
নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অভিযোগ- পাল্টা অভিযোগের
মধ্যেই জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান তিন মেয়র প্রার্থী।
নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর এক প্রান্ত থেকে অপর
প্রান্তে ছুটে চলছেন তারা। ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতিও।
কিন্তু এই উৎসবমুখর প্রচারণার মাঝেই প্রার্থীরা একে-অপরের বিরুদ্ধে আনছেন
নানা অভিযোগ।
বুধবার (১ জুন) কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় গণসংযোগ ও
স্টেশন রোড এলাকায় ব্যবসায়ীদের সাথে পথসভা করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। এসময় তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের
আগের মেয়র (মনিরুল হক সাক্কু) ও তার পরিষদের অনেকেই দুর্নীতির সাথে যুক্ত
ছিলো। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে দুর্নীতির সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা
হবে। সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। এসময় তিনি
মেয়র নির্বাচিত হলে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিএনপির
বহিস্কৃত নেতা ও ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন
কায়সারও এদিন স্টেশন রোড, রেইসকোর্স ও বাগিচাগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায়
গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন, অনেক জায়গায় আমার কর্মীরা বাঁধার সম্মুখীন
হচ্ছেন। বিষয়টি জানানোর জন্য আমি রিটার্নিং অফিসারকে ফোন করেছিলাম, তাকে
পাইনাই। প্রচারণায় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। বিট
পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমাদের কর্মীদেরকে হয়রানী করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের
চিহ্নিত লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিগত দিনে যারা
সিটি কর্পোরেশনে ছিলো তারা কোনো উন্নয়ন করে নাই। নগরীতে যানজট, জলজট রয়েই
গেছে। তারা কেবল বর্ষা আসলে ‘ক্রাশ প্রোগ্রামের’ নামে টাকা লুটপাট করেছেন।
কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
অপরদিকে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার
অভিযোগ আনলেও আরেক মেয়র প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু
বলেছেন, এখনো নির্বাচনের লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড কুমিল্লায় আছে।
বুধবার নগরীর কোটবাড়ি বিশ^রোড, বাতাবাড়ি ও এর আশাপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।
মনিরুল
হক সাক্কু বলেন, আমি কাউকে দোষারোপ করবো না। কুমিল্লায় নির্বাচনী মাঠের
পরিবেশ এখনো সুশৃঙ্খল আছে। আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছ থেকে
ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দোষ-অভিযোগ থাকবেই। আমি চেষ্টা করেছি কুমিল্লার উন্নয়ন করতে। কুমিল্লায় উন্নয়ন হয়েছে।
প্রচার মাইকম্যানকে মারধরের অভিযোগ:
কুসিক
নির্বাচনে প্রচারণা চালানোকালে প্রচার মাইকম্যানকে মারধরের অভিযোগ এনেছেন
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা
বরবার একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। সাক্কুর অভিযোগ, বুধবার দুপুর
আড়াইটার দিকে নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের ঝাউতলা এলাকায় ঘোড়া প্রতীকের প্রচার
মাইকম্যানকে মারধর করেছে এক যুবক। প্রীতম নামে অভিযুক্ত ওই যুবক ১০ নং
ওয়ার্ডে ঘোড়া প্রতীকের মাইকিং না করতে হুমকি দেন বলেও জানান তিনি।
কুসিক
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানিয়েছেন, অভিযোগ
পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার নির্বাচনী পরিবেশ
শান্তিপূর্ণ আছে বলেও জানান তিনি।
আগামী ৫ জুন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে প্রচার
প্রচারণা। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জনসহ তিনপদে মোট ১৪৭ জন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।