প্রকাশ: বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪, ৮:৪৭ পিএম |
তানভীর দিপু: প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বসানো হচ্ছে কোরবানির গরু ছাগলের হাট। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও-অন্য নামে গরু বাজারের ইজারা নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে স্কুল মাঠ। কুমিল্লা সদর উপজেলার আমড়াতলি উচ্চ বিদ্যালয় ও আমড়াতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় আয়োজন করে ‘দুতিয়ার দিঘির পাড় কোরবানির পশুর হাট’ নামে হাট বসানো হচ্ছে। অপরদিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের একেবারে পাশ ঘেঁষা চাঁদপুর জনতা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের মাঠে বসানো হয়েছে কোরবানির পশুর হাট। যদিও এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো হাট ইজারা দেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন। দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, অন্য জায়গার নামে ইজারা নিয়ে স্কুল মাঠে কোরবানির হাট বসানো হচ্ছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন হলে আমরা ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
বুধবার (১২ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার চাঁদপুর জনতা হাই স্কল এন্ড কলেজ মাঠে খুঁটি বসানো হয়েছে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য। তার পাশেই স্কুলে তখনও ক্লাস চলছিল। স্কুলের সামনেই শহীদ মিনারের উপরেই বড় সাইনবোর্ড ঝোলানো আছে বিশাল গরু ছাগলের হাট। হাট বসবে ১৩ ই জুন থেকে ১৬ই জুন পর্যন্ত।
স্কুলের সামনেই কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। স্কুলটি নবম শ্রেণী শিক্ষার্থী সিয়াম ও সিহাব জানান, কোরবানির বাজারের পর ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেল মাঠ থেকে দুর্গন্ধ সরে না। পোকামাকড়, মশা মাছি বেড়ে যায়। এগুলো পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হলেও কোন লাভ হয় না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম জানান, আমরা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেইনি। ওখানে কারা হাট বসাচ্ছে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
অন্যদিকে কুমিল্লার সদর উপজেলা আমড়াতলী উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। স্কুল চলাকালীন সময়েই বসানো হচ্ছে গরু ছাগল বাঁধার খুঁটি। স্কুলের গেইটে রঙিন ব্যানারে ওই বাজারে লেখা দুতিয়ার দিঘীর পাড় কোরবানির হাট। স্থানীরা জানান, আগামী শুক্রবার থেকে এই স্কুল মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসার কথা রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা জানান, আমরা কোন স্কুল কলেজের মাঠে পশুর হাট ইজারা দেই নি। হয় তো ইজারাদাররা হাটের জন্য অন্যস্থান দেখিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করছে। আমি বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের তথ্য মতে, স্থায়ী- অস্থায়ী মিলে কুমিল্লায় মোট কোরবানির পরশুর হাট ৪০৯ টি। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, এবার অস্থায়ী হাট ৩৬৪টি। বাকিগুলো স্থায়ী হাট। কোরবানির পশুর হাট যেন নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন থাকে সে ব্যাপারে সভা করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, কোরবানির পশুর হাট থেকে পশু বেচাকেনা সর্বাত্মক নিরাপদ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোন মহাসড়কের পাশে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঠে কোন কোরবানির হাট ইজারা দেয়া হয়নি। কেউ যদি প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে অবৈধভাবে হাট বসানোর চেষ্টা করে তাদের ব্যবস্থা নেয়া হবে।