নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজীতে দুইজন এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলায় তিন জনের মৃত্যু হয়। শনিবার (১৫ জুন) ও শুক্রবার (১৪ জুন) পৃথক সময়ে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লিচুবাহী একটি ট্রাক পেছন থেকে অপর একটি কাভার্ড ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে টাকের ভেতরে থাকা দুই জনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনের লাশ উদ্ধার করে। তবে দুপুর পর্যন্ত নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা মারা যাওয়া দুজন ট্রাকের চালক ও সহকারি।
ময়নামতি ক্রসিং হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার জানান, সকালে লিচুবাহী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ডভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ২টি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, মারা যাওয়া দুজনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহত দুজন ট্রাকের চালক ও সহযোগী।
অপরদিকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার (১৪ জুন) একদিনে ৩ জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো- উপজেলার গনিপুর গ্রামের মৃত আবদুল করিম মিয়াজির ছেলে শাহীন মিয়াজি (৩০), সাইকচাইল গ্রামের মোঃ সবুজ মিয়ার ছেলে আহিল (৬) ও বচই গ্রামের অবসরপপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবদুল করিম (৬০)। নিহতদের মধ্যে শাহিন মিয়াজি ও শিশু আহিলকে জানাযার নামায শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং অবসরপপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবদুল করিমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। পারিবারিক ও মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মনোহরগঞ্জ বাজার ডাক বাংলোর সামনে মোটরসাইকেল ও অটোরিক্সা মুখোমুখি সংঘর্ষে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবদুল করিম গুরুতর আহত হন। এসময় উপস্থিত লোকজন তাকে (আবদুল করিম) উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার সকালে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বিপুলাসার বাজারে বাবা-মায়ের সাথে ঈদের কেনাকাটা করতে এসে অটোরিক্সা ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে নিহত হয় শিশু আহিল। এসময় নিহত আহিলের পিতা-মাতা ও ছোট ভাই গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে তারা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত আছে। গত ০৯ জুন উপজেলার গনিপুর গ্রামের মৃত আবদুল করিম মিয়াজির ছোট ছেলে বাহরাইন প্রবাসী শাহিন মিয়াজি মোটরসাইকেল যোগে লাকসাম যাওয়ার পথে লাকসাম-সোনাইমুড়ী সড়কের জেঠার দোকান নামক স্থানে মারাত্মক দূর্ঘটনার শিকার হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা ট্রমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় শুক্রবার রাত ৯টায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। শনিবার সকাল ১০ টায় গনিপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে তার জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় উপস্থিত ছিলেন মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ি আবুল কালাম আজাদ, নাথেরপেটুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি শেখ মোঃ জসিম উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক রিপন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-মামুন সুমন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিব্বির আহমদসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ। এ বিষয় মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান কবির জানান, পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় তিনজন নিহতের ঘটনায় তাৎণিক আমাদের থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনী ভাবে সহযোগিতা করেছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। সড়ক-পরিবহন দূর্ঘটনা আইনে ঘটনাগুলোর মামলা রুজু হচ্ছে। তদন্ত সােেপ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।