সিইসিকে কাছে পেয়ে শঙ্কার কথা জানালেন প্রার্থীরা
Published : Monday, 30 May, 2022 at 12:00 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে সিইসিকে কাছে পেয়ে নানা
শঙ্কার কথা তুলে ধরেন প্রার্থীরা। ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী গোলাম
কিবরিয়া তার ওয়ার্ড এলাকার বিট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ
তুলে তার প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী আবুল হোসেন
ছোট বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বহিরাগতদের নিয়ে এলাকায় মহড়া
দিচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
২নং ওয়ার্ডের
কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদুর রহমান মাসুদও তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর
বিরুদ্ধে বহিরাগতদের নিয়ে আনাগোনার বিষয়ে অভিযোগ তুলেন। ২নং ওয়ার্ডের অপর
প্রার্থী নাহিদা আক্তার অভিযোগ করেন তার সমর্থকদের হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে
এবং তার বাসার সামনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সমর্থকরা বারবার মহড়া
দিচ্ছেন। ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী সরকার মাহমুদ জাভেদ তার ওয়ার্ডের
কেন্দ্রে বুথ বাড়ানোর পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি তুলে
ধরেন। ৪নং ওয়ার্ডের প্রার্থী কবির আহমেদ তার ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বি
প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ তুলেন। ১৪ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী
সেলিম খান তার বাড়ি সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান। এ ছাড়াও
তিনি অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা তার বাড়ির কাজের মহিলাকে আসতে দিচ্ছেন
না। ৬ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মোশারফ হোসেন পুলিশী হয়রানির অভিযোগ তুলেন।
সভায়
নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের প্রতিনিধি আতিক উল্যাহ খোকন নির্বাচন
কমিশনারের কাছে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন চেয়ে বলেন, ইভিএম-এ
ফিঙ্গারপ্রিন্টের বিষয়ে কমিশনকে নজর দিতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে অনেক সময়
আঙ্গুলের ছাপ মিলে না, তাই এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে বিকল্প পদ্ধতি
ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। এছাড়া ভোটারদের কেন্দ্র পর্যন্ত আসতে প্রার্থীরা
যেন পরিবহন ব্যবহার করতে পারে সে অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আতিক উল্যাহ খোকন আরো বলেন, প্রার্থীরা যেন একজনের দোষ আরেক জনের উপর চাপাতে না পারে সে ব্যাপারে নজর দেয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।
মেয়র
প্রার্র্থী মনিরুল হক সাক্কু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নির্বাচনের ভোট দিন
পর্যন্ত যেন বজায় তাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের
কাছে দাবি জানান। এছাড়া যাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট না মিলে তাদের বিষয়ে
নির্বাচন কমিশনকে নজর দেয়া হয় যেন সে অনুরোধ করেন।
এদিকে নিজাম উদ্দিন
কায়সারের বক্তব্য রাখাকে কেন্দ্র করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনেই
হট্টগোল শুরু করেন প্রার্থীরা। নিজাম উদ্দিন বিগত নির্বাচনে অনিয়মের কথা
উল্লেখ করে বক্তব্য রাখতে চাইলে প্রতিবাদ করেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত কয়েকজন
আওয়ামীলীগ প্রার্থী। পরে জেলা প্রশাসকের আহ্বানে ১০ মিনিট পর হট্টগোল থামে।
নিজাম উদ্দিন দাবি করেন, নির্বাচনকালীন সময়ে কোন গায়েবি মামলা দেয়া যাবে
না। আদালতের সুনির্দিষ্ট গ্রেপ্তারি পারোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা
যাবে না। মন্ত্রী বা কোন এমপির প্রেশারে যেন নির্বাচন প্রভাবিত না হয় সে
দিকে নজর দিতেও অনুরোধ জানান তিনি। নিজাম উদ্দিন দাবি জানান, নির্বাচন
কালীন সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারে তত্ত্বাবধানে দুইটি টীম যেন কুমিল্লায়
অবস্থান নেন।
প্রার্থীদের এসব অভিযোগ-অনুযোগের প্রেক্ষিতে কমিশনের উপর
আস্থা রাখা আহবান জানিয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটকেন্দ্র থাকবে
আমাদের নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। প্রতিটি কেন্দ্র সিসি ক্যামেরার
আওতাভুক্ত থাকবে। এছাড়া কেন্দ্রের বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
দায়িত্ব পালন করবেন। সেখানেও যদি কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন পুলিশ
প্রশাসনকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইভিএমে যেহেতু ভোট হবে; সেক্ষেত্রে মাসল পাওয়ার খুব বেশি কার্যকর হওয়ার
সম্ভাবনা নাই। সুতরাং সহিংসতা করে লাভ নেই। কুমিল্লায় ভোট সুষ্ঠু হবে।