প্রবাসী
স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে অনশনে
বসেছেন এক তরুণী (২২)। ঘটনাটি ঘটেছে, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতি
ইউনিয়নের সোতপুকুরিয়া গ্রামের মাঝি বাড়িতে। শনিবার (১১ মে) সকাল ১০টায় ওই
তরুণী প্রেমিক পাভেল মাঝির বাড়িতে অবস্থান নেয়। অভিযুক্ত পাভেল মাঝি
সোতপুকুরিয়া গ্রামের হাকিম মাঝির ছেলে। সে চট্টগ্রামের একটি সেনা বাহিনির
ক্যাম্পে চাকরি করে বলে জানায় ওই তরুণী।
এদিকে, তরুণীর আসার পরপরই বাড়ি
থেকে সরে যান ওই যুবক। বিয়ের দাবিতে তরুণীর অনশনের খবরে ওই বাড়িতে উৎসুক
জনতা ভিড় জমায়। ভুক্তভোগী ওই তরুণী রাজামেহার ইউনিয়নের মরিচা গ্রামের
আজিজুল মাঝির মেয়ে।
জানা গেছে, ওই তরুণীর সঙ্গে যুবক পাভেল মাঝির চার
বছরের প্রেমের সম্পর্ক। গত তিন মাস আগে পাভেল মাঝির বিয়ের প্রলোভনে পরে
প্রবাসী স্বামীকে তালাক দেন ওই তরুণী। কথা ছিল পাভেলের সেনা বাহিনির চাকরি
স্থায়ী হলে ওই তরুণীকে ঘরে তুলবেন। এদিকে পাভেলের পরিবার এ বিয়ে মানতে রাজী
না হওয়ায় ওই তরুণীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় পাভেল। পরে শনিবার সকালে
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসে ওই তরুণী।
ভুক্তভোগী তরুণী
বলেন, পাভেলের সঙ্গে আমার চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক। সে আমাকে বিভিন্ন
আবাসিক হোটেলে নিয়ে মেলামেশা করত। এমনকি আমার বাড়িতে এসেও আমার সাথে রাত্রি
যাপন করত। এসব কিছু পাভেলের পরিবার জানত। সে একটি মসজিদের হুজুর ডেকে
আমার সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু সে চালাকি করে কাবিন বা কোন
কাগজপত্র করেনি। আমি তাকে খুব বিশ^াস করতাম। আমার প্রবাসী স্বামী যে
টাকা-পয়সা আমার কাছে পাঠাত আমি সব তার পিছনে খরচ করেছি। আমার স্বামীকে
ডির্ভোস না দিলে সে নাকি আমাকে বিয়ে করতে পারবে না। তার চাপে পড়ে গত তিন
মাস আগে আমার প্রবাসী স্বামীকে ডির্ভোস দিয়েছি। আমি এখন সব হারিয়ে নি:স্ব।
আগের স্বামীর কাছেও যেতে পারছি না, পাভেলের কাছেও ঠাই নেই, আমি বাধ্য হয়ে
তার বাড়িতে এসেছি। পাভেল যদি আমাকে বিয়ে না করে আমি এ বাড়িতে আত্মহত্যা
করব। আমার জীবন আমি শেষ করে দেব।
এবিষয়ে অভিযুক্ত পাভেলের মা বলেন,
কোন অবস্থাতেই আমি এ বিয়ে মানব না। ওই মেয়ের আরও আগে কয়েকটি বিয়ে হয়েছে।
আমার ছেলেও যে ভাল তা বলছি না, দুজনই খারাপ। এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য
মো. ইুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি আগেই থেকেই জানতাম। মেয়ের বাবা ছেলে
পক্ষের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেছে শুনেছি। আজ মেয়ে যে ওই ছেলের
বাড়িতে গেছে তা আমি জানিনা।
রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন
সরকার বলেন, একজন ইউপি সদস্য পাঠিয়েছি ছেলের বাড়িতে। উভয় পক্ষ নিয়ে রাতে
বসে সমাধান করা হবে। এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.নয়ন
মিয়া বলেন, এ বিষয়ে কোন পক্ষই আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে
তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।