ম্যানচেস্টার
ইউনাইটেডের পাঁড় ভক্তরাও হয়ত ভাবতে পারেননি এমন একটা ম্যাচ উপহার দিতে
পারে রেড ডেভিলরা। সাম্প্রতিক সময়ে ম্যানচেস্টার সিটি ছড়ি ঘুরিয়েছে প্রায়
সব দলের ওপর। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছে কেবল এক মৌসুম আগে। টানা চারবার
হয়েছে ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু সেই দলটাই কিনা প্রথমার্ধেই ইউনাইটেডের
সঙ্গে পিছিয়ে থাকল ২-০ গোলে!
এফএ কাপের ফাইনালের আগেই ম্যানইউ কোচ এরিক
টেন হাগের ভাগ্য নির্ধারণের খবর প্রকাশ করেছিল ইংলিশ পত্রিকা দ্য
গার্ডিয়ান। বলা হয়েছিল, এই ম্যাচে ফলাফল যাইই হোক না কেন, ইউনাইটেড কোচের
পদে টেন হাগের থাকা হচ্ছে না। নিজের এই সম্ভাব্য শেষ ম্যাচে যেন
কর্তৃপক্ষকে বড় বার্তা দিলেন টেন হাগ। এফএ কাপের শিরোপা ম্যানইউ জিতে
নিয়েছে ২-১ গোলের ব্যবধানে।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচের পুরোটা
সময়ে ইউনাইটেড খেলেছে পুরোপুরি রক্ষ্মণাত্মক ভঙ্গিতে। সুযোগ বুঝে এগিয়েছে
আক্রমণের দিকে। রাফায়েল ভারানে এবং লিসান্দ্রো মার্টিনেজে গড়া ইউনাইটেড
রক্ষণভাগ নিজেদের কাজটা করেছে দুর্দান্তভাবে। সিটির আক্রমণভাগের মূল ভরসা
আর্লিং হালান্ডকে দুজনেই রেখেছেন কড়া মার্কে।
তাতে কাজও দিয়েছে বেশ।
নার্ভাস হালান্ড একের পর এক সুযোগের সামনে থেকে হতাশ হয়েছেন। আর ফিল ফোডেন,
বার্নার্ডো সিলভা কিংবা কেভিন ডি ব্রুইনার ওপর বেড়েছে চাপ। অতিরিক্ত
প্রেসিং আর অ্যাটাকিং ফুটবল খেলতে যাওয়া সিটি পরাস্ত হয়েছে ইউনাইটেডের
কাউন্টার অ্যাটাকে। প্রথমার্ধেই দুই গোল তুলে নিতে সমস্যা হয়নি রেড
ডেভিলদের। সেটাই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে এনে দিয়েছে এফএ কাপের শিরোপা।
দুই
গোলেই অবশ্য সিটির রক্ষণভাগের দায় আছে অনেকটা। ম্যাচের ঠিক ৩০ মিনিটে
দিয়েগো দালোত অনেকটা লম্বা পাস দিয়েছিলেন ছুটতে থাকা আলেহান্দ্রো গার্নাচোর
উদ্দেশে। সিটি গোলরক্ষক স্টেফান ওর্তেগা বেরিয়ে এসেছিলেন। রক্ষণের ইয়াস্কো
গাভার্দিওল হেডে বল বাড়িয়েছিলেন তার দিকেই। ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ পুরোপুরি
পেয়ে যান গার্নাচো। আলতো টোকায় ফাঁকা পোস্টে গোল করেন এই তরুণ আর্জেন্টাইন।
গোল খেয়ে আরও মরিয়া হয়ে আক্রমণে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। তবে একাধিকবার
তাদের ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে শুধুমাত্র ভারানে-মার্টিনেজ জুটির কারণে।
দুপাশ থেকে অ্যারন ওয়ান বিসাকা এবং দিয়েগো দালত সাপোর্ট দিয়েছেন দারুণভাবে।
সেটাই পরবর্তীতে কাজে লেগেছে।
৩৮ মিনিটে ভারানের পাসে বল জালে জড়ান
রাশফোর্ড। তবে সেই গোল বাতিল হয় অফসাইডে। এক মিনিট পরই ইউনাইটেড পায় আরেকটি
গোল। এবার অবশ্য গোল বাতিল হয়নি। চলতি মৌসুমে ইউনাইটেডের সেরা প্রাপ্তি
ছিল উদীয়মান তারকা কোবি মাইনু। ব্রুনো ফার্নান্দেজ, মার্কাস রাশফোর্ডের
সম্মিলিত আক্রমণে সিটি রক্ষণভাগ অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে যায় কোবির সামনে।
ঠা-া মাথায় দলকে এনে দেন দ্বিতীয় গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যানসিটি সুযোগ যে
পায়নি তা নয়। তারপরও গোল পাচ্ছিল না তারা। কখনো গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার
কাছে আটকেছেন আবার কখনো হালান্ডের শট ফিরে এসেছে গোলবারে লেগে। অবশ্য
জেরেমি ডোকু একটা গোল করেছেন ৮৭তম মিনিটে এসে। তাতে ওনানার দায় আছে খানিক।
শেষের ওই গোল অবশ্য ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারেনি। ম্যানচেস্টার সিটিকে হতাশ
করে গেলবারের এফএ কাপ ফাইনালের প্রতিশোধ ঠিকই নিয়েছে ম্যানইউ।