![গতবারের তুলনায় এবার ভর্তি আবেদনে পিছিয়ে পড়েছে কুবি]( https://www.comillarkagoj.com:443/2024/06/02/CK_1717268366.jpg)
কুবি
সংবাদদাতা : গুচ্ছ অধিভুক্ত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের ভর্তি
পরিক্ষায় আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) গতবছর
(২০২২-২৩) শীর্ষস্থানে থাকলেও এবছর (২০২৩-২৪) সেটি ধরে রাখতে পারেনি। এ বছর
আবেদনের প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় এবং
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন এবং ভর্তি
পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ড. মো. সাইফুর রহমানের সাথে কথা বলে
জানা যায়, ১৯টি বিভাগের ১০৩০টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ১৮৯৮০টি।
প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। যেখানে, গত বছর ১০৪০টি
আসনের বিপরীতে প্রায় ২৩হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। আসন প্রতি আবেদন ছিল ২১টি।
গতবছরের
তুলনায় এ বছর আবেদন কম পড়ার কারণ হিসেবে উপাচার্য এবং শিক্ষক সমিতির
দ্বন্ধই অন্যতম কারণ বলে ধারণা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক ও
প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। টানা তিন মাসের অধিক সময় ধরে চলমান
উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির বিবাদের ফলে বারবার সংবাদের শিরোনামে রূপান্তরিত
হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি অভিভাবক মহল এবং
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করছেন
তারা।
এ ব্যাপারে ভর্তি পরিক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ড. মো.
সাইফুর রহমান বলেন, "গত বছরের তুলনায় এ বছর আবেদন কম পড়েছে। তবে বর্তমান
পরিস্থিতি বিবেচনায় আলহামদুলিল্লাহ।"
এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সাধারণ
সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, "যে ক্যাম্পাসে শিক্ষকরাই নিরাপদ না সেখানে
শিক্ষার্থীরা আলাদা অপশন খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক। বড় বড় ক্যাম্পাসগুলোতে
উপাচার্যই এ ব্যাপারগুলো দেখেন। কিন্তু, গত ১৯শে ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের উপর
যে হামলা হয়েছে সেটির কোনো তদন্ত কমিটি এখন পর্যন্ত গঠন করা হয়নি। পরে গত
২৮শে এপ্রিল উনি নিজে সন্ত্রাসী ডেকে এনে শিক্ষকদের উপর হামলা করিয়েছেন।
উনার মধ্যে কোনো ধরনের আগ্রহ নাই বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন, নিয়ম-নীতি বা
শিক্ষার পরিবেশের মধ্যে রাখার। উনার আগ্রহ হচ্ছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বোর্ড,
সিন্ডিকেটকে প্রভাবিত করে নিয়োগ বাণিজ্য করা।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজ সময়ের সাথে সাথে যেভাবে ডেভেলপ করেছে, উনার
(উপাচার্যের) কর্মকা-ের কারণে সাময়িকভাবে সেই ইমেজ কিছুটা কমেছে। তবে আমরা
বিশ্বাস করি, অনিয়মের ফলে যেখানে প্রতিরোধ প্রতিষ্ঠিত হয় সেখানেই ভালো
কিছুর সম্ভাবনা তৈরি হয়। আশা করছি ইদের পর পজিটিভ কিছু হবে।"
উপাচার্য-
শিক্ষকের মধ্যকার দ্বন্দ্বের জন্য এবার আবেদন কম পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন,
"আসলে ঠিক এমনটা বলা যাচ্ছে না।"
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ
এম আবদুল মঈন বলেন, "শিক্ষক সমিতির নেতাদের রেগুলার ক্লাস বন্ধ রাখা ও
বিভিন্ন হাঙ্গামার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা খারাপ ইমেজ তৈরি হয়েছে
শিক্ষার্থীদের মাঝে।"
এ বছরের সমস্যা কাটিয়ে উঠা এবং এর প্রেক্ষিতে কী
ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,
"বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই ঘটুক, যেভাবেই আমাকে কাজ করতে বাধা প্রদান করুক না কেন
বিশ্ববিদ্যালয়কে লিডিং পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার যে ভিশন আমি সেটাতেই
অঙ্গিকারবদ্ধ থাকব। তবে শুধু আমাকে অঙ্গিকারবদ্ধ থাকলে হবে না, এ ব্যাপারে
প্রশাসনে কর্মরত থাকা ব্যক্তি এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যথাযথ সহায়তা
লাগবে।"