২১মাস
বয়সী সন্তানকে পাশে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা রবি আক্তার। রাত দেড়টার
তাঁর ঘুম ভাঙে। ওই সময় দেখতে পান, বিছানায় তাঁর সন্তান নেই। স্বামী ও অন্য
সন্তানরাও ঘুমিয়ে ছিলেন পাশেই। স্বামীর কাছেও সন্তানকে না পেয়ে যান ঘরের
অন্য কক্ষে দেখেন সেখানেও নেই। পরে দরজার দিকে তাকানোয় দেখেন দরজা খোলা।
শুরু হয়ে মা রবির আহাজারি। আহাজারীতে ঘুম ভেঙে যায় বাড়িতে অন্যদেরও। কয়েক
ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন শিশুটির বাবা
মোখলেছুর রহমান। এরপরও বিকাল ৩টার দিকে শিশুটির সন্ধান মেলে বাড়ির একটি
পুকুরে। তবে তবে জীবিত নয়, মৃত অবস্থায়। রাতের আঁধারে ঘর থেকে নিয়ে গিয়ে
শিশুকে মেরে ফেলার এ ঘটনা ঘটেছে দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের
ভৈষরকোট এলাকায়। তবে কে বা কারা মেরেছে পরিবারের কেউ বলতে পারছেন না। এ
ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। শিশুটির নাম মেহেরাব ইসলাম। রাত ১০টার
দিকে তাকে বাড়ির পাশে একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শিশুটির দাদা আবদুল
করিম বলেন, সে হাটতে পাড়ত না, রাতে বুকের দুধ খাওয়ার পর তার মায়ের পাশে
মেহরাব ঘুমিয়ে ছিল, পরিবারের অন্যরাও এক রুমেই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ দেড়টার
দিকে ঘুম ভেঙে দেখেন পাশে মেহরাব নেই। পরে আশ পাশে খোঁজাখুঁজির করে না
পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করি। বিকালে প্রতিবেশী এক মহিলা পুকুরে কি
যেন ভাসতে দেখে সবাইকে খবর দেয়। আমি পুকুরে নেমে দেখি মেহরাবের মৃতদেহ উপুর
হয়ে পড়ে আছে।
শিশুটির ভাবি মরিয়ম আক্তার বলেন, সে নিজে নিজে খাট থেকে
নামতে পারত না, ঘর থেকে কে বা কারা তাকে চুরি করে নিয়ে পুকুরে ফেলে হত্যা
করেছে। তার লাশ যখন তোলা হয় তখন তার পেটে পানি ছিল না, একদম তরতাজা দেহ
ছিল, মনে হচ্ছিল কিছুক্ষণ আগে তাকে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। আমরা
কাউকে সন্দেহ করছি না, আমাদের কোন শত্রুও নেই। একমাত্র আল্লাহ ওপর এর বিচার
ভার ছেড়ে দিলাম।
শিশু মেহরাবের মা রবি আক্তার বলেন, আমি মেহরাবকে
বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ি। মাঝখানে আমার আরও দুই সন্তান ও এক
পাশে তার বাবা ঘুমিয়ে ছিল। রাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙার পর দেখি আমার সন্তান পাশে
নেই। বিকালে পুকুর থেকে তার লাশ তোলা হয়। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি
করছি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম বলেন,
শিশুটির বাবা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পর সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ
পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে
শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ সুরতহাল রিপোর্টে কোন আঘাতের চিহ্ন
পাওয়া যায়নি। শিশুটির পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ
পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে