![কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত]( https://www.comillarkagoj.com:443/2024/06/10/CK_1717961185.jpg)
কুমিল্লার
বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ'র গুলিতে এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন।
ঘটনার ১০ ঘন্টা পর আনোয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। রবিবার সন্ধ্যা ৬
টা ১৫ মিনিটে ভারতের নগর এলাকা কলসীমোড়া বিএসএফ ক্যাম্প দিয়ে তার মরদেহ
বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল
এএম জাবের বিন জব্বার উপস্থিত থেকে মরদেহ স্বজনদের কাছে তুলে দেন। এসময়
তিনি জানান, ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত এবং এই মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত হবে।
এর
আগে সকাল সাড়ে ৮ টায় বুড়িচং উপজেলার জামতলা ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের
গুলিতে আনোয়ার নামে ওই বাংলাদেশী ব্যক্তি নিহত হন। সীমান্তের ৬৬ নং পিলার
এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ার হোসেন (৫০) বুড়িচং উপজেলার মিরপুর গ্রামের
চারু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম জানান, রবিবার সকাল
আটটায় স্থানীয়রা জামতলা উত্তরপাড়া সীমান্ত এলাকায় গুলির শব্দ শুনতে পান।
তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন, ভারত থেকে চিনি আনতে গিয়ে ভারতীয়
সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বিএসএফের গুলিতে একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। পরে
স্থানীয় শংকুচাইল ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের সাথে নিয়ে তিনি কাঁটাতার বেড়া
এলাকায় গিয়ে মরদেহ দেখতে পান।
এর আগে সকালে বিজিবি ৬০ এর অধিনায়ক এএম
জাবের বিন জব্বার সাংবাদিকদের বলেন, সকালে আনোয়ার হোসেন ভারতে অবৈধভাবে
অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এমন সংবাদ স্থানীয়দের মাধ্যমে বিজিবি শুনেছে। এ
বিষয়টি নিয়ে বিএসএফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে বিএসএফ ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার
করে। তবে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। বিজিবি অধিনায়ক আরো জানান-স্থানীয়দের
বরাতে বিজিবি জানতে পেরেছেন নিহত আনোয়ার ভারত থেকে চোরাইপথে আনা চিনি
বহনকারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
সবশেষ দুপুরে ঘটনাস্থল
জামতলা এালাকায় বিজিবি ও বিএসএফ ই-কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক শেষে
সিদ্ধান্ত হয় কলসীমোড়া বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে সীমান্তে বিজিবির কাছে মরদেহ
হস্তান্তর করা হবে।
![কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত]( https://www.comillarkagoj.com:443/2024/06/10/CK_1717961196.jpg)
পরে বুড়িচং উপজেলার ১ নং রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে নিহত আনোয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
২নং
বাকশিমুল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল করিম জানান, নিহত আনোয়ার চিনি চোরালানের
শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। রবিবার সকালেও সে চিনি আনতে জামতলা যায়। সেখানেই
এই ঘটনা ঘটে।
জামতলা গ্রামবাসী জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরেই বিএসএফের সাথে
স্থানীয় সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীর উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক চলে আসছিল। গত
সপ্তাহে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে বিএসএফের একজন সদস্য দু-একজন গ্রামবাসীকে
ধাওয়া করার পর থেকে এই উত্তেজনা চলে আসছে। সে সময় ওই বিএসএফ সদস্যকে ধরে
তার নিরাপত্তা সরঞ্জাম রেখে দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলেও জানায় স্থানীয়রা। তবে
বিজিবির চেষ্টায় ঘটনাটি মীমাংসা হলেও রবিবার আবার এক চিনি চোরচালান শ্রমিক
বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।