বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিক্ষোভ মিছিল করতে আসা আন্দোলনকারীরা সরকার দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত
স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাধা পেরিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আন্দোলনে আসার সময়
অনেক আন্দোলনকারী মারধরেরও শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৯
জুলাই) দুপুর ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে থেকে আন্দোলনকারীরা
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল পর্যন্ত যায়। এরপর আবার
মূল ফটকের এসে তারা বক্তব্য রাখেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্র
আন্দোলন চত্বর, ব্লু ওয়াটার পার্ক রোড, কোটবাড়ী বিশ্বরোড, কোটবাড়ী অংশে
সরকার দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অবস্থান নেন। এ সময় তারা
প্রতিটি যানবাহন চেক করেন। আন্দোলনকারী কেউ থাকলে তাদেরকে গালিগালাজ, মারধর
করে গাড়িতে তুলে আবার ফিরিয়ে দেন। এ সময় তাদের অনেককে হেলমেট পরিহিত
অবস্থায় লাঠি, গাছের ঢাল, স্ট্যাম্প হাতে দেখা যায়। আন্দোলনে বাঁধাদান
কারীদের সাথে এ সময় দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী
রেজা-ই-এলাহী, আবু সাদাৎ মো. সায়েম, ইকবাল খানকে দেখা যায় যায়।
এ
ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের
পাশাপাশি অনেক বহিরাগতরাও ক্যাম্পাসে এসে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই
আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের অবস্থানের ফলে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ
ক্যাম্পাসের দিকে যেতে পারছে। তাদের যাতে কোন সমস্যা না হয় সে জন্য আমরা
দাঁড়িয়েছি।
দুপুর দুইটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও
বাঁধার মুখে বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু
হয়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা 'শিক্ষা, ছাত্রলীগ একসাথে চলবে না',
'শিক্ষা,সন্ত্রাস একসাথে চলবে না', 'তোর কোটা তুই নে, আমার ভাইকে ফিরিয়ে
দে', 'তুমি কে, আমি কে? সমন্বয়ক, সমন্বয়ক'-সহ নানা স্লোগান দেন। বিক্ষোভ
শেষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব
হোসাইন ১৫ জুলাইকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দিবস ঘোষণা করে। এরপরের
কর্মসূচির ব্যাপারে তিনি পরবর্তীতে জানানো হবে বলে জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়
শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, ‘আমাদের কাছে
তথ্য আছে জামায়াত–শিবিরের নেতা-কর্মীরা সেখানে বিশৃঙ্খলা করতে পারে। তাই
কেন্দ্রের নির্দেশে সেখানে অবস্থান নিয়েছি, যেন কেউ বিশৃঙ্খলা করতে না
পারে।’
কুবির সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন,
'আমরা আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মূল ফটকে একত্রিত হয়ে অবস্থান
করছি। আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আন্দোলনে আসার সময় হামলা ও হেনস্তার শিকার
হয়েছেন। তবুও আমরা আজকে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করতে পেরেছি।
আমরা কোনোপ্রকার সহিংসতায় যাই নি।
সার্বিক ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ' আজকে তেমন কোন ঝামেলার মুখোমুখি হতে
হয়নি শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ সেহেতু আমরা পরবর্তীতে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোন দলের কোন প্রকার কর্মসূচি পালন করতে দিব না।
যদি কেউ আমাদের অনুমতি ছাড়া কর্মসূচি করে তাহলে এর দায়ভার আমাদের না।'