জাতীয়
দাবার ৪৮তম আসরে খেলছিলেন দেশসেরা দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান।
দ্বাদশ রাউন্ডে আজ তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল
হোসেন রাজীব। পল্টনের দাবা ফেডারেশন কক্ষে বিকাল ৩টায় খেলার শুরু থেকে
অস্বস্তিবোধ করছিলেন জিয়া। প্রায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি চেয়ার থেকে পড়ে
যান। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজীবের গাড়িতে করে দ্রুত বারডেম ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে
নিয়ে গিয়েও দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টারকে বাঁচানো যায়নি। হার্ট অ্যাটাক
হয়েছিল তার। সন্ধ্যার ঠিক আগে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। ৫০ বছর
বয়সে মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক ছেলে রেখে গেছেন দেশের তারকা দাবাড়ু জিয়া।
হাসপাতাল
থেকে স্ত্রী তাসমিনা সুলতানা লাবন্য কাঁদতে কাঁদতে বাংলা ট্রিবিউনকে
বলেছেন, ‘আপনার জিয়া ভাই আর নেই। ওকে আর বাঁচানো গেলো না।’
দাবা
ফেডারেশনের প্রধান বিচারক হারুনুর রশিদ ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানালেন,
‘জিয়া খেলতে খেলতে চেয়ার থেকে পড়ে যায়। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে
আসা হলেও বাঁচানো যায়নি। ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তার জ্ঞান
ফেরাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত মৃত ঘোষণা করেছেন।’
হাসপাতালে সতীর্থ
অনেকেই ভিড় করছেন। আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব হাসপাতাল থেকে
বলেছেন, ‘হাসপাতালে জিয়া ভাইকে আনা হয়েছে অনেক সময় হলো। ডাক্তাররা আগেই
মৃত ঘোষণা করেছেন। তবে ভাবির মন তো আর মানছে না।’
চিকিৎসকদের কাছ থেকে
মৃত্যুসনদ হাতে নিয়ে জিয়ার স্ত্রীর কান্না আরও বাড়ে। এসময় কান্নায় ভেঙে
পড়েন তার সহ-খেলোয়াড়সহ উপস্থিত অনেকেই। জিয়ার মৃত্যুতে দাবাসহ বাংলাদেশের
বিভিন্ন ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিয়াজ মোর্শেদের পর জিয়া
২০০২ সালে দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন। এর আগে ১৯৯৩ সালে
আন্তর্জাতিক মাস্টারের খেতাব পান। স্কুলজীবন থেকে দাবায় সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।
২০২২ সালে একমাত্র ছেলে তাহসিন তাজওয়ার জিয়ার সঙ্গে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডে
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন। এছাড়া জিয়া জাতীয়
দাবাসহ দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন।