ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ঈদগাহ ও কবরস্থানের পাল্টাপাল্টি  কমিটি নিয়ে উত্তেজনা
Published : Wednesday, 1 June, 2022 at 12:00 AM
প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন--
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
কুমিল্লার দেবিদ্বারে রসুলপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও কবরস্থানের পাল্টাপাল্টি কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এর প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রসুলপুর বাজারে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য মো.আনিছুর রহমান, কমিটির সভাপতি এসএম নিজাম, সেক্রেটারি আবুল বাসার।
ইউপি সদস্য মো. আনিছুর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় স্থানীয় কয়েকজন ঈদগাহ ও কবরস্থানের কমিটি করার প্রস্তাব দেন, ওই প্রস্তাবে এলাকার সকলে সম্মতি প্রকাশ করে ঈদের দুইদিন পর ঈদগাহ মাঠে উপস্থিত হয়ে কমিটি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই মাঠে এলাকাবাসীদেরকেও উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু যারা কমিটির প্রস্তাব করেছে তাদের মধ্যে সাবেক পুলিশ সদস্য ওহাব মিয়া, হান্নান হাজী, জাহাঙ্গীর আলমসহ একটি পক্ষ উপস্থিত হয়নি। পরে তাদের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এলাকাবাসীর সর্বসম্মতিক্রমে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে প্রধান উপদেষ্টা করে স্থানীয় বাসিন্দা এসএম নিজামকে সভাপতি ও আবুল বাসারকে সেক্রেটারি করে ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে জাহাঙ্গীর, হাজী হান্নান ও ওহাব মিয়াকে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে কমিটি ঘোষণার কয়েকদিন পর জাহাঙ্গীর আলম ও হাজী হান্নান ও ওহাব মিয়ার নেতৃত্বে একটি পক্ষ ঈদগাহ ও কবরস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেন। তাদের ওই পাল্টা কমিটি ঘোষণার পর এলাকাবাসীর দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বক্তারা আরও বলেন, ঈদগাহ ও কবরস্থান নিয়ে যারা এলাকায় বিভাজন ও বিশৃংখলা করতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
এসএম নিজাম বলেন, তাঁরাই কমিটির করার জন্য জনসম্মুখে প্রস্তাব দিয়ে তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করেন কিন্তু ওই তারিখে পুরো গ্রামবাসী উপস্থিত হলেও তারা কয়েকজন উপস্থিত না হয়ে পাল্টা একটি পকেট কমিটি ঘোষণা করেন, এটি কিসের লক্ষণ? জনগণের কাছে প্রশ্ন আমার। তাঁরা কি ঈদগাহ ও কবরস্থানে উন্নয়ন চায় ? তাঁরা এর আগের কমিটিতে থাকাবস্থায় ঈদগাহ ও কবরস্থানের উন্নয়ন ফান্ডের হিসাব দেননি। কালেকশানের লক্ষ লক্ষ টাকার কোন হদিস নেই। আমরা অচিরেই এ অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমরা গণস্বাক্ষর নিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও ইউএনও কার্যালয়ে স্বারকলিপি দেওয়া হবে। মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসীরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচীতে অংশ নেন।
এ ব্যাপারে ওহাব মিয়া বলেন, আমি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে এলাকাবাসীর অনুরোধে কমিটিতে আসি। কমিটিতে আসার পর প্রথমে ৪৩ হাজার ৭৫৫ টাকার ফান্ড নিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে ঈদগাহ ও কবরস্থানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কমিটি করার জন্য আমরাই প্রস্তাব করি কিন্তু ঈদের দিন ঈদগাহে দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি হওয়ায় আমরা মারামারি বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোন কমিটি হবে বলে জানিয়ে দেই। তারপরও তারা কমিটি ঘোষণা করে। পরে আমরাও স্থানীয় সংসদ সদস্যের মতামত নিয়ে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করি। তিনি আরও বলেন, যারা মানববন্ধনে উপস্থিত হয়েছে এখানে ঈদগাহে নামাজ পড়ে এমন কেউ নেই, তারা অন্য পাড়া থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন হুমায়ুন কবির, হান্নান সরকার, মিন্টু মেম্বার, ফজর আলী মেম্বার, তাজুল ইসলাম, আলম সরকার, মফিজুল ইসলাম, জামাল মাস্টারসহ শত শত এলাকাবাসী।