
মো. জাকির হোসেন ||
বাংলাদেশ
রাষ্ট্রের জন্মদাতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সর্বশেষ ধাপে উপনীত
বাঙালি জাতি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর হায়েনাদের
চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে বিজয় অর্জনের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণ
সমাগত। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যে বিজয় উৎসবের সূত্রপাত ঘটে সেই থেকে
নির্ধারিত তারিখে এ উৎসবটি পালিত হচ্ছে এবং অনাগত ভবিষ্যতেও এটি পালিত হবে।
অপরিসীম ত্যাগ ও উৎসর্গের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন
যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ, আর বাঙালির জন্য বিশেষ অর্থবহ।
বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি
বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে। বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী বিশেষ সুসংবাদ নিয়ে এসেছে
বাঙালির জন্য। স্বাধীন বাংলাদেশের পথচলার একেবারে শুরুতে বিদ্বেষবশত
তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পিতার মতো মমতা নিয়ে বাঙালি ও বাংলাদেশকে
ভালোবেসেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার
অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রত গ্রহণ করেছেন। তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা পাওয়া
দেশকে ঝুড়িভর্তি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ
এখন জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মধ্যম আয়ের দেশ। ২০২৬ সালে
এলডিসি থেকে বের হয়ে ভারত, চীন, মালয়েশিয়ার মতো উন্নয়নশীল দেশের কাতারে
যাবে বাংলাদেশ। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে সমীহ আর রোল মডেলের নাম এখন বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বপ্নের সারথি হয়ে বাঙালির স্বপ্ন এখন আকাশছোঁয়া। ২০৩১
সাল নাগাদ উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ, আর ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া।
বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বে গত ১০ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ
উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৬ শতাংশের বেশি। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে
তা ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। করোনা মহামারির মধ্যেও গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে
৫.৪ শতাংশ। করোনার আগে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সময়কালে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে
গড়ে ৭.৪ শতাংশ। ভারতে এ হার ছিল ৬.৭ শতাংশ। আর মালয়েশিয়ায় এ সময়কালে
প্রবৃদ্ধি হয় ৪.৯ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাবে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে
দুই হাজার ৫৫৪ ডলার। অর্থনীতির আকার এখন ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আমাদের
স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। আজকের এই উন্নয়ন আর
অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা সবুজ-শ্যামল বাংলাকে শ্মশানে পরিণত
করেছিল। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর ঘোষণা করেন, মাটি ও
মানুষকে কাজে লাগিয়ে তিনি শ্মশান বাংলাকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করবেন।
সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও তাদের জীবনমানের উন্নতির জন্য জাতির জনক
আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তাঁরই কন্যার নেতৃত্বে আজ সেই সংগ্রামের সুফল
ভোগ করছে জাতি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাপক সামাজিক
অগ্রগতি হয়েছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য—এমডিজির অনেক সূচক অর্জন করে
বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কাড়ে বাংলাদেশ। এমডিজিতে ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের
হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হারে কমাতে সক্ষম হয়। এমডিজি
অর্জনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ। এসডিজি অর্জনের কিছু
ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের লক্ষণীয় অগ্রগতি রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর
তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশে দরিদ্র লোকের হার ছিল ৮২ শতাংশ।
সর্বশেষ প্রকাশিত খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার
দাঁড়ায় ২৪.৩ শতাংশ। এর ভিত্তিতে ২০১৯ সালে দারিদ্র্যের প্রাক্কলিত হার ২০.৫
শতাংশ। কভিডের কারণে গত বছর দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়। সাম্প্রতিক
সময়ে বিভিন্ন জরিপ বলছে, এর অনেকটাই এখন পুনরুদ্ধার হয়েছে। ২০৪১ সালে উন্নত
রাষ্ট্রে উত্তরণ কি শুধুই বাগাড়ম্বর? মোটেও নয়। গত বছর বিখ্যাত সাময়িকী
‘দি ইকোনমিস্ট’ ৬৬টি সবল অর্থনীতির তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে বাংলাদেশের
অবস্থান ছিল নবম। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উত্তরণকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন
হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন
পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল আছে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সফল অর্থনীতি
হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে ওয়াল স্ট্রিটের প্রতিবেদনে। ব্রিটেনের
অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ তাদের
‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল-২০২১’ শিরোনামের রিপোর্টে এই পূর্বাভাস দিয়েছে
যে বাংলাদেশ এখন যে ধরনের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত
থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটি হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। যেসব দেশকে
পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ২৫তম অর্থনীতি হবে, তার মধ্যে আছে মালয়েশিয়া,
সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, নরওয়ে, আর্জেন্টিনা,
ইসরায়েল, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, নাইজেরিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন, ইরান ও
তাইওয়ান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সমুদ্র সম্পদের ক্ষুদ্র অংশ মাত্র ব্যবহার
করছে বাংলাদেশ। ব্লু ইকোনমির অপার সম্ভাবনা অব্যবহৃতই রয়ে গেছে। ২০৪১ সালের
মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণে সমুদ্র সম্পদ তথা সুনীল অর্থনীতি এক বিরাট
ভূমিকা রাখবে আশা করা যায়। ধান, সবজি, মাছ, ফল উৎপাদনে বাংলাদেশে রীতিমতো
বিপ্লব হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, নিজস্ব
অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, স্যাটেলাইট, পরমাণু ও সাবমেরিন ক্লাবে
যোগদান, ফ্লাইওভার, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলদেশে টানেল ও
গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব, এলএনজি টার্মিনাল ও
ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের মতো মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাফল্য
এখন বিশ্বের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর কাছে রীতিমতো রহস্য।
অর্থনীতিবিদরা
মনে করেন, উন্নয়নের নতুন স্তরে পৌঁছে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের জন্য
বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণা বলছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা
মেধাবী, পরিশ্রমী, সৎ, প্রভাবশালী ও সফল রাষ্ট্রনায়কদের তালিকার শীর্ষে
অবস্থান করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের নতুন চ্যালেঞ্জগুলো
মোকাবেলা করা সক্ষম হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের
বাংলাদেশ রাষ্ট্র পুনরুদ্ধার ও মেরামতের চ্যালেঞ্জটি উন্নত অর্থনীতির
চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম দুরূহ নয়। ১৯৭৫-এ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও তাঁর
ঘনিষ্ঠ ও যোগ্য সহচর চার জাতীয় নেতাকে হত্যার মাধ্যমে রাষ্ট্রটি বেহাত হয়ে
যায়। রাষ্ট্রের চরিত্রও পাল্টে ফেলা হয়। শুরু হয় পাকিস্তানের প্রক্সি শাসন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে আসার পর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি
বেহাত হওয়া রাষ্ট্র পুনরুদ্ধার ও মেরামত শুরু করেন। প্রায় দেড় দশক ধরে
অবিরাম রাষ্ট্র মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। কিন্তু
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে যখন কিছু মানুষ পরিতাপ করে
বলে, ‘পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ কেন আলাদা হয়ে গেল।’ অবলীলায় এরা যখন বলে,
‘পাকিস্তান-বাংলাদেশ দুটো একই দেশ, দুটোই ভাই ভাই, যে হারুক-জিতুক আমাদের
কোনো সমস্যা নাই।’ কিংবা পাকিস্তানের জার্সি পরে পাকিস্তানের পতাকা হাতে
‘পাকিস্তান পাকিস্তান’ বলে চিৎকার করে, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয়,
তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে রাষ্ট্র মেরামতের এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে।
অসুস্থ মানসিকতার এসব বিশ্বাসঘাতকের জন্ম এই দেশে; কিন্তু ওরা এই দেশি শুধু
কাগজে-কলমে, অন্তরে-আনুগত্যে নয়। এরা এই দেশে জন্মেছে। এই দেশে থাকে, খায়,
পড়াশোনা করে, আয়-রোজগার করে। এ দেশের আলো-বাতাসে, স্নেহ-মমতায় বড় হয়।
কিন্তু কোনো দিন এরা দেশটাকে আপন ভাবেনি। এই বিশ্বাসঘাতকদের চেয়েও বড় ঝুঁকি
হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে রাষ্ট্র বেহাত হওয়ার উপজাত হিসেবে আবির্ভূত একটি
রাজনৈতিক দল। এই দলের নেতারা মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও এরা
মুক্তিযুদ্ধকালীন অন্তর্র্বতী সংবিধান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র মানে না।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানতে অস্বীকার করার
মাধ্যমে এই দল বাংলাদেশের সংবিধানকেও মানে না। বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা
মান্য করা দূরে থাক, এরা বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, মুক্তিযুদ্ধের
প্রাণভোমরা বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান-অস্বীকার করেন। জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধে
সফলতার সঙ্গে মুজিবনগর সরকার পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের
বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এরা খুনিদের লালন করেছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে
মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে অবস্থান নিয়েছে এই
দল। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’র বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ চালু
করেছে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ চালু করেছে।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার বিরুদ্ধে জিয়াকে ঘোষক দাবি করছে, মুজিবনগর
সরকারের বিরুদ্ধে জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করছে, মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাসের বিরুদ্ধে বিকৃত ইতিহাস দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে। লাখো শহীদের
রক্তমূল্য ও কন্যা-জায়া-জননীর সম্ভ্রমের চড়া মূল্যে পাওয়া পতাকাকে
স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে তুলে দিয়ে পতাকা ও
মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করেছে। এই দলের সমর্থক বর্ণচোরা সংবাদমাধ্যম
রয়েছে, এক শ্রেণির নষ্ট বুদ্ধিজীবীও আছে এদের সমর্থনে। বুদ্ধিজীবীরা
দেশে-বিদেশে কাশিমবাজার কুঠিতে বসে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বড়
বেশি তৎপর। বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনেও
প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশি
সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, মিথ্যাচার, অপপ্রচার করতেও
এরা কুণ্ঠিত নয়। এরা ওপরে সুশীল ভেতরে কুটিল। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ
নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে অন্তঃকলহ মারাত্মকভাবে দৃশ্যমান।
১৯৭১-এর
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের পরাজিত করে যে বিজয় অর্জিত হয়েছিল
লাল-সবুজের এ বিজয় উদযাপনে ছিল বেদনার সুর। বিজয়ের যে বাঁধভাঙা উৎসব, যে
উল্লাস তা কোথায় যেন থমকে ছিল। ঠিক উদযাপনটা হচ্ছিল না। জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন কোথায় আছেন তা সঠিক করে তাঁঁর পরিবার,
সহযোদ্ধা, দেশের মানুষ জানতে পারেনি। বিজয়ের পরেও তাই ঠিক উদযাপনটা হচ্ছিল
না। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষাপটে বিজয়ের সুবর্ণ
জয়ন্তীর উদযাপনও দুশ্চিন্তামুক্ত কি?
লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়