বাংলাদেশে
গুলি ব্যবহারের যে দৃশ্য জাতিসংঘ দেখেছে, তার নিন্দা করেছেন বলে জানিয়েছেন
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ
বিশ্বের যেকোনো দেশে মানুষের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সাংবাদিকদের
স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার সরকারকে রক্ষা করতে হবে।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্টিফেন ডুজারিক এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ের
শুরুর দিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান জাতিসংঘ
মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও
সহিংসতার মধ্যেও বিষয়টি সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া জরুরি, বাংলাদেশে মানবিক
সংকট চলছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালসহ বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতির শিকার মানুষদের
জাতিসংঘ, জাতিসংঘের অংশীদারেরা অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর
ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ।
ইন্টারনেট ও
ব্যাংক বন্ধ, কারফিউয়ের মতো অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জাতিসংঘের
অংশীদারেরা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। গত জুন মাসে জাতিসংঘ, জাতিসংঘের
অংশীদারেরা ১২ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য ৮ কোটি ডলারের মানবিক সাড়া
পরিকল্পনা চালু করেছে। বিবৃতিতে ঘূর্ণিঝড়দুর্গত মানুষ এবং কক্সবাজারে
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে মানবিক সহায়তার নানা তথ্য
তুলে ধরে হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয়ের নিয়মিত প্রেস
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী
শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ
সরকার কি জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে? স্বাধীনতার অভাব থাকা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত
প্রতিষ্ঠানের তদন্তে জাতিসংঘ কি সহায়তা করবে? নাকি জাতিসংঘ নিজস্ব তদন্তের
প্রস্তাব দেবে?
জবাবে মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, প্রশ্নে অনেকগুলো
বিষয় রয়েছে। যেকোনো দেশের সরকার যেকোনো বিষয়ে সাহায্য চাইলে জাতিসংঘ
অবশ্যই সব সময় তা করতে প্রস্তুত। আর কীভাবে সেই সহায়তা সবচেয়ে ভালোভাবে করা
যায়, তা জাতিসংঘ দেখে। এ ধরনের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের
লেজিসলেটিভ বডির (আইনপ্রণয়নকারী পরিষদ) অনুমতি প্রয়োজন।
একই সাংবাদিক
আরেক প্রশ্নে বলেন, এই ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র গাজায়
সাংবাদিক নিহত হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অন্তত
তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেউ জানেন না,
তাঁরা কোথায়। তাঁদের একজন তাঁর (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) সাবেক সহকর্মী সাঈদ
খান। তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানেন না।
জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন,
‘বাংলাদেশে গুলি ব্যবহারের যে দৃশ্য আমরা দেখেছি, তার নিন্দা জানিয়েছি।
বাংলাদেশ বা বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকারের জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং
সাংবাদিকদের স্বাধীন ও নির্বিঘেœ কাজ করার অধিকার রক্ষা করা উচিত।’