তানজিনা মিতু কুমিল্লার তরুণী। নিজের পরিচয়টা তিনি দেন ধাপে
ধাপে। তবে দিন শেষে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি একজন খেলোয়াড়। শুরুটা ভলিবল
দিয়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কারাতেতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন,
সেটির ব্ল্যাকবেল্টধারী ২৪ বছর বয়সী তানজিনা। উশুও খেলেন জাতীয় পর্যায়ে।
একবার বেনাপোল হয়ে বাইসাইকেলে চেপে ভারতে কারাতে খেলতে গিয়েছিলেন।
দল
আগেই ভারতে পৌঁছে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কোথাও ঘুরতে গেছে আর তিনি তখন তিন
দিনের সাইকেল-সফরে। টুর্নামেন্টের আমন্ত্রণপত্র দেখিয়ে সাইকেল নিয়েই পার
হয়েছিলেন সীমান্ত।
উশুর কোনো একটা ক্যাম্প চলার কথা এখন, তবে মিতু
সেখানে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন দেশভ্রমণে। উদ্দেশ্য,
৬৪ জেলা ঘুরে নিজের দেশটা দেখা। সুযোগ পেলে পরের বছর আবার উশুতে নামবেন।
মঙ্গলবারের
ওই সকালে ঢাকা থেকে ওই সফর শুরু হওয়ার কথা ছিল মিতুর। ৩০০ ফুটের রাস্তায়
তাঁর সামনে একটু আগে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোটরসাইকেলচালক আর তাঁর আহত
আরোহীকে মিতু সহায়তাও করেছেন ৯৯৯-এ কল করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে এনে।
এরপর
নিজের সফরের শুরুতে একটা ব্যানার বের করে ছবি তুলছিলেন সাইকেলের সামনে।
সকাল আটটার মতো বাজে। ফেসবুকে পরিচয় হওয়া ভারতের সাবেক এক কারাতে খেলোয়াড়কে
তিনি ‘মা’ ডাকেন, সেই ‘কাকলী মায়ের’ দেওয়া কোনো একটা মেসেজ পড়ছিলেন ফোনে।
ওপাশে
চোখ যেতে দেখলেন, আরেক সাইকেল আরোহী তাঁকে দেখে গতি কমিয়ে এনেছেন। মিতুর
মনে হয়েছিল, তিনি কোনো ঝামেলায় পড়েছেন ভেবেই ওই সাইকেল আরোহী অমন করলেন।
ঠিক সে সময় পেছন থেকে মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দিল ওপাশের সাইকেল আরোহীকে,
এরপর দেখলেন তাঁকে উল্টে পড়ে যেতে। মিতুর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল এমন,
‘একদম চিৎকার দিয়েছি।’
ভিক্টোরিয়ার সাবেক পেশাদার সাইক্লিস্ট হেমিং আর
কুমিল্লার শখের সাইক্লিস্ট মিতুকে এভাবে মিলিয়ে দিল একটি দুর্ঘটনা।
হেমিংয়ের ভাষায়, ভাগ্যই মিলিয়ে দিল তাঁদের। দিন শেষে সবই ঘটে কোনো এক
কারণে, ‘থিংস হ্যাপেন ফর আ রিজন!’