জলবায়ুপরিবর্তনের ক্ষতিকরপ্রভাব ক্রমেই
স্পষ্টহচ্ছে। বন্যাএখনপ্রতিবছরেরঅনিবার্য চিত্রহয়ে উঠেছে। একবারনয়,
বছরেকয়েকবারকরেডুবছেঅনেকএলাকা। জমিরফসল, পুকুরেরমাছ, গবাদি পশু—সব
কেড়েনিচ্ছে বানেরপানি।
কেড়েনিচ্ছে ঘরবাড়ি, জমিজিরাত। ফলেপ্রতিবছরবহুমানুষনিঃস্ব হচ্ছে। বহুমানুষ দারিদ্র্যসীমারনিচে নেমেযাচ্ছে।
পত্রিকান্তরেপ্রকাশিতখবরেবলাহয়েছে, দেশের ১১ জেলায়বন্যায়আক্রান্তহয়েছেঅন্তত ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জনমানুষ।
আকস্মিক
বন্যায়ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটতলিয়ে গেছে। এ ছাড়াবন্যায়এখনপর্যন্তমারা গেছে
অন্তত ১৮ জন। ৭৭টি উপজেলার ৫৮৪টি ইউনিয়নবন্যারপানিতেপ্লাবিতহয়েছে।
পানিবন্দি হয়েপড়েছেআটলাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবার।
বিদ্যুৎহীনহয়েপড়েছে ১১
লাখগ্রাহক। খোলাআকাশেরনিচেমানবেতরজীবনযাপনকরছেঅনেকমানুষ। সুপেয়পানি ও খাদ্য
সংকট দেখা দিয়েছে দুর্গতএলাকায়। সব মিলিয়েমানবিকবিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা
দিয়েছে। নদী ও পানিবিশেষজ্ঞরাবলছেন, মূলতবাংলাদেশেরপূর্বাঞ্চল ও
উজানেঅবস্থিত ভারতেরত্রিপুরাসহকয়েকটিরাজ্যে
অল্পসময়েঅতিমাত্রায়ভারিবৃষ্টিপাতেরকারণেইআকস্মিক বন্যাপরিস্থিতি তৈরিহয়েছে।
আবহাওয়াবিদ,
জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ও পানিবিশেষজ্ঞদেরমতে, দেশের এই অঞ্চলগুলোতেবন্যার
পেছনেউজানেরবৃষ্টিইবড়ভূমিকারাখে। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী,
চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেটসহ
বেশকিছু জেলায় এই হঠাৎবন্যাপরিস্থিতির পেছনেএবারও একই ঘটনা ঘটেছে।
কৃষিমন্ত্রণালয়ের
তথ্য বলছে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ,
ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ,
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি,
পাবনা, খুলনা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলায় কৃষিতেব্যাপক
ক্ষতিহয়েছে। অতিবৃষ্টিএবংউজান থেকে আসাপাহাড়িঢলেরকারণে দেশেরউত্তর-পূর্ব,
দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের ২৪টি জেলারতিনলাখ ৩৮ হাজার ৯২২ হেক্টরজমিরফসল
ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে, যাএসব জেলার মোটআবাদি জমিরপ্রায় ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে রোপাআমনেরআবাদ। প্লাবিত জেলাগুলোরতিনহাজার
১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জনমানুষএবং ১৭ হাজার ৮৪৮টি
পশুকেআশ্রয় দেওয়াহয়েছে। ত্রাণকার্যে নগদ বরাদ্দ দেওয়াহয়েছেতিন কোটি ৫২
লাখটাকা। টিএসসিতেচলছে‘গণত্রাণসংগ্রহ’। বানভাসিমানুষেরপাশে দাঁড়াতে
ব্যক্তিগত উদ্যোগেবহুমানুষ সেখানেত্রাণনিয়েহাজিরহচ্ছে।
টিএসসিরপ্রবেশমুখেশিক্ষার্থীরা নগদ অর্থ এবং টোকেনেরমাধ্যমে
ত্রাণসামগ্রীসংগ্রহকরেন।
বাংলাদেশে অন্য সব প্রাকৃতিক দুর্যোগেযত ক্ষতি
হয়, শুধুবন্যায়তার চেয়েঅনেক বেশি ক্ষতি হয়। বিশেষজ্ঞরাবলছেন,
বন্যারআঘাতপ্রতিনিয়তবাড়ছেএবংবাড়তেই থাকবে। এর
প্রধানকারণআমাদেরনদীগুলোভরাটহয়েযাওয়া। বৃষ্টিরপানি ও উজান থেকে
আসাঢলেরপানিনদীদিয়েনামতেনাপারায় সেইপানিসমতলভাসিয়েনিয়েযায়।
বন্যায়
ক্ষয়ক্ষতির যে চিত্র উঠে আসছে, তারীতিমতোভয়াবহ। এই
অবস্থায়বন্যাকবলিতদেররক্ষায়সর্বাত্মক উদ্যোগনিতেহবে। যার পক্ষে যতটুকু
সম্ভব, তানিয়েইবন্যার্তদেরপাশে দাঁড়াতেহবে।