ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় তিন সন্তানসহ নিখোঁজ সেই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার (৯ জুন) সকালে তাকে বগুড়ায় প্রেমিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় প্রেমিক মেহেদি হাসানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার (১০ জুন) আটক মেহেদীকে প্রধান আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন আইনে অপহরণ মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর দাবি, তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন। তবে গ্রেফতার মেহেদী অপহরণের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ফেসবুকে প্রেমের পর তিন সন্তানসহ ওই গৃহবধূ স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে গিয়েছিলেন।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, আখাউড়ার উপজেলার দ্বিজয়পুরে এক ব্যক্তির সঙ্গে একযুগ আগে বিয়ে হয় ওই গৃহবধূর। তাদের ঘরে তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ২ জুন ওই গৃহবধূ আখাউড়া থেকে তার বাবারবাড়ি বিজয়নগর উপজেলার মেরাসানি গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরে গত ৭ জুন বাবার বাড়ি বিজয়নগর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শ্বশুরবাড়ি আখাউড়ায় যাওয়ার পথে তিন সন্তানসহ নিখোঁজ হন।
পরে নিখোঁজ মেয়ে ও নাতিনদের সন্ধ্যান চেয়ে ওই গৃহবধূর বাবা গত ৮ জুন বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে পুলিশ নিখোঁজ গৃহবধূর সন্ধানে মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ওই নারীর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে বগুড়া পুলিশের সহযোগিতায় জেলার সদর উপজেলার গোকুল উত্তরপাড়ার কথিত প্রেমিকের ভাড়া বাড়ি থেকে তিন সন্তানসহ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া গৃহবধূর দাবি, অপরিচিত মেহেদি হাসানসহ দুই ব্যক্তি তাকে ও তার সন্তানদের অচেতন করে অপহরণ করেছিলেন। পরে বিজয়নগর থানা পুলিশ তাদের বগুড়া থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মেহেদীকে আসামি করে সোমবার রাতে বিজয়নগর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
তবে গ্রেফতার মেহেদী হাসান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) তাদের পরিচয় হয়। পরে দীর্ঘদিন ধরে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি তাকে বিয়ে এবং বগুড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে চাপ দেয় সে। অন্যথায় আত্মহত্যার হুমকি দেয়। পরে ওই গৃহবধূর পরিকল্পনা অনুযায়ী মেহেদী সিঙ্গার বিল বাজার এলাকা থেকে এসে নিয়ে যায়। অপহরণের ঘটনা সঠিক নয় বলে দবি মেহেদীর।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মনির হোসেন জানান, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে মেহেদী হাসানকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় অপহরণ মামলা করেন। পুলিশ মামলার ঘটনাটি তদন্ত করছে। পরে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুল ইসলাম জানান, গৃহবধূসহ আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আদালত থেকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই গৃহবধূকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।