চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র
করে ছুরিকাঘাতে ছালেহ আহম্মেদ(৩৭) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ সময়
তার বাবা ও ছোট ভাই গুরুতর আহত হয়েছেন। ছালেহ আহম্মেদ ওই গ্রামের আবুল
কাশেম ও নাসিমা বেগমের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ মনোয়ারা বেগম এবং শাহিনা আক্তার
নামের দুই নারীকে আটক করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা
মুন্সিরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির আবুল কাশেমের সাথে
সম্পত্তি নিয়ে তার ভাগিনা জামাল উদ্দিন ও মহিন উদ্দিনের বিরোধ চলে আসছে। এর
জের ধরে সোমবার সন্ধায় উঠান ঝাড়– দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে
ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ সৃষ্টি হলে ছালেহ আহম্মেদকে জামাল
উদ্দিন ও মহিন উদ্দিন গং ছুরিকাঘাত করে এবং তার বাবা আবুল কাশেম ও ছোট ভাই
আব্দুল মতিনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে
উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক
ছালেহ আহম্মেদকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহত ছালেহ আহম্মেদের পিতা আবুল কাশেম
বলেন, জামাল উদ্দিন ও মহিন উদ্দিন সম্পর্কে আমার ভাগিনা হয়। সম্পত্তি নিয়ে
তাদের সাথে আমার পূর্ব বিরোধ চলে আসছে। সোমবার সন্ধায় আমার প্রতিবন্ধি মেয়ে
জান্নাতুল ফেরদৌস উঠান ঝাড়– দেওয়ার সময় জামাল উদ্দিন, মহিন উদ্দিন ও
মনোয়ারা বেগম আমার মেয়েকে মারধর শুরু করে। এ সময় ছালেহ আহম্মেদ বাধা দিতে
এলে তারা ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আমি এবং
আমার ছোট ছেলে আব্দুুল মতিন এগিয়ে গেলে তারা আমাদেরকে পিটিয়ে আহত করে।
তাদের চুরিকাঘাতে আমার ছেলে ছালেহ আহম্মেদ মারা যায়।
ছালেহ আহাম্মদেও মা
নাসিমা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার চোখের সামনেই জামাল উদ্দিন, মহি
উদ্দিন ও মনোয়ারা আমার ছেলেকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি
হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর
জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আবুল হাসেম সবুজ বলেন, ছালেহ আহম্মেদ এর তলপেটে এবং
হাতে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার
আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ
সাহা বলেন, ‘সম্পত্তি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার রাতে নিহত ছালেহ আহাম্মদের বাবা আবুল কাশেম বাদি হয়ে জামাল উদ্দিন,
মহিন উদ্দিন, তাদের মা মনোয়ারা বেগম, জামালের স্ত্রী শাহেনা আক্তারের
বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে
মনোয়ারা বেগম ও শাহেনা আক্তারকে গ্রেফতার করে। পুলিশ অপর দুই আসামীকে
গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে’।