মিয়ানমারের
রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও দেশটির সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের
তীব্রতা বেড়েছে। চলমান যুদ্ধে প্রাণে বাঁচতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী
বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশসহ (বিজিপি) দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু
সদস্য নাফ নদ হয়ে দুটি কাঠের ট্রলারে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বর্তমানে এই দুই ট্রলার নাফ নদে ভাসছে।
রবিবার (১৪ জুলাই) বিকালে টেকনাফ
পৌরসভার জালিয়াপাড়ার টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটের নাফ নদে দুটি কাঠের
ট্রলারে করে অর্ধশতাধিক দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এপারে প্রবেশের
চেষ্টাকালে বাধা প্রদান করে বাংলাদেশের কোস্টগার্ড। প্রবেশ করতে না পেরে
তাদের ট্রলার দুটিকে নাফ নদে ভাসতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে
সীমান্তে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন,
মিয়ানমারে যুদ্ধ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে নাফ নদে দুটি কাঠের ট্রলারে করে
অর্ধশতাধিক মিয়ানমারের বিজিপিসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অনুপ্রবেশকালে
বাধা প্রদান করা হয়। আমরা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদে টহল জোরদার করেছি।
এ
বিষয়ে টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিকালে নাফ নদের
জেটিঘাটে দুটি কাঠের ট্রলারে করে বেশ কিছু মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর
সদস্য ঢোকার চেষ্টা করে। তবে তাদের কোস্ট গার্ড বাধা দেয়।
তিনি আরও
বলেন, রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সীমান্তে ওপারের বিকট গোলার শব্দে
এপারের সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে আতঙ্ক বেড়েছে। পাশাপাশি নাফ নদের ওপারে
কয়েকটি স্পটে আগুনের কু-লী দেখা গেছে। সীমান্তে যাতে অনুপ্রবেশ না ঘটে
সেজন্য টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ঘুরতে
আসা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘বিকালে জেটি থেকে মিয়ানমারের আগুনের ধোঁয়া দেখা
গেছে। এ ছাড়া নাফ নদের জেটিঘাটের পাশে দুটি কাঠের ট্রলারে বেশ কিছু বিজিপি
সদস্য প্রবেশের চেষ্টা করলে কোস্টগার্ড বাধা দেয়।'
সীমান্তের বাসিন্দা
মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ফের মিয়ানমার থেকে বিকট গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।
ওপারে যুদ্ধের কারণে টিকতে না পেরে দেশটির বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে
আসার খবর পাচ্ছি। এছাড়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারাও অনুপ্রবেশের চেষ্টা
চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ
আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তের বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ
পাওয়ার কথা বলেছেন। নাফ নদের ওপারে আগুনের কু-লী দেখা গেছে। তাছাড়া এপারে
সে দেশের কিছু বিজিপি সদস্য প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।
এদিকে এ বিষয়ে
টেকনাফ-২ বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন
আহমেদ বলেন, আজকেও সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।
নতুন করে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক
অবস্থানে রয়েছি।