
স্টাফ
রিপোর্টার।। কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউটে আহসানুল কবীরের ইতিহাস ভিত্তিক
গবেষণা গ্রন্থ ‘কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’র পাঠ-প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠিত
হয়েছে। গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর আলোকিত বজ্রপুর’র উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আলোকিত বজ্রপুরের মুখ্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাসুদ রানা
চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর
আমীর আলী চৌধুরী, প্রফেসর ড. জিএম মনিরুজ্জামান, অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ,
কবি ও ছড়াকার জহিরুল হক দুলাল, প্রফেসর শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য, গবেষক
এডভোকেট গোলাম ফারুক, দৈনিক কুমিল্লার কাগজের সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক
গবেষক আবুল কাশেম হৃদয়, সংগঠক বদরুল হুদা জেনু, এমদাদুল হক এমদু, ডা. ইকবাল
আনোয়ার, সেভ দ্যা ডিল্ড্রেন সংস্থাটির কর্মকর্তা কাজী এমদাদুল হক, লেখক
ইমরান মাহফুজ, লেখক দিলতাজ রহমান, কবি ও সাহিত্যিক আহাম্মেদ কবীর,
আবৃত্তিকার কাজী মাহতাব সুমন, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীউল হক
সোহাগ, কুমিল্লা বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন,
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নূর,
ভিক্টোরিয়া কলজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মেহেরুন্নেছা, অধ্যাপক শাহীন
শাহ, গল্পকার কাজী মোহাম্মদ আলমগীর।
‘কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ বইয়ের লেখক আহসানুল কবীরও তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
বক্তারা আহসানুল কবীরের ইতিহাস ভিত্তিক গবেষণা গ্রন্থ ‘কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ বই সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য রেখেছেন।
অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব রফিকুল ইসলাম সোহেল।
আলোকিত
বজ্রপুর’র উপস্থিত সদস্যগণ সালাম প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি
ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী রুবেল কুদ্দুছ।
নীল-সাদা
আকাশ, ভোরের আবছা কুয়াশা, শ্বেতশুভ্র কাশফুলের দোলা, বাতাসে শিউলী ফুলের
ঘ্রাণ। শরতের আগমনে প্রকৃতির এ শোভনীয় রূপের মোহনীয় সজ্জার মধ্য দিয়ে
শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ মহা ষষ্ঠী।

মহাষষ্ঠী
মানে সপরিবারে উমার পিতৃগৃহে আগমনের দিন। পঞ্চিকার তিথি অনুযায়ী আজ শনিবার
(১ অক্টোবর) রাত্রী ৯টা ৬ মিনিটের মধ্যে দেবী দুর্গার মহাষষ্ঠ্যাদি,
কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠী বিহীত পূজা সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য
দিয়ে কুমিল্লার ৭৯৩টি পূজা মন্ডপে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার
আনুষ্ঠানিকতা।
ঢাক-ঢোল আর কাঁসার বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্যদিয়ে
শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। আজ পবিত্র ষষ্ঠি তিথিতে অশ্বমেথ
বৃক্ষের পূজার মাধ্যমে আবাহন করা হবে দেবী দুর্গার। দুষ্টের বিনাশ ও
সৃষ্টের পালন করতে বছর ঘুরে আবারো দুর্গতিনাশিনী দশভুজা ‘মা দুর্গা’ এসেছেন
আমাদের মাঝে। তিথি অনুসারে এবার দেবী দুর্গা মর্ত্যলোকে গজে (হাতি) আগমন
করবেন। পাঁচদিনের অর্চনা শেষে দোলায় (নৌকা) মর্তলোক থেকে স্বামীগৃহ কৈলাশে
ফিরেন যাবেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়
দুর্গা পূজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি পূজা মন্ডপে
নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে জেলা পুলিশ।
প্রতিটি পূজা
মন্ডপে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অধিক আনসার, পুলিশের পাশাপাশি টহল থাকবে
র্যাব ও সাদা পোশাকে থাকবে গোয়েন্দা পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপগুলোতে
থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল টিম। এবছর বাধ্যতা মূলক সিসি ক্যামেরার
নিয়ন্ত্রণে থাকছে প্রতিটি পূজামণ্ডপ।
এর আগে শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর)
সন্ধ্যায় সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার ৭৯৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গা দেবীর বোধন
অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে
দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হয়।
মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত
হয়।
পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে
তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের
হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার
আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে
পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়।
এদিকে,
গত বছর ঘটে যাওয়া কুমিল্লার ঘটনাকে ভুলে গিয়ে এবার জাকজমপূর্ণ পরিবেশে
আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে কুমিল্লার প্রতিটি পূজা মন্ডপে শারদীয় উৎসব
অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান
(বিপিএম-বার)।
কুমিল্লা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে
বলেন, আনন্দ উৎসব ভাগাভাগির পাশাপাশি পূজা মন্ডপে স্ব-স্ব নিরাপত্তা
নিশ্চিত করতে প্রতিটি পূজা মন্ডপ কমিটির প্রতি অনুরোধ করছি। প্রশাসন
সার্বক্ষনিক আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন কিন্তু কোন ক্রমেই যেন আপনার
মন্ডপটি খালি না থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।