৫ম দিনের মতো লাকসামে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪'র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদমর্যাদা (সরকার ঘোষিত গ্রেডিং ১-২০), ৬ মাস পিছিয়ে পে-স্কেল ও ৫% বিশেষ প্রণোদনা প্রদান, এপিএ বোনাস সমহারে না দেওয়া, লাইনম্যানদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা ও কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লাইনম্যান ও বিলিং সহকারী পদায়ন না করা, যথাসময়ে পদন্নোতি না করা, লাইনক্রু লেভেল-১ ও মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার (চুক্তিভিত্তিক), বিলিং সহকারীর (কানামুনা) চাকুরী নিয়মিত না করা, স্মারকলিপিতে অংশগ্রহণ করায় ভোলা পবিস-এর এজিএম আইটি ও এজিএম অর্থকে সাময়িক বরখাস্ত, সিরাজগঞ্জ পবিস-২ এর ডিজিএম (কারিগরি) ও এজিএম আইটি-কে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে সংযুক্ত করাসহ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষন, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ ও ভবিষ্যতে আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অভিন্ন চাকুরীবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রেখে লাকসাম পৌর শহরের দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের সামনে কর্মবিরতি পালনকালে দাবি আদায় ও বৈষম্য নিরসনে মানববন্ধনে নানা শ্লোগান দেয় তারা।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিলিং সুপার ভাইজার ঝরনা রানি সরকার বলেন, আমাদের সাথে আরইবি'র অনেক বৈষম্য। বেতন বৈষম্য, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বৈষম্য, ৫% প্রনোদনা সরকার গত বছরের জুলাই মাসে দিলেও আমাদের দেয়া হয়েছে এ বছরের জানুয়ারি থেকে, ২০১৫ সালে সরকার ঘোষণা দিলেও আমাদেরকে শতভাগ পে-স্কেল দেয়া হয়নি।
বিলিং সুপার ভাইজার শানু রানি বলেন, আরইবি এবং সমিতি দ্বৈতনীতি চলমান রেখে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের শোষন করছে। তারা যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আমরা তা পাই না। আমরা তাদের কাছে চাইতে হয় তা না হলে তারা আমাদের কথা ভাবেও না।বিলিং সহকারী, (কাজ নেই মুজুরি নেই 'কানামুনা') প্রিয়াংকা সাহা বলেন, আমার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। কিন্তু চুক্তির সাথে আমার কাজের কোন মিল নেই। চুক্তি মোতাবেক আমি দৈনিক মজুর পাই কিন্তু কাজ করি মাসিক ভিত্তিতে।
লাইন ক্রু লেভেল-১ আশরাফুল ইসলাম দুর্জয় বলেন, ৫ম দিনের মতো আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। আমাদের চাওয়া হচ্ছে অভিন্ন সার্ভিস কোড চালু করতে হবে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যা পল্লী বিদ্যুতের ইতিহাসে কোন সময় হয়নি। লাইন ক্রু লেভেল-১ চুক্তি ভিত্তিক। যে কাজে ঝুঁকি আছে, মৃত্যুবরণ করতে হয়, আহত হতে হয়, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়; সে কাজে চুক্তি কিভাবে হয়।
জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার। আরইবির সাথে আমাদের যে বৈষম্য তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আর আমাদের কিছু সহকর্মীর নিয়মিত করনের জন্য আমাদের এ আন্দোলন। বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে আমাদের যে সুযোগ সুবিধা আসে আমরা তা পাই না। আমরা একই সার্ভিস কোডে চলার কথা। কিন্তু তারা এক সার্ভিস করে চলে, আমাদেরটা আরেক সার্ভিস কোডে চলে।
আন্দোলনরতরা আরও জানান, এ সমিতির ৩৭৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করছেন। সারাদেশে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করছেন। এ তারা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমাদের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের চাওয়া পাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের জরুরী সেবা চালু রয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন ব্যাঘাত ঘটেনি। এখন পর্যন্ত তারা জরুরি সেবার কাজ করছেন, আবার দাঁড়িয়ে তাদের দাবি গুলো প্রকাশ করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছেন।