বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
লেখক, গবেষক ও অনুবাদক
জুলফিকার নিউটন- এর ৬০ তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধার্ঘ
শহীদুল্লাহ ফরায়জী
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৩৮ এএম |

 জুলফিকার নিউটন- এর ৬০ তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধার্ঘ
জুলফিকার নিউটন (১৯৬৪) জীবনের অন্তরাত্মার গোপনীয়তা, অমরতার দিগন্ত, মানবতার আগুন আর নক্ষত্রমালার গুণকীর্তনসহ অনেক কিছু বাংলা সাহিত্যে উন্মোচন করে দিয়েছেন এবং বিশ্বসাহিত্যকে ভ্রমণসঙ্গী করে নিজেকে সাহিত্যের পরিব্রাজকে রূপান্তর করেছেন, তাঁর সাহিত্যের যাত্রা অসীমের দিকে- অত্যুজ্জ্বল প্রভার দিকে- অবিশ্বাস্য সত্যের দিকে- অনাবিষ্কৃত আনন্দের দিকে এবং প্রশ্নাতীত ঐশ্বর্যের দিকে। তিনি বাংলা সাহিত্যে রস-পুষ্টি যোগান দেয়ার জন্যে আগ্নেয়গিরির গহিনে, উত্তর মেরুর ভয়ংকর গুহায়, অস্তগামী সূর্যে, বাতাসের স্তরে-স্তরে নক্ষত্রের শিরস্ত্রাণে, নারীর অক্ষমতার লজ্জায় এবং নেকড়ের পালে তন্নতন্ন করে অনুসন্ধান করে মহত্তম বোধ ও মহত্তম নৈতিকতার চেতনা সংগ্রহ করেছেন।
জুলফিকার নিউটন উত্তমতম নৈতিকতা ও গভীরতম প্রেমের পবিত্রতা প্রকাশে শব্দ আবিষ্কারে চৌকস বাজিকর। ভিতর থেকে অগ্নিউদ্গীরণ, তারকাখচিত আকাশে ভ্রমণ, সৌন্দর্যের বাগানে তা-ব এবং অভিধানের স্থাপত্য ভেঙে টুকরো করে শব্দের নির্মাণ তাকে বাংলা ভাষার বিপুলতা দিয়েছে।
জুলফিকার নিউটনের কবিতা ভিতরের চাহিদাকে উস্কে দিয়েছে। তার কবিতায় নক্ষত্রের গান, গণিকার উন্মত্ত আবেগ, ভগ্নস্তূপের ভয়ংকরতা, নর্তকীর সৌন্দর্যতৃষ্ণা, হিরন্ময় কারুকার্য, পঙ্কিলতার সমুদ্র, আত্মার সংলাপ আর আদিম নেশার ধ্যানমগ্নতা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কৃষ্ণকুটিল অন্ধকারকে তছনছ করেছেন, অবগুণ্ঠিত আত্মার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন, অগভীর চাতুর্যের মুখোশ খুলে দিয়েছেন এবং জীবনের অসমাপ্ত ভাবনাকে সঙ্গদান করেছেন। তিনি কবিতায় শাশ্বত সৌন্দর্যের মাঝে চিরকালীন দ্যুতি ছড়িয়েছেন। তিনি তার প্রবন্ধ, ছোটগল্প, উপন্যাসসহ সাহিত্যে আত্মার আত্মরক্ষার প্রতিরক্ষায় বিবেকের অলঙ্ঘনীয় প্রাচীর তুলেছেন। শোকার্ত যৌবনের মর্মবেদনাকে ভেদ করেছেন, চিরন্তন পরমানন্দকে চিরকালীন করতে চেয়েছেন। পাপের সমুদ্র অলৌকিক ঝর্ণাধারায় ধৌত করতে চেয়েছেন, জ্বলন্ত অগ্নিলাভায় দগ্ধদের মানবিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কামনা-লালসার ক্রীতদাসদের যুক্তি ও নীতিবোধ দিয়েছেন, পাপাত্মাদের কর্ণকুহরে গর্জনতুল্য বাণী দিয়েছেন, মৃত্যুর অতল গহ্বরের উচ্চস্বরের বিলাপকে আত্মার চারণভূমিতে বিলীন করে দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন, সর্বোপরি আত্মা এবং বিবেককে সংরক্ষণ করে মানুষ ও মানবিক হওয়ার প্রেরণা দিয়েছেন।
নিজের মৌলিক সাহিত্যের বাইরে অজ¯্র বিশ্বসাহিত্যের অনুবাদ বা ভাষান্তর করে জুলফিকার নিউটন আমাদেরকে বিশ্বসাহিত্যের অধিকতর মহৎ তীর্থে পরিভ্রমণ করার ছাড়পত্র দিয়েছেন। বিশ্বের নক্ষত্রসম সাহিত্যিকদের হৃদয় গলিয়ে তরল সোনা করে আমাদের পানপাত্রে ঢেলে দিয়েছেন। সাহিত্যের চিরন্তন বেদী আমাদের হৃদয়ের কাছে নৈবেদ্য দিয়েছেন। বিস্ময়করভাবে চেতনার সীমাবদ্ধতার সীলমোহর ভেঙে উচ্চতার উপরে চিন্তার কাফেলার অবস্থান দিয়েছেন। ঘৃণায় আচ্ছাদিত হৃদয়ে মারাত্মক বিষ না ঢেলে ক্ষমায় পরিত্রাণের রূপান্তর দেখিয়েছেন। বিশ্বসাহিত্যের কাছে আমাদের চিরকালীন ঋণ, যা অফেরতযোগ্য, তার চুক্তি সম্পাদন করেছেন। বিবেক খনন করে মহত্তম সত্য ও মহত্তম জীবনবোধ উপঢৌকন দিয়েছেন। জুলফিকার নিউটন সঙ্গীতেও নিজের হৃদয়কে তুলে দিয়েছেন অদৃশ্য বাদ্যযন্ত্রে, সুরের বীণা দিয়ে নৈঃশব্দের গভীরতা অতিক্রম করতে চেয়েছেন। সঙ্গীত নিয়ে তাঁর আগ্রহ অভিনিবেশ-মুগ্ধতা শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো অধিকতর গভীর। গানের ইতিহাস এবং বিষয়বস্তু নিয়ে ব্যাপক রচনায় সঙ্গীতের যে উচ্চতম উল্লাস প্রকাশ পেয়েছে, তা হৃদয়ের সেতারে অবিরাম বেজে যাচ্ছে। তিনি তারের যন্ত্র দিয়ে সেতার নয়, হৃদয়ের সুতা দিয়ে সেতার বানিয়ে গানের ঝঙ্কার ও সুরলহরীতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিবেকের বাদ্যযন্ত্রে মানবতার গান সংযোজন করেছেন।
জুলফিকার নিউটন বিশ্বাস করেন হৃদয়ের অতলে পৌঁছতে হবে ভালোবাসাকে প্রজ্বলিত করে আর ভালোবাসাকে পরিপূর্ণ গ্রাস করে সর্বোচ্চ উচ্চতায় যেতে হবে। নক্ষত্রের অনন্ত আলোয় নোঙর ফেলে মৃত্যুকে আত্মসাৎ করে পরিপূর্ণ চিরকালে কীভাবে শুনতে হয়- শূন্যতার চূড়ায় কীভাবে আত্মার নীল শিখাকে প্রজ্বলিত করতে হয়, সত্যের আনুগত্যে কীভাবে সীমাহীনতার সীমায় পৌঁছতে হয়, নৈঃশব্দের ভয়ংকর গভীরতায় কীভাবে আলিঙ্গন করতে হয়- এগুলো তার সর্বশ্রেষ্ঠ গোপনীয়তা। এইখানেই তিনি লাগামহীন স্বতন্ত্র। জুলফিকার নিউটন নিজেকে ভৎর্সনা করেন নিজের ভিতরে নক্ষত্রহীন অন্ধকারকে কেন বিতাড়িত করতে পারছেন না, বিবেক বুদ্ধির আলো জীবন পথকে কেন চূড়ান্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে না, কেন অসংখ্য সূর্যের দ্বারা প্রজ্জলিত  আলোকমন্ডল তার সামনে প্রতিভাত হয় না- কেন নক্ষত্রলোক হতে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মি তার উপর প্রভাব ফেলে না। তার আত্ম দহন থেকে মুক্তি পেতে টলস্টয় এর কাছে ধর্ণা দিয়েছেন, দান্তের কাছে আশ্রয় খুঁজেছেন, রবীন্দ্রনাথের কাছে সত্য অনুসন্ধান করেছেন, ওয়াল্ট হুইটম্যানের কাছে আপন আকাশ চেয়েছেন, ওমর খৈয়ামের সরাইখানায় গিয়েছেন, পল এলুয়ারের সশস্ত্র সুন্দর দেখেছেন, হাইনের মাটির ময়না ছুঁয়েছেন মায়াকোভস্কির ট্রাউজার মেঘ গায়ে মেখেছেন, নাজিম হিকমতের জেল খানার চিঠি পড়েছেন, বরিস পাস্তেরনাকের বসন্ত বন্যায় ডুব দিয়েছেন, অক্টাভিও পাজের নক্ষত্রের স্বর্গোদ্যান ভ্রমন করেছেন। ডেরেক ওয়ালকটের সুরের সম্মোহনে মুগ্ধ হয়েছেন আর পাবলো নেরুদার নক্ষত্রের নকশি কাঁথায় গা ঢাকা দিয়েছেন।
জুলফিকার নিউটন ভাষা থেকে ভাষায়, নৈঃশব্দ্য থেকে নৈঃশব্দ্যে ভ্রমণ করে জীবন আর সত্যের অর্গল খুলতে চেয়েছেন, বিভীষিকায় আগুনের বাড়াবাড়ি নিধন আর ধ্বংসকে মোকাবেলা করতে চেয়েছেন, নির্মাণ আর ভাঙ্গনের অমীমাংসিত প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী হয়েছেন। নিজের কাছে নিজেই তিনি বাধ্য হয়ে জবাবদিহি করেছেন, আকাশে তল্লাশী চালিয়ে কী উদ্ধার করেছেন, নক্ষত্র আর সমুদ্র চূর্ণ-বিচূর্ণ করে কী উপকরণ পেয়েছেন, সুন্দরের যবনিকাপাত করে যৌবনের কতটুকু হিরকখন্ড সংগ্রহ করেছেন, আত্মার পবিত্রকরণের জন্যে অদৃশ্য প্রার্থনায় কী পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করেছেন, বিচারপতির এজলাসে ঘুরে নৈতিকতার সুউচ্চ স্তম্ভে কতটুকু অবস্থান করতে পেরেছেন, পতন আর মৃত্যুর মাঝে পার্থক্যের সীমারেখা কীভাবে টেনেছেন, শেষ বিলাপের মর্মান্তিক আর্তনাদ মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার কী কৌশল আবিষ্কার করেছেন। জুলফিকার নিউটন লজ্জা ঘৃণায় মাটির গহীনে লুকাতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন, যখন দেখেন প্রজাতন্ত্রের অঙ্গ থেকে সাম্য-মানবতা-গণতন্ত্র খুলে ফেলা হয়েছে, পুলিশের হাতে বেত্রাহত হয়ে মানুষ ছুটছেন চিৎকার করে, গভীর ক্রোধে গণধর্ষিত হচ্ছে প্রিয় ছোট বোন। পাথর চোখে তিনি দেখতে থাকেন অত্যাচারে বলি হয়ে দূর আকাশে উড়ে যাওয়ার দৃশ্য লাল রক্ত ফোটা ফোটা ঝরছে মাটির শরীরে। অনিচ্ছায় দেখতে থাকেন ভয়ঙ্কর জ্ঞানী মানুষের অধঃপতনের চলচ্চিত্র, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বপ্নের মানচিত্র আর ভয়াবহ অন্ধকার। তারপর নিজের মুষ্টিবদ্ধ হাত খুলে দেখতে পারেন গলিত আত্মার অধঃপতিত সত্ত্বা। এখন আর দেখতে পারেন না বেপরোয়া মৃত্যুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়া সাহসী যুবক, দেখতে পারেন না সূর্যের ভ্রমণ, চোখ ধাঁধানো আগুনে ফুলকি। এখন অবলীলায় দেখতে থাকেন লোহার খাঁচায় বন্দি হওয়া মানুষের কাফেলা-ভেঙ্গে যাওয়া হৃদয়ের টুকরো, প্রজাপতি মৌমাছিদের পানপাত্র ভূ-মন্ডলের নৈরাজ্য আর গৃহযুদ্ধের রক্ত¯্রােত। তবু এখনো তিনি অনবরত স্বপ্ন দেখেন মানুষের পুনরুত্থানের, আলোর অক্ষর, বিবেকের হিরন্ময় জ্যোতি আর প্রতিপালকের করুণা।
জুলফিকার নিউটন অপেক্ষা করছেন, অনুতপ্ত হচ্ছেন, জীবনের পরমতা, জীবনের অতি গভীর মূল্যবোধ, পুনরুজ্জীবন, বিচ্ছেদ কাতরতার বেদনা, নিয়তির কণ্ঠস্বরের মত কেন প্রকাশ করতে পারনেনি, কেন আদিম প্রথার শৃঙ্খলা ভাঙ্গার শক্তি দিতে পারেননি, জীবনের পর্যাপ্ত সৌন্দর্য কেন ঢেলে দিতে পারেননি, জীবনকে ঢেলে সাজাবার মন্ত্র কেন স্পষ্ট করতে পারেননি, বিধ্বস্ত বিচূর্ণ নিঃসঙ্গ আত্মার ক্রন্দন ধ্বনি কেন শোনাতে পারেননি। সামাজিক পাপ, আত্মবিরোধ, পাপের অজ¯্রতা, অতীন্দ্রিয়বাদ, দর্শনের আর্দশবাদ সব রয়ে গেল প্রকাশের অগোচরে। ফলে জুলফিকার নিউটনের ঝগড়া এখন সাহিত্যের সঙ্গে ইতিহাসের সঙ্গে। এখন তিনি উদ্রগ্রীব আত্মার ভিতর অনুসন্ধানের শক্তি পেতে। সংবেদী পাঠকদের জন্য চির উন্মুক্ত সাহিত্যের কোষাগারে রূপান্তরের প্রয়োজনে তিনি হৃদয় পুড়াচ্ছেন, ভিতরের মশাল জ্বালাচ্ছেন, চোখের জলের কালিতে আঙ্গুল ডুবাচ্ছেন এবং ক্রমাগত ধ্বনিত হচ্ছেন বৃহত্তর আলোর দিকে। তিনি নিজেই উপভোগ করছেন আত্মোপলদ্ধি আত্মাজ্ঞান, তরঙ্গের মত উল্লাসি হয়ে ধরা দেবে না- আগুনে ডুবে, আগুনে দগ্ধ হয়ে অর্জন করতে হবে। গভীরতার গভীরতা জীবন্ত সৌন্দর্য-জীবনের বিকশিত মূল্যবোধ গ্রহণে নিজেকে প্রতারিত করার সুযোগ দিতে নারাজ।

জুলফিকার নিউটন ১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের বনেদী কাজি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাজি ছগির আহমদ ও মাতা কাজি নূরজাহান। আট ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। বারেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবিদ্বার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন এবং কৃতিত্বের সাথে অনার্সসহ এম.এ. ডিগ্রি এবং পরবর্তীতে বিশ^ভারতী বিশ^বিদ্যালয় (শান্তিনিকেতন) থেকে রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শনের ওপর উচ্চতর গবেষণা সম্পন্ন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসুর) সাবেক সাহিত্য সম্পাদক, সিনেট সদস্য, নন্দন পত্রিকার সম্পাদক এবং পরবর্তীতে দেশ বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, আমন্ত্রিত বক্তা, পরীক্ষক, গবেষণা ও বিশেষজ্ঞতার ভূমিকায় সংযুক্ত ছিলেন।
গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ এবং প্রবন্ধ-গবেষণা, সাহিত্যতত্ত্ব, দর্শন, সংগীত, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমকালীন ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত প্রতিক্ষেত্রেই জুলফিকার নিউটনের সংবিৎ সক্রিয় ও সুপ্রকাশ। বৈচিত্র্যের প্রাচুর্যে এবং মননের পরিবাহিতা শক্তিতে প্রত্যয়ী লেখকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর গল্প-উপন্যাস যেমন প্রীতিপদ, অনুবাদ সাহিত্য যেমন সুখপ্রদ, প্রবন্ধ ও গবেষণা তেমনই কোন না কোন দিক থেকে চমকপ্রদ। প্রচলিত মতের পুনরাবৃত্তি করেন না কখনও জুলফিকার নিউটন। সব সময়ই তাঁর আলোচনায় থাকে চিন্তাকে উসকে দেবার মত অজস্র উপাদান, নতুনতর দৃষ্টি কোন বিচারে উদ্বুদ্ধ করার মত ক্ষুরধার বিশ্লেষণ।
জাতীয় ও আন্তজার্তিক ভিত্তিতে সাহিত্যে মৌলিক গবেষণা অনুবাদ ও জীবনবাদী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের জন্য আনন্দমেলা, রংধনু স্বর্ণপদক, রূপসী-বাংলা স্বর্ণপদক, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, গান্ধী গবেষণা পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু একাডেমী এবং কবীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।
জুলফিকার নিউটন প্রকাশিত গ্রন্থাবলীর সংখ্যা প্রায় শতাধিক। আমার বিশেষভাবে যেসব গ্রন্থের কথা মনে পড়ছে তার মধ্যে রয়েছে ঃ শ্রেষ্ঠ উপন্যাস (২০০৬), কিশোর সমগ্র- (২০০৮), শিল্পের নন্দনতত্ত্ব- (১৯৮৫), মরমী লালন ফকির- (১৯৯০), সাহিত্যের সৌন্দর্য- (১৯৯৪), বঙ্গবন্ধু গান্ধী লেনিন- (১৯৯৫), বাংলা গদ্যের গন্তব্য- (১৯৯৮), মাতৃভাষা ও মুক্তিযুদ্ধ- (১৯৯৮),মুক্তচিন্তা ও মুক্তসমাজ- (২০০১), বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ-(২০০৫), সংগীত সংস্কৃতি- (২০০৬), বাউল লালন রবীন্দ্রনাথ- (২০০৭), মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব- (২০০৭), কবিতার শিল্পতত্ত্ব- (২০০৮), রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শন- (২০০৯), সুস্থ সমাজের সন্ধানে- (২০১০), সংস্কৃতির সমাজতত্ত্ব- (২০১১), বাংলার বাউল ফকির-(২০১২), নোবেল বিজয়ী সাহিত্য (২০১৩), বিশ্বের বরেন্য সাহিত্য (২০১৩), নজরুল ও নন্দনালোক- (২০১৪), মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু- (২০১৬), নারীবাদ ও নারীমুক্তি- (২০১৬), বিশ্বনন্দিত শেখ হাসিনা (২০১৭), স্বাধীনতা ও সুভাষচন্দ্র- (২০১৭), রাজনীতির হাজার বছর- (২০১৮), মানবচিন্তা ও মানবমুক্তি- (২০১৮), মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা- (২০১৯ রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু- (২০২০), শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষাচিন্তা- (২০২১), জীবনবোধ ও জীবনদর্শন (২০২২) প্রভৃতি।
জুলফিকার নিউটন অনুবাদে বিশ^সাহিত্যের মুক্তমানিক্যখচিত জীবনের জ্যোতি উত্তোলন করে বাংলা সাহিত্যে বপন করেছেন, আমাদের গগন মন্দিরে প্রেমের বাদ্যযন্ত্র ধ্বনিত করেছেন, সংীর্ণ মনোজগতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে নিগূঢ় লীলার চরণ স্পর্শে জ¦ালানি যুগিয়েছেন। সর্বোপরি বাংলা সাহিত্যের তানপুরায় হৃদয়কাড়া রাগিনী সংযোজন করেছেন।
অনুবাদ ঃ রেজারেকশান- (১৯৯৮), বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গল্প- (১৯৯৯), গুস্তাভ ফ্লোবেয়ারের- মাদাম বোভারি- (১৯৯৯), নোবেল বিজয়ীদের শ্রেষ্ঠ গল্প- (১৯৯৯), দান্তের -ডিভাইন কমেডি- (১৯৯৯), হাওয়ার্ড ফাস্টের-  স্পার্টাকাস- (২০০০), এরিখ মারিয়া রেমার্কের- থ্রি কমরেডস- (২০০০)-, হোমারের- ইলিয়াড ও ওডেসি- (২০০০), ভিক্টর হুগোর - লা মিজারেবল- (২০০১), মার্কেজের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস -(২০০২), নোবেল বিজয়ীদের শ্রেষ্ঠ কবিতা- (২০০২), জ্যাক লন্ডনের শ্রেষ্ঠ গল্প- (২০০৪ মিগেল সার্ভেন্টিসের- ডন কুইকজোট- (২০০৫), ফিওদর দস্তয়ভস্কির- কারামাজভ ব্রাদার্স- (২০০৫), লিও টলস্টয়ের শ্রেষ্ঠ গল্প- (২০০৫), গী দ্য মোপাঁসার শ্রেষ্ঠ গল্প-  (২০০৫), আন্তন চেখভের শ্রেষ্ঠ গল্প- (২০০৮), আন্দ্রে জিদের উপন্যাস (২০০৮), নাগিব মাহফুজের উপন্যাস (২০১০), গিওভার্নি বোক্কাচিওর- ডেকামেরণ- (২০১১), বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবিতা- (২০১২) প্রভৃতি।
সাহিত্যের গবেষণার বাইরেও চিত্রশিল্প ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন। তিনি বইয়ের মাঝে বেঁচে থাকেন, বইয়ের মাঝে বসবাস করেন।
আত্মচৈতন্যে কালকে ধারণ ও লালন করে এবং অনলস কর্মপ্রবাহে কালকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছেন কালোত্তীর্ণ। জুলফিকার নিউটনের সম্পূর্ণ অবয়ব অক্ষরে শব্দে বাক্যে কিংবা কোনো নামে, তা সে যত বড় পরিসরেরই হোক না কেন, ধরতে পারা আজ আর সম্ভব নয়। ব্যক্তি মানুষটার উঁচুত্ব তো বটেই, কাজের ক্ষেত্রেও তার ব্যাপ্তি ও গভীরতা বিস্ময়কর। এমন এক কৃষক তিনি, যার আদিগন্ত বিস্তীর্ণ জমিন জুড়ে শুধুই শস্য, কেবলই ফসল; আগাছামুক্ত। অনর্গল সামাজিকতায় এবং অবিচল সামাজিক কর্মপ্রবাহে নিরবচ্ছিন্ন সময় দিয়েও, আবিষ্ট আচ্ছায় নিজেকে নিয়ত নিয়োজিত রেখেও, আবিষ্কারে ও উদ্ভাবনে, গবেষণায় ও মনস্বিতায়, নির্মাণ ও নির্দেশনায়, নতুন চিন্তায় ও অভিনতুন অভিমুখিতায় তিনি অনন্য।

জুলফিকার নিউটন মানুষের ব্যর্থতা, নিষ্ফলতা ভাগ্য বিপর্যয়, বিশ্বাসঘাতকতা, অপর্যাপ্ততা সম্পদের অপচয় এবং মানুষের হীনতা নিয়ে অনবরত অনুসন্ধান করছেন। বহিরঙ্গের বাইরে অন্তঃসৌন্দর্য আবিষ্কারের নিজেকে ক্রমাগতভাবে জড়িত করেছেন। অলৌকিক স্বপ্নের জাল ছিঁড়ে মানুষকে বাস্তবভিত্তিক সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। তিনি আত্ম অবলোপের দায় থেকে আত্মপ্রকাশ করার জন্য মার্কসীয় সাহিত্য তত্ত্ব নিয়ে একটা উচ্চমার্গের কাজ করেছেন। সমাজের সর্বাধিক নিপীড়িত মানুষের ঘাত প্রতিঘাত এবং গণপ্রতিরোধের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। মার্কসবাদ দুনিয়াব্যাপী মহা আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি মতবাদ। যা শোষিত বঞ্চিত লাঞ্ছিত মানুষের আলোকবর্তিকা তা উদ্ভাসিত করতে চেয়েছেন। সীমাহীন দারিদ্র্য, চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা এবং বিপন্ন মানুষের প্রশ্নটি যখন বিবেচনা বহির্ভূত তখন গণসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য শ্রমজীবী মানুষকে তাগিদ দিয়েছেন। যার কিছু নেই সেই সর্বহারা মানুষের যন্ত্রণা এবং বিচ্ছিন্নতাকে অসাধারণ তাৎপর্য দিয়ে মূর্ত করে তুলেছেন।
উৎপাদক শ্রেণীর রাষ্ট্র ব্যবস্থার নীতি নির্ধারণে,  যাদের ন্যূনতম ভূমিকা নেই ফলশ্রুতিতে উৎপাদন বিবর্জিত সুবিধাভোগী গোষ্ঠী লোভ-লালসা ও ব্যভিচারের বন্যায় সমাজকে কুলুষিত করছেন এবং সমাজের এই গভীর অসন্তোষ নিয়ে তিনি প্রামান্য দলিল রচনা করেছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণীর সংগ্রামের ইতিহাস গভীর তাৎপর্য সহকারে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেছেন। পুঁজিবাদী সমাজের চূড়ান্ত দুর্নীতি শোষণ অন্যায়ের ভয়ঙ্কর স্বরূপ উদঘাটন করেছেন। বল প্রয়োগের শক্তিমান দানবেরা যাদেরকে কুৎসিত বর্বর জ্ঞান বিবর্জিত অমানুষ আখ্যা দিয়েছেন জুলফিকার নিউটন তাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছেন। উপনিবেশকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন। বিপ্লব, সর্বহারার একনায়কত্ব, সমাজতন্ত্র , দর্শন,ঐতিহাসিক বস্তুবাদ ও মার্কসীয় চিন্তা ও দর্শনে জুলফিকার নিউটনের পর্যালোচনা বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জুলফিকার নিউটন শিশু-কিশোরদের স্বপ্ন আকাক্সক্ষা কল্পনা অনুপ্রেরণা আনন্দ কীভাবে অদৃশ্য হৃদয়ে গ্রথিত করে দিতে হয়, কী করে রূপকথাকে জীবন্ত করে দিতে হয়, কী করে অসম্ভবকে জয় করতে হয় তা দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন। শিশুদের সর্বক্ষেত্রে কীভাবে জীবনের রূপকার হিসেবে গড়ে তোলা যায়, জীবনের কার্যকর অংশীদার করা যায়, সমাজের চাহিদা পূরণ করা যায়, অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তোরণ করা যায়, কীভাবে দৃষ্টির অধিকারকে সম্প্রসারণ করা যায়, কীভাবে কথা বলার অধিকারকে উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাওয়া যায় তার দুর্দান্ত বার্তা দিয়েছেন কিশোর সমগ্রে। শিশু সাহিত্যে তিনি জীবনের বৈভব ছড়িয়ে দিয়েছেন, অসম্ভব সাধনার পথকে চিত্রিত করে দিয়েছেন, সর্বস্ব ত্যাগে আত্মনিবেদনের বাসনা দিয়েছেন, প্রাণের গৌরবে বিনয় ও স্পর্ধা দেখিয়েছেন। ইলাডিং বিলিডিং কিশোর উপন্যাসটি এক অনবদ্য সৃষ্টি। যে  উপন্যাস ইংরেজি ভাষায় রূপান্তর করেছিলেন অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। শিশু সাহিত্যের অফুরন্ত ভান্ডারের অপূর্ব দৃষ্টান্তে, নানামুখী বৈচিতর্্েয জুলফিকার নিউটন কয়েক জনম আত্মগোপন করে থাকতে পারবেন।
সংগীতের প্রতি অনুরাগ, সুরের বৈচিত্রে ঐক্যের সন্ধান, সংগীতের অসীমতায় অনুসন্ধান, সংগীতের প্রতি অসিদ্ধ সাধনা, সুরের মন্দিরায় অনবরত আরাধনা, সুরের তীরে প্রাণ স্পন্দনের দ্যোতনা ছড়িয়ে নিজেকে  তিনি সংগীতের বড় সমজদার  হিসেবে গড়ে তুলেছেন, সংগীতের অমরতায় সাক্ষ্য বহন করছেন। জুলফিকার নিউটন রবীন্দ্র সাহিত্য দর্শনকে জীবনের সর্বাগ্রে সর্বক্ষেত্রে অবলম্বন করতে চেয়েছেন। যদিও তিনি বারবার বলেছেন কবিগণ মহাপুরুষ নন, দেবতাও নন, অথবা ভগবানও নন। খন্ডিত বোধের অখন্ডিত রূপ নিয়ে, সামগ্রিক রূপকর্মের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশের ব্যাকুলতা নিয়ে যারাই শিল্প সুষমা মন্ডিত জীবনের নিপুন চিত্র এঁকেছেন, যারাই জগতকে জীবন্ত করেছেন, যারা এই মনোজগতকে উদঘাটন করেছেন তিনি তাঁদের নিয়েই কাজ করতে চেয়েছেন। কাব্য ও জীবনের  ঐশ্বর্য একই সাথে তিনি আহরণ করতে চেয়েছেন।
যে শিল্প জীবনের সমগ্রতাকে প্রস্ফুটিত করেছে, জীবনের গভীরতর মৌলিক সত্যকে শ্বাস-প্রশ্বাসের মত জীবন্ত করেছে, জীবনের চিরন্তনতা অবাধে বিচরণ করছে, জীবনের সমগ্র সত্তাকে অধিগ্রহণ করেছে  সেই শিল্পের কাছে জুলফিকার নিউটন চিরকাল নিজেকে নৈবেদ্য দিয়েছেন। পৃথিবীর স্বরূপকে সকলের কাছে উন্মোচন করাকেই তিনি শিল্পকর্মের উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন। শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় স্থাপত্য ভাস্কর্য, চিত্রকলা সংগীতেও তিনি দক্ষতার সাথে দাগ কেটেছেন। বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধী, শেকসপিয়ার গ্যেয়েগেটে থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত কিছু দুর্লভ বইয়ের রচয়িতা তিনি। প্রতিটি বই নিয়ে ব্যাপক আলোচনার অবকাশ রয়েছে কিন্তু যা এই ক্ষুদ্র পরিসরে সম্ভব নয়। তিনি বিশ্বাস করেন ভিতরে যদি প্রেমের অনুশাসন না থাকে, যুক্তি ও প্রেমের অন্তর্গত আত্মশক্তি না থাকে, মহত্বের সার বপন করা না থাকে, সংস্কৃতিক জীবনের উজ্জীবন না থাকে, দৃষ্টিগ্রাহ্য পৃথিবী নিয়ে আত্ম জিজ্ঞাসা না থাকে, জীবনের মাধুর্য লীলায়িত  জীবনের উপর যদি ঝরে না পড়ে, পরিশেষে সত্য অনুসন্ধানে অগ্রাধিকার না থাকে তাহলে সে জীবন কারাগারের সমকক্ষ।
জুলফিকার নিউটন দূরত্বে সুন্দর,  নৈকট্যে সুন্দরতর। কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন না, আড়ালে কথা বলতে অপছন্দ করেন, নিন্দা করা ধাতে নেই, মমতা ও ক্ষমাশীলতায় আর্দ্র হৃদয়, তুচ্ছ ও মহৎ সকলকেই দেন যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদা, সকলের প্রতি আন্তরিক মনোযোগী, অসূয়া-ঈর্ষা-পরশ্রীকাতরতামুক্ত, শালীনতা ও শিষ্টাচারের পরম পরাকাষ্ঠা, বহুবাচনিক ও বহুমাত্রিক। স্বচ্ছ চোখ, তীক্ষè দৃষ্টি, নিবিড় পর্যবেক্ষণ, সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি, সুস্পষ্ট অবস্থান, পরিমার্জিত রুচি, ঈর্ষণীয় স্মৃতিশক্তি, অননুকরণীয় বাগ্মিতা, ভাষার ওপর অপরিমেয় দখল,অতল পা-িত্য, উচ্চ মূল্যবোধ, গভীর হৃদয়াবেগ, সূক্ষ্ম রসবোধ, পরিশীলিত আচার-আচরণ-উচ্চারণ, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন, উপকারী মন, পরিপাটি জীবনযাপন।
জীবনে ও জীবনদর্শনে, কর্মের আয়োজনে ও কৃতীর আয়তনে, সৃজনে ও সম্পাদনে, অর্জনে ও অবদানে পরমোৎকর্ষের অভিসারী। জননীর সত্যানুবর্তিতা এবং জনকের সময়ানুবর্তিতা, তাঁর জীবন গঠনের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। জীবনবোধের মর্মমূলে দুর্মর সক্রিয় রবীন্দ্রনাথ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নান্দনিক অভিজ্ঞান, মঙ্গলচেতনা, মানবমুখিতা ও কল্যাণধর্মিতা।
জীবনের বৃহত্তর পরীক্ষাগারে  অব্যক্ত আকাক্সক্ষা, ভিতরের ঘর ভেঙ্গে ফেলার পাঁয়তারা, বিশ্ব সাহিত্যের অন্তঃপুরে প্রবেশ, গ্রহ নক্ষত্র অন্তরীক্ষে পরিভ্রমণ, বিচ্ছেদের শূন্যতা, জীবনের গুপ্তধন বিতরণ, তৃতীয় নয়নের প্রখরতা, ভাষার নিপুন আলপনা, নৈতিক মূল্যবোধ, ধ্যান ধারণা  দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রকাশভঙ্গিতে যতটুকু সর্বজনীন তা আমাদের বাংলা সাহিত্যকে উর্বর করে বিস্ময়কর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।তিনি আমাদের সমকালীন সাহিত্যের পরিব্রাজক।














সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশের সঙ্গে উগ্র আচরণ করে শাস্তি পেলেন দুই ক্যারিবিয়ান
পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রায় ১৭ ডিসেম্বর
সাত বছরের দণ্ড থেকে খালাস মামুন
১৫ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবার বড় পর্দায় আসছেন মেহজাবীন
লেবানন থেকে ফিরছেন আরো ৬৫ বাংলাদেশি
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
দেবিদ্বারে আ.লীগ নেতার অবৈধ স্থাপনাসহ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ
কুমিল্লা সদরে জামায়াতের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী দ্বীন মোহাম্মদ
ভারতের পেয়াজ-রসুনের দিকে আমরা তাকিয়ে নেই: হাজী ইয়াছিন
কুমিল্লায় আমীরে জামায়াতকে স্বাগত জানিয়ে মহানগরী জামায়াতের মিছিল
এক বিজয় অর্জন করেছো, আরেক বিজয় আসবে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২