ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
আজ বেতিয়ারা শহীদ দিবস
Published : Thursday, 11 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 11.11.2021 1:18:49 AM
আজ বেতিয়ারা শহীদ দিবসমজিবুর রহমান বাবলু, চৌদ্দগ্রাম ||
আজ ১১ নভেম্বর বেতিয়ারা শহীদ দিবস। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই দিনে চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী বেতিয়ারা এলাকায় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর ৯ জন বীরযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের এই ইতিহাস কে সমুজ্জল রাখতে প্রতি বছর এদিনটি বেতিয়ারা শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয় ।
বেতিয়ারায় নিহতরা হলেন নিজাম উদ্দিন আজাদ (ছাত্র নেতা) সিরাজুম মনির জাহাঙ্গীর, জহিরুল হক ভূঁইয়া(দুদু মিয়া),মোহাম্মদ সফি উল্যাহ, আওলাদ হেসেন, আবদুল কাইউম, বশিরুল ইসলাম (বশির মাস্টার), শহীদ উল্যাহ সাউদ ও কাদের মিয়া।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জগন্নাথ দিঘি মুক্তাঞ্চল স্মৃতি রক্ষা পরিষদের আহবায়ক জসীম উদ্দিন চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানাগেছে,স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি মন্জুরল আহসান খানসহ যৌথ গেরিলা বাহিনীর ৭৮ জন সদস্য ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। দেশে ফিরে যুদ্ধে অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে এসব গেরিলা যোদ্ধাগণ ভারতের বাইকোয়া বেইজ ক্যাম্প থেকে ১০ নভেম্বর রাত ৮ টায় চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী ভারতের ভৈরব নগর সাব ক্যাম্পে (চৌত্তাখোলা ক্যাম্পের শাখা) পৌঁছেন।
রাত ১২ টায় যৌথ গেরিলা বাহিনীর ৩৮ জনের একটি দল বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অতিক্রমের জন্য এগিয়ে এলে সড়কের অপর (পশ্চিম) পাশে গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা হানাদার বাহিনী অতর্কিতে ব্রাশ ফায়ার করে।এতে ৯ গেরিলা যোদ্ধা ঘটনা স্থলেই শহিদ হন এবং বেশ ক’জন আহত হন। এক সপ্তাহ পর স্থানীয় লোকজন ধান ক্ষেত থেকে শহীদদের গলিত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্বে একটি গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দেয়। ২৮ নভেম্বর চৌদ্দগ্রামের এ জগন্নাথ দীঘি অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়।পরদিন স্থানীয় আ,লীগনেতৃবৃন্দ এবং মুক্তিযোদ্ধাগন গর্ত থেকে লাশগুলো উত্তোলন করে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক মাওলানা  আব্দুল আলীর (মরহুম) মাধ্যমে নামাজে জানাজা দিয়ে মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে দ্বিতীয়বার দাফন  করেন এবং শহীদদের গণকবরের উপর স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করে পার্শ্বেই নির্মান করেন স্মৃতিস্তম্ভ¢।
মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা কালে ৯ শহীদের গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ¢ মহাসড়কের মধ্যে পড়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় লোকজনের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সনের জুনে গণকবরটি মহাসড়কের পূর্ব পাশে স্থানান্তর করা হয়।
বেতিয়ারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি রক্ষা পরিষদেও সভাপতি জিয়াউল হোসেন জিবু এবং জগন্নাথ দিঘী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মমিনুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে জানা যায়-আজকে বেতিয়ারা শহীদ দিবসের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদীতে পু®পস্তবক অর্পণ,দোয়া মাহফিল এবং সহযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা।