জনসংখ্যা বাড়ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার চলাচলের জন্য বেশি করে রাস্তাঘাট বানানোর প্রয়োজন হচ্ছে এবং বানানোও হচ্ছে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ অঞ্চলে উজানের ঢল, বৃষ্টি ও বন্যার পানি নামার জন্য বিনা বাধায় পানি প্রবাহিত হওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি। সে কারণে সড়ক বা রাস্তায় পর্যাপ্ত সেতু, কালভার্ট থাকা জরুরি এবং তা করাও হয়।
কিন্তু কিছু মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকা-ের কারণে পানির সেই প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। বন্যা ও জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়। মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। ফসলাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্ষতি হয় সড়ক, সেতুসহ বাড়িঘরেরও। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলায় ২৪টি সেতু দিয়ে পানি নামার পথ নানাভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিংবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বন্যার পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
তাই অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের পথ উদ্ধার করে সেতুগুলো দিয়ে আসা পানির চলাচল বাধামুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ।
জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো এক চিঠিতে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, গত ২৮ জুন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সুনামগঞ্জ বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি কিছু ব্রিজ, কালভার্টের মুখ আংশিক ও পূর্ণ ভরাট হওয়ার দৃশ্য দেখতে পান। পানিপ্রবাহের পথে অনেকেই বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছেন। জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় সড়ক, সেতু, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় নানাভাবে মানুষেরও দুর্ভোগ বাড়ছে। ফসলেরও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে কোথাও কোথাও প্রাকৃতিকভাবেও পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রাকৃতিক কারণেই সুনামগঞ্জ বন্যাপ্রবণ ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি জেলা। উত্তরে রয়েছে ভারতের পাহাড়বেষ্টিত সুউচ্চ ভূমি। ভারি বৃষ্টির সময় বিপজ্জনকভাবে নেমে আসে পাহাড়ি ঢল। প্লাবিত হয় পুরো এলাকা। সেই পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ না পেলে কিংবা প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। আমরা মনে করি, অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে যেসব জায়গায় সেতু দিয়ে আসা পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সেসব বাধা অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। আমরা আশা করি, জেলা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।