সারা দেশেই আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কথায় কথায় খুনাখুনি হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণেও
খুনাখুনি বাড়ছে। পারিবারিক সহিংসতা চরম রূপ ধারণ করেছে।
চুরি, ডাকাতি,
ছিনতাইয়ের ঘটনাও দ্রুত বাড়ছে। পাড়ায়-মহল্লায় কিশোর গ্যাং,
মাস্তান-সন্ত্রাসীদের উৎপাতে মানুষ তটস্থ থাকছে। শুধু গতকাল শুক্রবারের
কালের কণ্ঠে এ রকম বেশ কিছু খবর প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়,
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বৃহস্পতিবার বিকেলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে
রফিক বাহিনীর সন্ত্রাসীদের হামলায় দ্বীন ইসলাম নামের সদ্য এসএসসি পাস করা
এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ দ্বীন ইসলামকে
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত
ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরো ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত ২২ জন। এ সময়
সন্ত্রাসীরা আটটি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে
কলেজের র্যাগ ডে উৎসব কেন্দ্রকে করে বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন হোসাইনকে
প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খুলনায় বুধবার রাতে
দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে শাওন তালুকদার (২৪) নামে এক যুবক নিহত হন।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত চা দোকানদার মো. ফারুক ভূইয়া
(৬০) বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সিলেট নগরের নয়াসড়ক এলাকায় বৃহস্পতিবার
দুপুরে আবুল হাসান সাবিল (২২) নামে এক তরুণ দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন
হয়েছেন। এ ছাড়া নরসিংদীর রায়পুরায় যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র ও
গুলিসহ এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম
হচ্ছে নিরাপদে ও মানসম্মান নিয়ে বসবাস করা।
আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে
নাগরিকদের সেই নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে আমরা তার প্রবল
ঘাটতিই দেখতে পাচ্ছি। মানুষ নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারছে না। ছিনতাইকারী,
অজ্ঞান পার্টি, গায়ে বমি করে ছিনতাই—কত রকমের পার্টির জন্ম হচ্ছে। আইন ও
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাই দেশে খুন-ধর্ষণসহ ভয়ংকর
অপরাধ বৃদ্ধির মূল কারণ। অপরাধকা-ে পুলিশ বাহিনীর কিছু দুর্নীতিবাজ সদস্যের
জড়িত থাকার অভিযোগও পাওয়া যায়।
দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার
ক্রমেই বাড়ছে। এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে জোরদার অভিযান চালাতে হবে।
গোয়েন্দা তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি প্রদানের জন্য
বিচারিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে হবে। অপরাধীদের লালন-পালন ও ছত্রচ্ছায়া
প্রদানকারীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।