
তানভীর দিপু:
কুমিল্লায়
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের
মৃত্যু হয়। তারা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, চৌদ্দগ্রাম এবং চান্দিনার
অধিবাসী; তাদের সবার বয়স পঞ্চাশোর্ধ। এ নিয়ে কুমিল্লা জেলায় করোনায় সর্বমোট
মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯১ জন। মোট প্রাণহানিতে সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৯৬ জন, এরপরই আছে দেবিদ্বার ৩০ জন।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কুমিল্লা
সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় কুমিল্লায় করোনা
ভাইরাস শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৯ শতাংশ। গতকাল আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৭৫
জন। এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ১ শ ৯০ জন। দিন দিন করোনা
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নাই।
কুমিল্লা
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
এলাকাতে সংক্রমনের হার যেমন বেশি তেমনি মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। এপর্যন্ত
কুমিল্লা সিটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৬ জন। এছাড়া বরুড়া
উপজেলায় প্রাণহানির সংখ্যা ১৫, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৫, বুড়িচং ১১, চান্দিনায় ২৪,
চৌদ্দগ্রাম ১৬, সদর দক্ষিণ ৫, আদর্শ সদর ২০, দাউদকান্দি ১, দেবিদ্বার ৩০,
হোমনা ৫, লাকসাম ১৭, মনোহরগঞ্জ ৯, মুরাদনগর ২০, নাঙ্গলকোট ১১, তিতাস ৪,
লালমাই ২ এবং মেঘনা উপজেলায় কোন প্রাণহানি নাই।
এপর্যন্ত কুমিল্লা
জেলায় ৯ হাজার ১ শ ৯০ জন আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৪৫ জন।
সংক্রমণ, শনাক্ত এবং মৃত্যুর হারেও দ্রুত এগুচ্ছে কুমিল্লা। ইতিমধ্যে
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৯টি কঠোর নির্দেশনা দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি
জারি করা হয়েছে। ঘরের বাইরে জন সম্মুখে মাস্ক ব্যবহার, জনসমাগম মিছিল মিটিং
বন্ধ, সকল বিনোদন কেন্দ্র-কমিউনিটি সেন্টার-কোচিং সেন্টার বন্ধ, গণ
পরিবহনে সীমিত যাত্রী পরিহনসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া আছে এই বিজ্ঞপ্তিতে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান
কুমিল্লার কাগজকে জানান, কুমিল্লায় করোনা প্রতিরোধে আরো কঠোর হচ্ছে
প্রশাসন। দ্রুতই এই সংক্রমন কমে আসবে বলে আশা করছি। সরকারের দেয়া ১৮ দফা
নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে স্বাস্থ্যবিভাগ ও জেলা
প্রশাসনের একাধিক দল। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট চলমান আছে।
উচ্চ সংক্রমনের হারে অবস্থান করা ২৯ টি জেলার মধ্যে অবস্থান করছে
কুমিল্লা জেলাও। সংক্রমনের হার বাড়ার সাথে সাথে রোগী বেড়েছে কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড ইউনিটে। গতকাল পাওয়া তথ্য
অনুসারে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটে ১৮টি আইসিইউর একটিও খালি
নেই। সাধারণ ওয়ার্ডেও বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালর কর্তৃপক্ষ বলেছে, হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ, ডাক্তার-নার্সের
কোন অভাব নেই। কিন্তু রোগী বাড়ছে, আইসিইউ খালি নেই।