প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ৯:৪৩ পিএম |
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার চড়ানল গ্রামে আয়শা আক্তার নামের এক বৃদ্ধাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে (১৩ মে ২০২৪) সোমবার মাগরিবের নামাজের পর। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তন্ময় সহ ৩ যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চড়ানল মুহুরী বাড়ীর মোঃ শামসুদ দোহা অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী পুলিশের স্ত্রী আয়শা আক্তারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের লিডার তৌহিদুল ইসলাম তন্ময় ও সহযোগীরা। উক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহত আয়শা আক্তারের পুত্রবধূ শারমিন আক্তার।
থানার পুলিশ এস আই নুুরুল ইসলাম জানান, নিহত আয়েশা আক্তারের বাড়ির আবুল বাশারের স্ত্রী সম্পর্কে ঝাঁ কানিজ ফাতিমা তার ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তম্ময়কে দিয়ে মাগরিবের নামাজের এক ঘন্টা পর ডেকে তার বাড়ি নিয়ে আসেন। এর পর থেকে তিনি আয়শা আক্তার নিখোঁজ হয়। পুত্র বধূ শারমিন আক্তার কোথাও তার শাশুড়ীকে না পেয়ে তার সৌদি প্রবাসী স্বামী নুরুল আমিনকে জানালে তিনি এলাকার প্রতিবেশী মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি দেখার জন্য বলে। এ সময় সে গিয়ে দেখে ওই বাড়ির পূর্ব ভিটির ঘরের সামনে রক্তাক্ত ওই বৃদ্ধা নারীকে গলা কাটা লাশ মাটি পড়ে থাকতে দেখেন। তাদের আত্মচিৎকারে এলাকার আশে-পাশের লোকজন সমাগম হয়। এসময় আব্দুল অদুদ মেম্বার জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করে পুলিশকে অবগত করে।
রাতে ঘটনাস্থলে বুড়িচং থানায় ওসি আবুল হাসানাত খন্দকার ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের লিডার তন্ময়ের ঘর থেকে একটি রক্তমাখা ছুড়ি উদ্ধার করে। খুনি তন্ময়ের বাবার নাম আবুল বাশার। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে এস আই নুরুল ইসলাম ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে নিহত বৃদ্ধার ৩ মেয়ে ২ ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে স্বামী অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী শামসুদ দোহা, এক ছেলে সৌদি প্রবাসী নুরুল আমিন, বড় ছেলে রুহুল আমিন পুলিশের ( সাব-ইন্সপেক্টর) হিসেবে কর্মরত।
নিহত আয়শা আক্তারের ভাই কক্সবাজার সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মাসুদ। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, উনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন। কিছুদিন পূর্বে নিহত নারীর বাবার বাড়ি এলাকা থেকে তন্ময় ও সহযোগীরা এক কিশোরীকে তুলে এনে বাড়িতে আটকিয়ে রাখলে আয়শা আক্তার এই বিষয়টি নিয়েও প্রতিবাদ করেছিলেন। নিহত আয়শা আক্তারের বয়স ৫৮ বছর হয়েছিল। তার বাবার বাড়ি বাকশীমূল ইউনিয়নের আজ্ঞাপুর গ্রামে।
বুড়িচং থানার ওসি আবুল হাসানাত খন্দকার জানান, ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৌহিদুল ইসলাম তম্ময়, মেহেদী ও হানজালাকে আটক করে থানায় এনেছি। তদন্ত চলমান রয়েছে।