সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর আপিল বিভাগের এক মাসের জন্য স্থগিতাদেশ মানছেন না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, কোটা সংস্কারের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সারাদেশে আবারও ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত কোটা সংস্কারের দাবি মানা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি, সংসদে আইন পাস করে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সকল ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। এ দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে আমরা রাজপথে থাকব।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। এতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
বিষয়টি আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানীর জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তারা মানবেন না।
বুধবার শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বাংলা মোটর, শাহবাগ ও পল্টনসহ বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাজধানীর মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে যাত্রীচাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।