ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা
নাঙ্গলকোটে হামলায় ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু
Published : Saturday, 11 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 11.12.2021 12:32:36 AM
নাঙ্গলকোটে হামলায় ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুনিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মাধবপুর গ্রামে নির্বাচনী পথসভা চলাকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় শাকিল হোসেন (২২) নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ কর্মী মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে তার উপর হামলা চালানো হয়। মারা যাওয়া শকিল হোসেন পেরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম এ হামিদের অনুসারী বলে জানা গেছে। আগামী ৫ জানুয়ারি এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শাকিলের বাড়ি উপজেলার আশারকোটা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। আবদুল্লাহ নামের তাঁর এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে শাকিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় ফুলকলি বেকারিতে কাজ করতেন। নির্বাচন উপলক্ষে বাড়ি এসে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। শাকিল পেরিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটির সদস্য ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাত আটটার দিকে মাধবপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হামিদের নির্বাচনী পথসভা চলছিল। এসময় দুর্বত্তরা দেশি অস্ত্র ও হকিস্টিক নিয়ে পথসভায় হামলা চালান। এতে শাকিল হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। শাকিলকে প্রথমে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে প্রথমে রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। পরে লাশ রাতেই গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শাকিলের চাচাতো ভাই মো. রুবেল সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় শাকিল উপজেলার পানকরা গ্রামে তাঁর খালার জানাযা দিয়ে মাধবপুর এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামেন। এরপর নির্বাচনী পথসভায় ছিলেন। তখন সেখানে অতর্কিতভাবে হামলা চালানো হয়। বাবুল গাজী ও তাঁর ভাই শাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে হামলা করা হয়। শাকিল হামলার সময় ঘটনাস্থলে দাঁড়ানো ছিলেন। তাঁর মাথায়, বুকে ও পিঠে হকিস্টিক ও দেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর শাকিল মাধবপুর খালে পড়ে যান। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত শাকিল ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রুবেল। কুমিল্লার কাগজকে তিনি জানান, ‘শাকিল পেরিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে তিনি চাকরি নিয়ে ঢাকায় চলে যান।’ হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির দাবি জানান তিনি।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে শাকিল নামের একজন মারা গেছেন। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।’