
আনন্দ-উল্লাস ও প্রাণের উচ্ছ্বাসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘প্রথম বাংলা সম্মিলন’ শিরোনামে শনিবার (১১মার্চ) সকালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় বেলুন উড়িয়ে এ আয়োজনের শুভ সূচনা করা হয়। সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উচ্চমাধ্যমিক শাখায় গিয়ে শেষ হয়।
পরে ধর্মপুরস্থ ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি শাখায় অনুষ্ঠিত হয় মূল আয়োজন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিনভর আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ মনোমুগ্ধকর নানা আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বাংলা সম্মিলন। অনুষ্ঠানে ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বর্ষ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত বাংলা বিভাগের প্রায় ৫শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে কলেজ ক্যাম্পাস।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে সকাল ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, শোক প্রস্তাব পাঠ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনের পর আমন্ত্রিত অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানান ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রথম বাংলা সম্মিলন উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ হাসান ইমাম মজুমদার ফটিক। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাংলা বিভাগের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। মরণোত্তর সম্মাননা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবদুর রউফের সম্মাননা গ্রহণ করেন শরীফুল ইসলাম। সম্মাননা প্রদান করেন দৈনিক কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সৈয়দ আহমাদ বাকেরের সম্মাননা গ্রহণ করেন তাঁর স্ত্রী মোহসিনা বাকের। সম্মাননা তুলে দেন রীতা চক্রবর্তী। বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আহমেদের সম্মাননা গ্রহণ করেন জাকিয়া সুলতানা আইরিন। সম্মাননা তুলে দেন মোঃ মিজানুর রহমান সোহেল।
বাংলা বিভাগের কৃতী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের (যাঁরা এখনো জীবিত আছেন) সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন একেএম ফরহাদ উদ্দিন ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল চন্দ্র দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আলী হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মমিন সরকার।
এরপর ভিক্টোরিয়া কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচ (১৯৬৩-৬৪) এর শিক্ষার্থী অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক, হাসিনা ওহাবকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অধ্যাপক হাসান ইমাম মুজমদার ফটিক অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিককে এবং শান্তিরঞ্জন ভৌমিক হাসিনা ওহাবকে সম্মাননা তুলে দেন।

কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষক প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর সংবর্ধনা স্মারক গ্রহণ করেন সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান, প্রথম বাংলা সম্মিলন উদযাপন কমিটির নির্বাহী সভাপতি প্রফেসর শান্তিরঞ্জন ভৌমিক।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিলো র্যাফেল ড্র ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন পপলু ইকরাম, অনন্যা, প্রিয়াঙ্কা রায়। অনুষ্ঠানে গানের তালে-তালে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন প্রথম বাংলা সম্মিলনে অংশ নেওয়া ভিক্টোরিয়ার বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দলীয় পরিবেশনের পাশাপাশি একক সঙ্গীতও পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ হাসান ইমাম মজুমদার ফটিককে সভাপতি, সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়কে সাধারণ সম্পাদক ও রীতা চক্রচবর্তীকে কোষাধ্যক্ষ করে ভিক্টোরিয়া কলেজ বাংলা বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন গঠন করা হয়।