কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এস্টেট দপ্তরে কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন নাজিম এর
বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৩জুলাই) রাত দেড়টার
দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এই মামলার ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৪জুন)
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় এনায়েত হোসেন নাজিমের বাবা মো: আব্দুল হামিদ
বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের নামে একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলার
বিবরনী থেকে জানা যায়, রাতের বেলায় আমার ছেলে (এনায়েত হোসেন নাজিম) মোবাইলে
কথা বলার সময় তার রুমের দরজা খোলা ছিল এবং সে তার রুমে বসে কথা বলতেছিল।
এই সুযোগে রাত অনুমান ০১:৩০ অজ্ঞাতনামা ১৪/১৫ জন সহ হাতে দেশীয় অস্ত্রাদি
নিয়ে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস যোগে আমাদের নিজ বাড়িতে এসে আমার ছেলের রুমের
খোলা দরজা দিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে আমাদের থেকে ০২ টি স্যামসং মোবাইল
নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আমাদেরকে ওড়না ও গামছা দ্বারা হাত বেধে আটক করে
মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমাদের থেকে চাবি নিয়ে যায় এবং ঘরে থাকা আলমারি ও
ওয়ারড্রপের ড্রয়ার খুলে আমার স্ত্রী নাছিমা আক্তারের রক্ষিত নগদ ১,২২,০০০/-
(একলক্ষ বাইশ হাজার) টাকা এবং আমার ছেলের স্ত্রী মারিয়া আক্তারের কানের
দুল ও গলার চেইন এবং আমার স্ত্রীর কানের দুল একজোড়া ও গলার চেইন সহ সর্বমোট
০২ ভড়ি স্বর্নালংকার, মূল্য অনুমান ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নিয়ে যায়।
বিবাদীরা যাওয়ার সময় উক্ত বিষয়ে মামলা করলে আমাদেরকে জীবনে মেরে ফেলবে বলে
ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। ডাকাতি করে বাড়ি হইতে দক্ষিন দিকে পাকা রাস্তা হইয়া
মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস যোগে চেম্বার বাজারের দিকে চলে যায়। ডাকাতদের পরনে
থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট ও কাপড় দিয়ে মুখ বাধা ছিল। তাদের বয়স ২৫-৪০ বছরের
মধ্যে হবে। তাহার কুমিল্লার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বার্তা বলে। পরবর্তীতে
পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ এসে বিস্তারিত বিষয়টি
আমাদের থেকে জানেন ও শুনেন। আমার সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকারত আব্দুল কুদ্দুস
(৪৫), মামুন মিয়া (৩৮) সাথে পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। পূর্ব বিরোধের জের ধরে
গত ১ জুন তারা আমাকে বিজয়পুর বাজারে আমার পা ভেঙ্গে ফেলবে এবং ক্ষতি করবে
বলে হুমকি ধমকি দেয়। অতঃপর বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনকে অবহিত করি।
আমার ধারনা যে, উক্ত ব্যক্তিরাও অত্র ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। পরবর্তীতে
বিষয়টি আমার আত্মীয় স্বজন সহ স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনের সাথে পরামর্শ করে
থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করি
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী এনায়েত হোসেন নাজিম
বলেন, 'রাত প্রায় ১.৩০ মিনিটে আমি মোবাইল ফোনে কথা বলতেছিলাম হঠাৎ কেচি
গেইট খোলার শব্দ শুনে ঘরের দরজায় যাওয়াতে দেখি কেউ একজন কেচি গেইটের কাছে
দাঁড়িয়ে আছে, মুহূর্তের মধ্যে দরজা লাগাতে গেলে ডাকাত দল পিস্তল এবং দেশীয়
অস্ত্রসহ জোরপূর্বক আমার ঘরে ডুকে অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমার হাত
ও মুখ বেধে আমার রুম থেকে আমার নগদ ১৭০০০ হাজার টাকা, ঘড়ি, মোবাইল ও আমার
স্ত্রীর স্বর্ণের বালা(প্রায় ২ভরি) এবং কানের দুল ৮আনা নিয়ে নেয় তারপর আমার
বাবার রুমে ডুকে বাবাকে হাত ও মুখ বেধে ওনার মোবাইল, নগদ ৯৩,০০০ হাজার
টাকা এবং আমার মায়ের ১২,০০০ টাকা, স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল নিয়ে নেয়।
ডাকাতরা আমার ঘরের প্রতিটি আলমিরা, ওয়ারড্রব, চালের ড্রাম, জুতার বাক্স
পাশাপাশি সব স্বর্ণ ও নগদ টাকার জন্য তছনছ করে ফেলে। ডাকাতদের মুখ
বাধাছিলো। ডাকাতরা প্রায় ১৪/১৫ জন ছিলো এবং তাদের মুখ কাপড়দিয়ে বাধা ছিলো।
তিনি
আরো বলেন, 'ডাকাতরা আমাকে বলে আমরা পাশরের বাড়িতে যাচ্ছি কোন চিল্লানি
দিবিনা আর কোন মামলা করবিনা করলে মাইরা ফেলমু, তারপর ওরা চলে যাওয়ার প্রায়
পনেরো মিনিট পর আমি আর আমার বাবা ঘর থেকে বের হয়ে আমাদের পাশের বাড়িতে যেয়ে
ডাকাত আসছে বলে সবাইকে ডাক দিয়ে উঠাই এবং কিছুক্ষণ পর ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ
আসে'
এই বিষয়ে সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা বলেন, 'একটি মামলা হয়েছে৷ বর্তমানে তদন্ত চলমান আছে।'