৫. নায়েক এমএস হক, ৫৬. নায়েক মঞ্জুর আহম্মেদ, ৫৭. নায়েক আবদুল বাতেন, ৫৮. ল্যান্স নায়েক জামাল মিয়া, ৫৯.ল্যান্স নায়েক খলিলুর রহমান, ৬০. ল্যান্স নায়েক সামছুল হক, ৬১.ল্যান্স নায়েক আবুল কাশেম, ৬২. ল্যান্স নায়েক সিরাজুল হক, ৬৩.ল্যান্স নায়েক সফি উল্লাহ, ৬৪. ল্যান্স নায়েক আবদুল হাদি, ৬৫. সিপাহী আইয়ূব আলী, ৬৬.সিপাহী আবদুল জব্বার, ৬৭. সিপাহী রমিজ উদ্দিন, ৬৮. সিকিউ এমএইচ আয়ুব আলী, ৬৯. সিপাহী হাবিবুর রহমান, ৭০. সিপাহী আবদুল হান্নান, ৭১.সিপাহী আমিন উল্লাহ, ৭২. সিপাহী মকবুল আহমেদ, ৭৩. সিপাহী মাহফুজ মিয়া, ৭৪.সিপাহী বাচ্চু মিয়া, ৭৫. সিএফএন আবদুর রশিদ, ৭৬. সিএফএন খোরশেদ আলম মৃধা, ৭৭. সিএফএন ফজলুল হক, ৭৮.সিএফএন আবদুল গনি, ৭৯. সিএফএন আওলাদ হোসেন, ৮০. সিএফএন মোয়াজ্জেম হোসেন, ৮১. উপাধ্যক্ষ, ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল মো: আবুল কাশেম, ৮২. সিনিয়র শিক্ষক (ইংরেজি) আবদুল জব্বার), ৮৩.সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা) মো: তাজুল ইসলাম, ৮৪.সিনিয়র শিক্ষক (বিজ্ঞান) মো: শরফুদ্দীন, ৮৫.সিনিয়র শিক্ষক (ইংরেজি) মো: মোসলেহ উদ্দিন, ৮৬.সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা) মো: আমির হোসেন, ৮৭. সিনিয়র শিক্ষক (বিজ্ঞান) মো: আবদুল মালেক, ৮৮.সিনিয়র শিক্ষক (বিজ্ঞান) মো: মফি উদ্দীন ভূঁইয়া, ৮৯.সিনিয়র শিক্ষক (ধর্ম) মো: আজিজুল হক, ৯০. সহকারী শিক্ষক মো: খায়রুল বাসার, ৯১. উর্দু শিক্ষক ও ব্রিগেড মসজিদের ইমাম মো: আব্দুল মান্নান, ৯২. হাফেজ আবদুস সোবাহান, ৯৩.পোষ্ট মাস্টার মো: ওমর আলী, ৯৪.চৌকিদার মো: কাওসার আলী, ৯৫. এমইএস কর্মচারী ছায়েদ আলী, ৯৬.সুলতান আহম্মেদ, নিশ্চিন্তপুর, ৯৭. মকবুল হোসেন, নিশ্চিন্তপুর, ৯৮.মকসুদ আলী, নিশ্চিন্তপুর, ৯৯.আবদুল হামিদ, সাহেবনগর, ১০০.সরাফত আলী, সাহেবনগর, ১০১.রেশমত আলী, সাহেবনগর, ১০২.আবদুল গনি, সাহেবনগর, ১০৩.নুরুল ইসলাম, সাহেবনগর।

কুমিল্লায় সেনানিবাসের ১১৮ ফিল্ড ওয়ার্কশপ এলাকার গণকবর
কুমিল্লা সেনানিবাসের ১১৮ ফিল্ড ওয়ার্কশপ এলাকায় রয়েছে একটি গণকবর। সেখানে নির্মাণ করা হয় একটি শহীদ মিনার। ৫৩জন শহীদের নাম উল্লেখ করে আরো অজানা অসংখ্য শহীদের স্মৃতিধরে রাখা হয়েছে শহীদ মিনারের মাধ্যমে।
১.ক্যাপ্টেন আয়ুব আলী বিইএম, ২.লেফটেন্যান্ট সালাহ উদ্দিন, ৩.হাফেজ আবদুস সোবহান, ৪.সুবেদার নাদের হোসেন, ৫.সুবেদার শহীদুল আলম, ৬.নায়েব সুবেদার বরকত হোসেন, ৭. নায়েব সুবেদার আলী আহমেদ, ৮.নায়েব সুবেদার নূর হোসেন, ৯.নায়েব সুবেদার আবদুস সাত্তার, ১০.নায়েব সুবেদার হাবিবুর রহমান, ১১.নায়েব সুবেদার জুনাব আলী, ১২. সকিউএম এইচ আয়ুব আলী, ১৩. হাবিলদার এআর চৌধুরী, ১৪.হাবিলদার এমএইচ রহমান, ১৫.হাবিলদার মনিরুল হক, ১৬. হাবিলদার গোলাম মোরতুজা, ১৭.হাবিলদার আবদুর রশিদ, ১৮.হাবিলদার রফিক উদ্দিন, ১৯.হাবিলদার মনজুর মোর্শেদ, ২০.হাবিলদার রোকন উদ্দিন, ২১.হাবিলদার আবদুল মালেক, ২২.হাবিলদার আবু তাহের, ২৩. হাবিলদার মতিউর রহমান, ২৪.হাবিলদার আবদুল আজিজ, ২৫.হাবিলদার আসগর আলী, ২৬.হাবিলদার মো: রঙ্গু মিয়া, ২৭. হাবিলদার তাইছুর রহমান, ২৮.নায়েক মাহতাব উদ্দিন, ২৯.নায়েক সিরাজুল ইসলাম, ৩০.নায়েক আবদুল মতিন, ৩১. নায়েক আবদুর রব ভূইয়া, ৩২. নায়েক এমএস হক, ৩৩.নায়েক মনজুর আহম্মেদ, ৩৪. নায়েক আবদুল বাতেন, ৩৫.ল্যান্স নায়েক জামাল মিয়া, ৩৬. ল্যান্স নায়েক খলিলুর রহমান, ৩৭. ল্যান্স নায়েক শামছুল হক, ৩৮. ল্যান্স নায়েক আবুল কাসেম, ৩৯. ল্যান্স নায়েক সিরাজুল হক, ৪০. ল্যান্স নায়েক সফিউল্লাহ, ৪১. ল্যান্স নায়েক আবদুল হাদি, ৪২. সিএফএন আবদুর রশিদ, ৪৩. সিএফএন খোরশেদ আলম মৃধা, ৪৪. সিএফএন ফজলুল হক, ৪৫.সিএফএন আবদুল গনি, ৪৬. সিএফএন আওলাদ হোসেন, ৪৭.সিএফএন মোয়াজ্জেম হোসেন, ৪৮. সিপাহী হাবিবুর রহমান, ৪৯.সিপাহী আবদুল হান্নান, ৫০. সিপাহী আমিন উল্লাহ, ৫১. সিপাহী মকবুল আহমেদ, ৫২. সিপাহী মাহফুজ মিয়া, ৫৩. সিপাহী বাচ্চু মিয়া
এবং নাম না জানা বীর সৈনিকেরা।
লেখক: সম্পাদক, দৈনিক কুমিল্লার কাগজ












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft