দেশের বৈদেশিক মুদ্রার
রিজার্ভ কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনি¤েœ এসে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (১৩ মে)
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছে
১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও
মুখপাত্র মো. মেজবা উল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সোমবার (১৩ মে) বিকালে
আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে
নেমেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ আছে গ্রস ২৩ দশমিক ৭১
বিলিয়ন ডলার।
অবশ্য দেশের নিট রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে। নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বাংলাদেশ
ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল এক হাজার
৯৮২ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আকুর
১৬৩ কোটি ডলার দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮১৯
বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার।
সোমবার এই
রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। ২০১৪ সালের শুরুর
দিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ানোর পর আর কখনও নিচে
নামেনি।
মূলত, আকু একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর
মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ,
মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়।
একসঙ্গে দায় পরিশোধ এটিই বড়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, ডলার
সংকটের কারণে গত দুই বছর ধরে আমদানির পরিমাণ ব্যাপক পরিমাণে কমেছে।
অন্যদিকে ডলার আসার (আন্তপ্রবাহ) তুলনায় বেশি চলে যাওয়ার (বহিঃপ্রবাহ) বেশি
হওয়ার কারণে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
তথ্য বলছে, বাংলাদেশকে এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ের জন্য
আকু বিল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। সে সময় এ দায়
পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছিল ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ৪৪ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি করেছে,
যা এক বছর আগের একই সময়ের ৫১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ১৩ দশমিক ৯৩
বিলিয়ন ডলার কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসের
শেষদিকে বা আগামী মাসের শুরুতে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১৫
বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেলে রিজার্ভ ফের বাড়বে।