কুমিল্লায়
বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মহানগর
যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক কবির হোসেন বাদী হয়ে সোমবার (৩ জুন) কুমিল্লা কোতয়ালী
মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের
সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলুকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৮জনের নাম উল্লেখসহ
অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন।
এদিকে
ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারের সার্থে পুলিশ আসামিদের নাম না বললেও
বাদী পক্ষের সূত্রে জানা গেছে- মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম
ছোটন, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম রনি, ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ি
এলাকার রেজওয়ান, দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকার নয়ন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের
সদস্য সাগর, উত্তর চর্থা এলাকার আজাদ, চর্থা এলাকার মুরাদসহ অজ্ঞাত ১০/১৫
জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার (২ জুন) দিবাগত রাত সোয়া ১১টার
দিকে কুমিল্লা টাওয়ার হসপিটাল সংলগ্ন ঈশ্বর পাঠশালার সামনে কুমিল্লা মহানগর
বিএনপির আহবায়ক উদবাতুল বারী আবু এবং সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুর
সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় এসময় ২২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের
আহবায়ক ফখরুল ইসলাম তুহিন এবং অন্তর নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও
সংঘর্ষের সবুজ নামে এক ছাত্রদল কর্মীর মাথা ফেটে যায় এবং ৫-৬ জন পথচারী আহত
হন বলে জানা গেছে। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানা
যায়, রবিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সংঘর্ষে শুরুতে কুমিল্লা-লাকসাম সড়কের
রামঘাটলা পৌর মার্কেটের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন যুবক
ঈশ্বরপাঠশালা গেইট পর্যন্ত ১০/১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর তারা
অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বিপরীত পাশের ভিক্টোরিয়া কলেজের গলি দিয়ে চলে যায়।
এদিকে
বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের বেশ কয়েকটি সিসি
ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ফুটে যে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পড়ে বেশ
কয়েকজন যুবক এলোপাথারি গুলি ছুড়ছে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। এসময়
পথচারীরা ভয়ে আতঙ্কে চারদিকে ছোটাছুটি করেন। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় ওই
এলাকার সড়কটি।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করা
হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন। তিনি বলেন
সংঘর্ষের পর সাথে সাথেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসিটিভির ক্যামেরার
ফুটেজগুলো সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলা
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতারে
মাঠে নেমেছে। অতি দ্রুতই তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
কুমিল্লার
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (কামরান হোসেন) গণমাধ্যমকে বলেন, রবিবার
দিবাগত রাত ১১টা ১৫ মিনিট থেকে ১১টা ৪৫ মিনিট সময়ের মধ্যে কুমিল্লা নগরীর
টাওয়ার হাসপাতালের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দুই গ্রুপের মধ্যে
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পুলিশের
উপস্থিতি টের পেয়ে দুটি গ্রুপের লোকজন পালিয়ে যায়। সেখানে বেশ কিছু ককটেল
বিস্ফোরণ হয় এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু ককটেলের খোসা
এবং তিন রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন ব্যক্তি আহত
হয়েছে এবং আহতদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ। আহতরা আশঙ্কাজনক নয়, হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন আছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৮জনকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায়
মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশের টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
সংঘর্ষে যারা জড়িত ছিলো এবং গুলিবর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার
করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।