ঢালিউডের
সোনালি যুগের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ
মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক অরুণাভ
চক্রবর্তী এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাদিয়া আফরিন শিল্পী নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
আবদুল
আজিজ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত বাকি দুই আসামি হলেন- ট্রাম্প ক্লাবের
মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী। বাকি ছয় আসামিকে
খালাস দেয়া হয়েছে।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান
নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান
থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এ মামলার ৯ আসামির
মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে আছেন সানজিদুল ইসলাম ইমন। জামিনে আছেন
আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন ও ফারুক আব্বাসী।
পলাতক
আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, হারুন অর রশীদ
ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে
বান্টি ইসলাম, সেলিম খান ও আদনান সিদ্দিকী।
মামলায় ২০০১ সালে বিচার
শুরুর আদেশ হয়। এক আসামি ওই আদেশ চ্যালঞ্জ করে উচ্চ আদালতে গেলে আটকে যায়
বিচারকার্য। এরপর উচ্চ আদালতের আদেশে আবার বিচারকার্য ২০২২ সালে শুরু হয়
বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ১৯৯৮
সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে
গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও
আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে
হত্যা করা হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে উঠে আসে আলোচিত ব্যবসায়ী
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও সোহেল চৌধুরীর মধ্যে
বিরোধ ছিল। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ
আদালত ও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
১৬১ ধারার জবানবন্দিতে তিনি
পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে
ক্লাবে যান তিনি। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তার
স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তার কয়েক বন্ধু গান
থামাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তার দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের
সামনে আসেন। তখন তারা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে
বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যান।
সোহেল
চৌধুরীকে কীভাবে গুলি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেদিন
সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে ক্লাবে ঢোকার অনুমতি না
দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে রাত ৩টার দিকে সোহেল চৌধুরী আবার ক্লাবের সামনে
আসেন। তখন পেশাদার খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।