কুমিল্লার
লালমাই উপজেলার বরল এলাকায় একটি কোল্ডস্টোরেজ থেকে অবৈধভাবে জব্দকৃত ৪ লাখ
২৭ হাজার পিস ডিম নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমান
আদালতের নিলামে বিক্রয়কৃত ডিমের মূল্য ২৭ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা
দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হেলাল
উদ্দিন। তিনি জানান, জেলাপ্রশাসকের নির্দেশনায় বিভিন্ন কোল্ডস্টোরেজে অবৈধ
মজুদ আছে কি না জানতে- অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ৪ জুন
সন্ধ্যায় লালমাই উপজেলার বরল এলাকার মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালনা
করে বিপুল পরিমান ডিমের মজুদ সন্ধান পান ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান
আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মারজানা আক্তার তাৎক্ষনিকভাবে অবৈধভাবে
মজুদকৃত ডিম নিলামে বিক্রি করেন এবং অবৈধ মজুদারির দায়ে কোল্ডস্টোরেজকে ১
লাখ টাকা জরিমানা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো জানান, কৃষি
বিপনন আইন অনুযায়ী ডিমের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০
থেকে ১৫ দিন মজুদ রাখতে পারবেন। এখানে গিয়ে দেখা গেছে- মাসের পর মাস ধরে
মজুদ করা হয়েছে। তার মানে এসব অবৈধ মজুদ। এর আগেও এই কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১
লাখ ডিমের বিশাল অবৈধ মজুদ জব্দ করে বাজারজাত করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
৫
জুলাই শুক্রবার সকালে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে দেখা যায়, নির্দেশনা মত
বিক্রয়কৃত ডিম নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ৪
লাখ ২৭ হাজার ডিম ২৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। হিসেব
মতে, প্রতিটি ডিমের দাম প্রায় ৬ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। ডিম
সংরক্ষণকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা জানান, ডিম নিলামের আগে বিক্রেতাদের জানানো
হয় নি। নোয়াখালী জেলার মাইজদী বড় বাজারের ব্যবসায়ি ইমরান হোসেন জানান,
আমাদেরকে আগে জানালে আমরা ডিমগুলো সরিয়ে নিতাম। কিন্তু ভ্রাম্যমান আদালত
এসেই ডিম জব্দ করে নিলাম করে দেয়ায় এখন আমরা পথে বসার মত অবস্থায়। গরমের
কারণে কোল্ডস্টোরেজে ডিম বেশি মজুদ হয়। শীতকালে এত পরিমান ডিম মজুদ হয় ন।
মোঃ
মাইনুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যবসায়ি বলেন, আমার ৫২ হাজার ৮০ পিস ডিম ছিলো।
আমাকে না ডেকেই এসব ডিম নিলাম করা হলো- আমি এসব ডিম ধার করে কিনে সংরক্ষণ
করছিলাম।
প্রকাশ নিলামে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রায় ৬ টাকা পিস দরে ৪ লাখ ২৭
হাজার পিস ডিম কিনে নেন লালমাই উপজেলার ব্যবসায়ি লোকমান হোসেন। তিনি জানান,
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রকাশ্য নিলামে ডিম বিক্রি করেন। আমি ৪ লাখ ২৭
হাজার ডিমের টাকা জমা দিয়ে নিলাম থেকে ডিম কিনেছি।
উল্লেখ্য গত ১৬ মে
মেঘনা কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুদ জব্দ করে ভ্রাম্যমান
আদালত। সেসময় এই কোল্ডস্টোরেজটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ৪৮ ঘন্টার
মধ্যে জব্দকৃত ডিম বাজারজাত করার নির্দেশ দেয়া হয়।