
সরকারের রাজস্ব
আয়ের একটি বড় খাত পাসপোর্ট। জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে,
প্রতিদিন গড়ে সারা দেশ থেকে ৩০ হাজার আবেদনকারী আবেদন করেন। তাঁদের কাছ
থেকে গড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে ফি পাওয়া গেলে প্রতি মাসে ২২ কর্মদিবসে ৩০০
কোটি টাকার বেশি পাওয়া যায়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকার রাজস্ব পেয়েছে এক হাজার
৬৯৫ কোটি দুই লাখ ৭৮ হাজার টাকা। বিদেশে বাংলাদেশের জনশক্তির চাহিদা
রয়েছে। বিদেশে গমনেচ্ছুদের ভিড় বাড়ছে পাসপোর্ট অফিসগুলোতে। অথচ পাসপোর্টের
জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি
মাসে ছয় লাখ চাহিদার বিপরীতে চার লাখ পাসপোর্ট দিতে পারছে পাসপোর্ট
অধিদপ্তর। আর এর কারণটি হচ্ছে পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব। প্রাপ্ত তথ্য বলছে,
গত ৪৮ বছরে পাসপোর্ট ও ভিসা ইস্যুর বিষয়ে কাজ বেড়েছে ৩৯৪ গুণ। অফিসের
সংখ্যা বেড়েছে ১৪ গুণ। জনবল বেড়েছে সাত গুণ। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমানে যে জনবল রয়েছে তার
তিন গুণ প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ে লোকবল চেয়েছেন তাঁরা। আশা করছেন শিগগিরই পেয়ে
যাবেন। এখন আবার সবাইকে দেওয়া হচ্ছে অত্যাধুনিক ই-পাসপোর্ট। কিন্তু বিদেশে
অনেক মিশনে ই-পাসপোর্ট সরঞ্জাম বসেনি। ফলে এসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশের
নাগরিকরা ই-পাসপোর্টের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কয়েক বছর আগেও পাসপোর্ট
পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ ছিল। এর জন্য ১৮টি ধাপ পেরোতে
হতো। আবেদনপ্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে গ্রাহককে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির
শিকার হতে হতো বলে অভিযোগ পাওয়া যেত। এখন প্রক্রিয়া অনেক সহজ করা হয়েছে।
আগে পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্যও ছিল লক্ষণীয়। সেটা বন্ধ করতে বেশ
কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো তাদের উপস্থিতি দেখা যায়।
অধিদপ্তরের
কর্মকর্তারাই বলছেন, ফি বাড়লেও ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর পাসপোর্টের চাহিদা
বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আগামী দিনগুলোতে আরো অনেক বেশি রাজস্ব পাওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে এই খাতে। আর সে কারণেই এদিকে নজর দেওয়া দরকার। দেশের ৮৭টি
পাসপোর্ট অফিসে এখন দায়িত্ব পালন করছেন এক হাজার ১৮৪ জন কর্মী। অগ্রাধিকার
ভিত্তিতে এই সংখ্যা বাড়ানো দরকার। একই সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের সংখ্যা
বাড়ানোর বিষয়টিও ভেবে দেখা যেতে পারে। পাসপোর্টের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা
করে দেশের প্রতিটি উপজেলায় অফিস করা গেলে দ্রুত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে
আমরা মনে করি।